ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

ঈদে ভিজিএফ বরাদ্দের চাল পায়নি রামগতি উপকূলের দুস্থরা

ফরহাদ হোসেন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ১২ জুন ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঈদে ভিজিএফ বরাদ্দের চাল পায়নি রামগতি উপকূলের দুস্থরা

লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা: ঈদের আগে রামগতি উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার দুস্থদের জন্য ভিজিএফ’র চাল বরাদ্দ এলেও বিলি হয়েছে মাত্র একটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায়।

সাত ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় থেকে চালই নেননি, দুস্থদের মাঝে বিলিও করেননি। এর ফলে ওই সাত ইউনিয়নের দুস্থরা ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

নাম না প্রকাশের শর্তে এসব ইউপি চেয়ারম্যানদের অনেকেই এর জন্য উপজেলা চেয়ারম্যানকে অভিযুক্ত করছেন। তাদের অভিযোগ, ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের কাছে শতকরা ২৫টি ভিজিএফ কার্ডের চাল দাবি করায় তারা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় থেকে চাল নেননি।

জানা যায়, ঈদে খাবারের অভাব মিটাতে সরকার রামগতি উপজেলার আট ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার দুস্থদের জন্য ২০২.৪৫৫ মেট্রিক টন ভিজিএফ’র চাল বরাদ্দ দেয়। বিলি হলে ওইসব ইউনিয়নের ১৩ হাজার ৪৯৭ জন কার্ডধারী দুস্থ ১৫ কেজি করে চাল পেতেন।

কিন্তু ঈদের পূর্বে মাত্র চরবাদাম ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৪ হাজার ৪৬৪টি দুস্থ পরিবারের মাঝে ৬৬.৯৫ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। বাকী সাত ইউনিয়নের দুস্থরাই বঞ্চিত হয়েছে তাদের পাওনা থেকে।

মেঘনার ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে উপকূলীয় এ উপজেলার মানুষগুলো কৃষি কাজ ও নদীতে মাছ ধরেই তাদের সংসার চালায়। গত মার্চ-এপ্রিল নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নামলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়েনি জেলেদের জালে। ঘূর্ণিঝড় ফণির আঘাতে এ জনপদের তিন শতাধিক কাঁচা ও টিনশেড ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই এবার ধারদেনা করে কোনরকম তাদের ঈদ কাটাতে হয়েছে।

ঈদের আগে ভিজিএফ’র চালগুলো পেলে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদটি খুশিতে কাটাতে পারতেন। অথচ পার্শ্ববর্তী উপজেলার দুস্থরাও ভিজিএফে’র চাল পেয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তাদের কাছে শতকরা ২৫টি করে কার্ডের চাল দাবি করেছেন। বিগত দিনে কোনো উপজেলা চেয়ারম্যান এরকম দাবি করেননি। ঈদে দুস্থদের কষ্ট লাঘবের জন্য সরকার চাল দিলেও চেয়ারম্যানের অযৌক্তিক দাবির কারণে তা বিতরণ সম্ভব হয়নি।

রামগতি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমান উল্লাহ বলেন, ‘ভিজিএফের চালগুলো ঈদের আগেই বিতরণের কথা ছিল। কিন্তু গুদামে চাল না থাকার কারণে বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। তবে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই বাকি ইউনিয়নগুলোতে চাল বিতরণ করা হবে।’

এদিকে রামগতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সোহেল বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। ঈদের আগে মৎস্য বিভাগের তালিকা অনুযায়ী জেলেদের চাল দিতে হয়েছে। এ কারণে দুস্থদের চাল বিতরণ করতে পারিনি। সঠিকভাবে দুস্থদের নামের তালিকা করতে বলা হয়েছে। খুব শিগগিরই চাল বিতরণ করা হবে।’



রাইজিংবিডি/ লক্ষ্মীপুর/১২ জুন ২০১৯/ফরহাদ হোসেন/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়