ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

১৯৯৯-২০১৯ বিশ্বকাপ, কতোটুকু পাল্টেছে ক্রিকেট?

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:১২, ২৩ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
১৯৯৯-২০১৯ বিশ্বকাপ, কতোটুকু পাল্টেছে ক্রিকেট?

আর কিছুদিন পরেই শুরু হতে যাচ্ছে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ।  বিশ্বকাপের ১২তম আসর এবার বসবে ক্রিকেটের আতুরঘর ইংল্যান্ডে।  দীর্ঘ বিশ বছর ও চারটি আসর বিরতি দিয়ে ইংল্যান্ডে আবারো ফিরছে ওয়ানডে বিশ্বকাপ।

১৯৯৯ থেকে ২০১৯ বিশ্বকাপের মাঝের সময়টাতে কতটুকু বদলেছে ক্রিকেট? কতবার পাল্টেছে ক্রিকেটের নিয়ম-কানুন! দুই দশকে ক্রিকেটের বিভিন্ন পরিবর্তনের খবর জানাচ্ছে শেখ আল মুনিম শুভ। আজ পড়ুন দ্বিতীয় পর্ব।

পড়ুন প্রথম পর্ব : ( )

* বোলাররা প্রানবন্ত থাকতে পছন্দ করেন।  তারা সবসময় ব্যাটসম্যানের ক্রমবর্ধমান আধিপত্য রুখে দিতে কাজ করেন। আগে স্পিনাররা বোলিং করার সুযোগ পেত ম্যাচের অনেক সময় পাড়ি দেয়ার পর, কিন্তু এখন ধারা অনেকখানি বদলে গেছে।

২০০৩ বিশ্বকাপ থেকে ২০০৭ বিশ্বকাপ পর্যন্ত স্পিনাররা প্রথম দশ ওভারের মধ্যে বোলিং করার সুযোগ পেত ১.৬টি, যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪টি। ২০০৩-০৬ সাল পর্যন্ত প্রতি ম্যাচে স্পিনাররা নতুন বলে বল করতে পারতো মাত্র ২টি, ২০০৭-১০ এ তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬টিতে। ২০১১-১৪ তা হয় ১১টি যা ২০১৫-১৮ তে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪টিতে। অর্থাৎ সময় যত গড়িয়েছে তত বেশি নতুন বলে বোলিং করার সুযোগ পাচ্ছেন স্পিনাররা।

শুধু শুধু স্পিনাররা প্রভাবশালী হয়ে উঠেননি, তাদের প্রদত্ত ক্ষমতা বাধ্য করেছে তাদের রহস্যময় ভূমিকা পালন করতে । ১৯৯৯ বিশ্বকাপের বছরে সেরা দশজন বোলারের মধ্যে সাতজনই ছিল পেসার । বাকি তিনজনের মধ্যে অফস্পিনার ছিল সাকলাইন ও মুরালি, লেগস্পিনার ছিলেন একমাত্র ওয়ার্ন।  অবশ্য ওই সময়ে এ স্পিন ‘ত্রয়ী’র দাপটই ছিল সবথেকে বেশি। ২০০৩ বিশ্বকাপের বছর সাত পেসারের সাথে ছিলেন মুরালি ও ওয়ার্ন।  দুই কিংবদন্তির সাথে ছিলেন অফস্পিনার হরভজন সিং।

২০০৭ সালের সেরা দশ বোলারের মধ্যে মুরালির সঙ্গে জায়গা পান ভেট্টোরি, বাকি আটজন ছিল পেসার।  ২০১১ বিশ্বকাপের বছর পেস ও স্পিন বিভাগের বোলারদের মধ্যে জায়গা ভাগাভাগি হয়।  ভেট্টোরি, আব্দুর রাজ্জাক, সাকিব আল হাসান, রেমন্ড প্রাইস ও গ্রায়েম সোয়ান পেসারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়াই করেন।  চার বছর পর ২০১৫ তে সুনীল নারিন, আজমলের সঙ্গে ছিলেনি সাকিব, জাদেজা ও হাফিজ।  ২০১৯ সালের সেরা দশ বোলারের পাঁচজন পেসার।  বাকি পাঁচজন হচ্ছে রশিদ খান, কুলদ্বীপ, আদিল রশিদ, চাহাল ও মুজিব-উর-রহমান। স্পিনারদের দাপটের একটি বিষয় লক্ষণীয়, এবারই প্রথম কোন অফস্পিনার সেরা দশের মধ্যে সুযোগ পাননি!



* যখন প্রসঙ্গ আসে পেসারের তখন বাঁহাতি বোলারের একটু বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। গত পাঁচবারের বিশ্বকাপের মধ্যে চারবারই সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিল বাঁহাতি পেসার।  গত সাতবারের চ্যাম্পিয়ন দলের পাঁচবারই বাঁহাতি পেসার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে।  ১৯৯২ সালে ওয়াসিম আকরাম, ১৯৯৬ সালে চামিন্দা ভাস, ২০০৭ সালে ন্যাথান ব্র্যাকেন, ২০১১ সালে জহির খান ও অশিস নেহরা এবং ২০১৫ সালে মিচেল স্টার্ক।  ২০১৯ বিশ্বকাপের প্রায় সবগুলো বড় দলেই একজন করে বাঁহাতি পেসার রয়েছে, শুধুমাত্র ভারত ছাড়া । তারা অনেক চেষ্টা করেছে কিন্তু কাউকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে পারেনি ইংল্যান্ডে নিয়ে যাওয়ার মত।

১৯৯৯ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ ২০ উইকেট শিকারি ছিল নিউজিল্যান্ডের জিওফ অ্যালট, ২০০৩ এ চামিন্দা ভাসের ২৩ উইকেট, ২০১১ এ জহির খানের ২১ উইকেট এবং ২০১৫ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক ও নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্টের যৌথভাবে ২২ উইকেট ছিল টূর্নামেন্টের সর্বোচ্চ।

ডেথ ওভারে স্পিনারদের খুব কম সময়ে ব্যবহার করা হত। একটা সময় ছিল ব্যাটসম্যানরা খুব বেশি ইয়র্কার ডেলিভারির সম্মুখীন হতে হত যা এখন অনেকটাই বদলে গেছে।  এ ব্যাপারে ল্যান্স ক্লুজনার বলেন,‘আগেরকার দিনে বোলাররা ইনিংসের শেষ পর্যায়ে বারবার ইয়র্কার ডেলিভারি করত।  খুব কম বোলাররা চেষ্টা করত একটু আলাদা কিছু একটা করতে।  কেউ স্লোয়ার আবার কেউ বাউন্সার দিত কিন্তু ইয়র্কার থেকে সরতে পারতো না।  এটা অনেকটা এমন হয়ে গিয়েছিল যে তুমি যদি ইয়র্কার ডেলিভারি দিতে সামর্থ্য না হও তাহলে তোমাকে শাস্তি পেতে হবে।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ মে ২০১৯/ইয়াসিন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়