ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

বিশ্বকাপে যত ‘সেঞ্চুরি’র রেকর্ড

আমিনুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩২, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিশ্বকাপে যত ‘সেঞ্চুরি’র রেকর্ড

আমিনুল ইসলাম : দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছে আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ। দিনের হিসেবে মাত্র ১০০ দিন। তারপরই পর্দা উঠবে বহুল প্রার্থিত বিশ্বকাপের। যেখানে বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বের তারকা ক্রিকেটাররা বল ও ব্যাট হাতে লড়াই করবেন। দিনশেষে একটি দল ট্রফি নিয়ে বুনো উল্লাস করবে।বীরের বেশে ট্রফি নিয়ে ঘরে ফিরবে। তার আগে চলুন চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক বিশ্বকাপের প্রথম আসর থেকে একাদশ আসর পর্যন্ত ‘সেঞ্চুরি’র যত রেকর্ড হয়েছে সেগুলোতে।

১৬৫ সেঞ্চুরি.... :
১৯৭৫ সালে মাঠে গড়িয়েছিল প্রথম বিশ্বকাপ। সেই থেকে ২০১৫ বিশ্বকাপ পর্যন্ত মোট সেঞ্চুরি হয়েছে ১৬৫টি। ১০৩ জন ক্রিকেটার এই সেঞ্চুরিগুলো করেছেন। তারা নাম লিখিয়েছেন বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করার মর্যাদাকর তালিকায়। ২০১৯ বিশ্বকাপ শেষে এই সংখ্যাটা কোথায় গিয়ে ঠেকে দেখার বিষয়।



সেঞ্চুরির রাজা :
বিশ্বকাপে সেঞ্চুরির রাজা কে সেটা হয়তো নতুন করে বলতে হবে না। তিনি হলেন লিটল মাস্টার শচীন টেন্ডুলকার। অন্য যেকোনো খেলোয়াড়ের চেয়ে তিনি বিশ্বকাপে বেশি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন এবং সেই সংখ্যাটা-৬। তার পরে আছেন অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং ও শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারা। তারা দুজনেই পাঁচটি করে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন বিশ্বকাপের মঞ্চে। চারটি করে সেঞ্চুরি হাঁকানোর তালিকায় আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স, শ্রীলঙ্কার তিলকারত্নে দিলশান, ভারতের সৌরভ গাঙ্গুলি, শ্রীলঙ্কার মাহেলা জয়াবর্ধনে ও অস্ট্রেলিয়ার মার্ক ওয়াহ।

সেঞ্চুরি উৎসবের বিশ্বকাপ ২০১৫ :
বিশ্বকাপের আগের যেকোনো আসরের চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি হয়েছিল ২০১৫ সালে। শ্রীলঙ্কার এক কুমার সাঙ্গাকারাই হাঁকিয়েছিলেন টানা চারটি সেঞ্চুরি। মোট ৩৮টি সেঞ্চুরি হয়েছিল ২০১৫ বিশ্বকাপে। যা ২০১১ বিশ্বকাপে হওয়া সেঞ্চুরির চেয়ে ১৪টি বেশি! ১৯৭৫ সালে প্রথম বিশ্বকাপে ৬টি সেঞ্চুরি হয়েছিল। ১৯৭৯ সালে হয়েছিল মাত্র ২টি। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে হওয়া সেঞ্চুরির সংখ্যা ছিল ৮টি। ১৯৮৭ সালে হয়েছিল ১১টি সেঞ্চুরি। ১৯৯২ বিশ্বকাপ দেখেছিল ৮টি সেঞ্চুরি। আর ১৯৯৬ বিশ্বকাপে হয়েছিল ১৬টি সেঞ্চুরি। ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলসে হওয়া বিশ্বকাপে সেঞ্চুরির সংখ্যা ছিল ১১টি। ২০০৩ ও ২০০৭ বিশ্বকাপে সেঞ্চুরির সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ২১ ও ২০টি। ২০১১ বিশ্বকাপে হয়েছিল ২৪টি।



বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরিয়ান :
বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হলে ইংল্যান্ডের ডেনিস অ্যামিস ও নিউজিল্যান্ডের গ্লেন টার্নার। ১৯৭৫ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে তারা দুজনেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ইতিহাসের পাতায় নিজেদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখেন। ভারতের বিপক্ষে লর্ডসে অ্যামিস করেছিলেন ১৩৭ রান। আর এজবাস্টনে পূর্ব আফ্রিকার বিপক্ষে টার্নার করেছিলেন ১৭১* রান।

বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরি :
বিশ্বকাপে সর্বকালের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটি দখলে রেখেছেন আয়ারল্যান্ডের কেভিন ও’ব্রায়েন। ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি মাত্র ৫০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন। ১১৩ রানের ইনিংসে তিনি ১৩টি চার ও ৬টি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন।



সবচেয়ে কম বয়সী সেঞ্চুরিয়ান :
মাত্র ২০ বছর ১৯৬ দিন বয়সে আয়ারল্যান্ডের পল স্টার্লিং ২০১১ বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে রেকর্ড গড়েন। তিনিই একমাত্র ক্রিকেটার যিনি ২১ বছরের আগে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। দেখার বিষয় ২০১৯ বিশ্বকাপে তার সেই রেকর্ড তরুণ ক্রিকেটারদের কেউ ভাঙতে পারেন কিনা।

সবচেয়ে বেশি বয়সী সেঞ্চুরিয়ান :
অবশ্য সবচেয়ে বেশি বয়সে সেঞ্চুরি করার রেকর্ডটি দখলে রেখেছেন শ্রীলঙ্কার তিলকারত্নে দিলশান। ২০১৫ বিশ্বকাপে তিনি বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৮ বছর ১৩৫দিন বয়সে সেঞ্চুরি করে রেকর্ড গড়েন। অবশ্য ১৩দিন পর স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৪ রানের ইনিংস খেলে নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙেন তিনি। তখন তার বয়স ছিল ৩৮ বছর ১৪৮ দিন।



দলগতভাবে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি :
বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের মতো দলগতভাবে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করার রেকর্ড অস্ট্রেলিয়ার দখলে। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়দের করা সেঞ্চুরির সংখ্যা ২৬টি। তাদের পরে রয়েছে ভারত (২৫টি), শ্রীলঙ্কা (২৩টি), ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১৭টি), নিউজিল্যান্ড (১৫টি), দক্ষিণ আফ্রিকা (১৪টি), পাকিস্তান (১৪টি) ও ইংল্যান্ড (১১টি)।

বিশ্বকাপের ফাইনালে সর্বোচ্চ ১৪৯ রান করার রেকর্ডটি অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম গিলক্রিস্টের দখলে রয়েছে।

ফাইনালে সেঞ্চুরির রেকর্ড :
বিশ্বকাপের ফাইনালে সেঞ্চুরি করার মতো দারুণ ব্যাপার আর কিছু হতে পারে না। অবশ্য এমন কীর্তি খুব বেশি ক্রিকেটার গড়তে পারেননি। বিশ্বকাপের আগের ১১ আসরে মাত্র ছয়জন ক্রিকেটার ফাইনালের মঞ্চে সেঞ্চুরি হাঁকানোর কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। ১৯৭৫ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্লাইভ লয়োড ৮৫ বলে ১০২ রান করেন। ১৯৭৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে সেঞ্চুরি হাঁকান ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্যার ভিভ রিচার্ডস (১৩৮*)। ১৯৯৬ বিশ্বকাপে এই তালিকায় নাম লেখান শ্রীলঙ্কার অরবিন্দ ডি সিলভা (১০৭)। তিনি অবশ্য তার দেশকে প্রথম শিরোপারও উপহার দিয়েছিলেন সেবার। অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং ২০০৩ বিশ্বকাপে করেন ১৪০* রান। পরের বিশ্বকাপের ফাইনালে গিলক্রিস্ট করেন ১৪৯ রান। আর ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার মাহেলা জয়াবর্ধনে ষষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে ফাইনালে ৮৮ বলে করেন ১০৩* রান।



সেঞ্চুরির শহর :
বিশ্বকাপের ভেন্যু হিসেবে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি হয়েছে মেলবোর্নে। সেখানে হওয়া সেঞ্চুরির সংখ্যা ৭। ৬ সেঞ্চুরি নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে করাচি। লর্ডস এবং ওভালে ৫টি করে সেঞ্চুরি হয়েছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়