কাজে যোগ দিয়েছেন সব পোশাক শ্রমিক
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : নতুন বেতন কাঠামোয় বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা আগামী জানুয়ারি মাসে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক এবং তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর এমন আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার কাজে যোগ দিয়েছেন কর্মবিরতি পালন করা প্রায় সব কারখানার শ্রমিকরা।
সোমবার রাইজিংবিডিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বিজিএমইএ, বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু।
সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, আমরা শ্রমিকদের সাথে কথা বলেছি। প্রায় সকল গার্মেন্টসের শ্রমিকই কাজে যোগদান করেছে। তবে গাজীপুরে সম্ভবত ৮ থেকে ১০টি গার্মেন্টসের শ্রমিকরা কাজে যোগদান করেনি। আমরা শ্রমিক সংগঠনগুলো তাদের সাথে যোগাযোগ করছি, তাদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। আশা করছি, তারাও শিগগিরই কাজে যোগ দেবেন।
নির্বাচনের পরে আলোচনা করে সকল সমস্যা, ভুল বোঝাবোঝির সমাধান হয়ে যাবে বলেও যোগ করেন তিনি।
এদিকে, বিজিএমইএর পক্ষ থেকে জানানো হয়, পোশাক খাতের সক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও ২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৮ বছরে শ্রমিকদের মজুরি ৩৮১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৩ সাল থেকে প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে মজুরি বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ২০১৮ সালের নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণার পর ৫২টি শ্রমিক সংগঠন একত্রিত হয়ে এই মজুরি কাঠামো স্বাগত জানিয়েছিলো। যদিও সে সময় উদ্যোক্তা ভাই-বোনদের অনেকেই বলেছেন যে, নতুন মজুরি বাস্তবায়ন করা হলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। তারপরও প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছাকে স্বাগত জানিয়ে আমরা ঘোষিত মজুরি মেনে নিয়েছি। যত কষ্টই হোক, এই মজুরি বাস্তবায়ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
নতুর মজুরি কাঠামোতে বৈষম্য রয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে শ্রমিকদের আন্দোলনে নেওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ২০১৮ সালের মজুরি গেজেট ২০১৩ সালের মজুরি গেজেটের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই করা হয়েছে। গেজেট অনুসারে কোনো শ্রমিকের মজুরি কমবে না। প্রত্যেকেরই পদ-পদবী ও গ্রেড অনুসারে মজুরি বৃদ্ধি পাবে। শ্রমিকদের পূর্বের ভাতা ১১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৮৫০ টাকা করা হয়েছে। যেসব শ্রমিকের মূল মজুরি (বেসিক) ন্যূনতম মজুরি গেজেটের চেয়েও বেশি, তাদেরও মজুরি কমবে না। বরং তাদেরও বাড়িভাড়া ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। ঘোষিত মজুরি বাস্তবায়ন হবে ডিসেম্বর মাসের বেতনের সাথে এবং পরিশোধ করা হবে আগামী জানুয়ারির ৭ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে। অথচ বিভিন্ন মহল থেকে শ্রমিকদের মধ্যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। শ্রমিকদের বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এর পরেও যদি শ্রমিকদের কোনো দাবি থাকে, জানুয়ারি মাসে আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধান করা হবে।
এদিকে, গত শনিবার সচিবালয়ে পোশাক শিল্প নিয়ে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কোর কমিটির এক জরুরি সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, নতুন মজুরি কাঠামোর গেজেট প্রকাশিত হওয়ার পর এর দুই-একটি ধাপ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। জানুয়ারি মাসে নতুন কাঠামোতে মজুরি পেলে শ্রমিকদের ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। কোনো গ্রেডেই মূল বেতন কমবে না।
কারখানা পর্যায়ে নতুন মজুরি কাঠামো নিয়ে শ্রমিকদের স্পষ্ট ধারণা দিতে মালিকদের পরামর্শ দেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ ডিসেম্বর ২০১৮/নাসির/রফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন