ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

২৩ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ২৩ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
২৩ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ ২৩ কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করার পর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠি পাঠায় সংস্থাটি। যা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে। দুদকের একটি সূত্র রাইজিংবিডি এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

২৩ কর্মকর্তারা হলেন-স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (স্বাস্থ্য) এর কার্যালয়ের সহকারী প্রধান মীর রায়হান আলী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফারুক হাসান, প্রধান সহকারী আশরাফুল ইসলাম, প্রধান সহকারী সাজেদুল করিম, উচ্চমান সহকারী তৈয়বুর রহমান, উচ্চমান সহকারী সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কার্যালয়ের প্রধান সহকারী ফয়জুর রহমান, প্রধান সহকারী মাহফুজুল হক, কম্পিউটার অপারেটর আজমল খান, ময়মনসিংহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, প্রধান সহকারী-কাম হিসাবরক্ষক আব্দুল কুদ্দুস, সিলেটের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কার্যালয়ের প্রধান সহকারী নুরুল হক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোস আহমেদ, উচ্চমান সহকারী আমান আহমেদ, অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার অপারেটর নেছার আহমেদ চৌধুরী, খুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কার্যালয়ের ব্যক্তিগত সহকারী ফরিদ হোসেন, অফিস সহকারী মো. মাসুম, প্রধান সহকারী আনোয়ার হোসেন, বরিশাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কার্যালয়ের প্রধান সহকারী মো. রাহাত খান, উচ্চমান সহকারী জুয়েল, রংপুর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী আজিজুর রহমান, স্টেনোগ্রাফার সাইফুল ইসলাম এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম।

চিঠিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অধিনস্ত বিভিন্ন কার্যালয়ে কতিপয় দুর্নীতিবাজ সেচ্চাচারী ও ক্ষমতা অপব্যবহারকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে একই কর্মস্থলে চাকরি করার সুবাদে দুর্নীতির শক্তিশালী বলয় তৈরি হয়েছে। যা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুশাসনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে জানা গেছে। দুদকে তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অনেক অভিযোগ জমা হয়েছে, যা আমাদের গোয়েন্দা ইউনিটের অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে। এ অবস্থায় এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে দুর্নীতি প্রতিরোধককল্পে বর্তমান কমর্মস্থল থেকে জরুরি ভিত্তিতে অন্যত্র বদলির ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছে।

এর আগে গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অন্তত এক ডজন বাড়ি ও ফ্ল‌্যাটসহ অঢেল সম্পদের মালিক বনে যাওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেডিক্যাল এডুকেশন শাখার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. আবজাল হোসেন এবং তার স্ত্রী একই অধিদপ্তরের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন শাখার স্টেনোগ্রাফার রুবিনা খানমকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেয় দুদক। গত ১০ জানুয়ারি আবজাল হোসেনকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

গত ২২ জানুয়ারি হিসাবরক্ষক আবজাল হোসেনের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে তার দুই ভাই ও তিন শ্যালককে জিজ্ঞাসাবাদের কথা থাকলেও তারা দুদকে হাজির হয়নি।

এর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমানকে ১৪ জানুয়ারি দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্র জানা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সিন্ডিকেট করে সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালের প্রথম দিকে অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুদক। দুদকের উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল অনুসন্ধান করছে।

অন্যদিকে গত ২১ জানুয়ারি একযোগে দেশের ৮ জেলার সরকারি ১১ হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে একযোগ অভিযানে চালায় দুদকের অ্যানফোর্সমেন্ট টিম। অভিযানে মোট চিকিৎসকের প্রায় ৪০ শতাংশ ডাক্তারকে কর্মস্থলে উপস্থিত পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে ঢাকার বাইরে ৭টি হাসপাতালে অনুপস্থিত চিকিৎসকের হার প্রায় ৬১.৮ শতাংশ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ জানুয়ারি ২০১৯/এম এ রহমান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়