ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

পর্যটনের নতুন দিগন্ত ‘জালিয়ার দ্বীপ’

সুজাউদ্দিন রুবেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:৫২, ১৩ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পর্যটনের নতুন দিগন্ত ‘জালিয়ার দ্বীপ’

প্রাকৃতিক অপার সৌন্দর্য্যের ‘জালিয়ার দ্বীপ’

সুজাউদ্দিন রুবেল, কক্সবাজার : জালিয়ার দ্বীপ। নাফ নদীর বুকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের অপার সম্ভার নিয়ে জেগে আছে বাংলাদেশের এক টুকরো ভূখন্ড। অনন্য সুন্দর এই দ্বীপটি ঘিরে সম্প্রতি উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার।

জালিয়ার দ্বীপের ২৭১.৯৩ একর জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে ‘নাফ ট্যুরিজম পার্ক’। পর্যটনের আধুনিক সব রকমের সুযোগ-সুবিধাই যুক্ত হবে এখানে। একপাশে মিয়ানমার, অন্যপাশে বাংলাদেশের বিশাল নেটং পাহাড়ের আকর্ষণে ছোট্ট এই ভূ-খন্ড মুখর করে রাখবে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। এর ফলে টেকনাফ ও আশেপাশের এলাকায় অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বাড়বে। ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশ-মিয়ানমার বাণিজ্যেও।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অদূর ভবিষ্যতে পুরো দেশের পর্যটন খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করতে চলেছে এই জালিয়ার দ্বীপ।

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নেটং পাহাড়ের কাছে নাফ নদীর মাঝখানে অবস্থিত দ্বীপটিতে এখনো পর্যন্ত কোন জনবসতি গড়ে উঠেনি। টেকনাফের কিছু বাসিন্দা সেখানে অবৈধভাবে চিংড়ি ও লবণ চাষ করে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। আপাতত ছোট ডিঙি নৌকা নিয়েই ওই দ্বীপে মানুষের যাতায়াত।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জালিয়ার দ্বীপে যাতায়াতের জন্য কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়ক সংলগ্ন স্থলবন্দরের পাশ দিয়ে একটি আকর্ষনীয় ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ করা হবে। নদীর উপর ও খোলা আকাশের নিচে ঝুলে থাকা সেতুটি হেঁটে পার হয়ে পর্যটকরা প্রকৃতির নয়াভিরাম দৃশ্য উপভোগ করতে করতে পৌঁছে যাবেন জালিয়ার দ্বীপে।

এ ছাড়াও দ্বীপটিতে গড়ে তোলা হবে রিসোর্ট, ক্যাবল কার, ওশনেরিয়াম, ভাসমান রেস্টুরেন্ট, কনভেনশন সেন্টার, সুইমিং পুল, ফান লেক, অ্যাকুয়া পার্ক, ফিশিং জেটি, এমিউজমেন্ট পার্ক, শিশু পার্ক, ওয়াটার স্পোর্টস, ক্রুজ-লাইন প্রভৃতি। ইতোমধ্যে এই দ্বীপের উন্নয়নযজ্ঞ বাস্তবায়নের জন্য ডেভলপার নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। ডেভলপার নিয়োগের জন্য রিকোয়েস্ট ফর প্রজেক্ট প্রোপজাল (আরএফপি) দাখিলের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২ মার্চ পর্যন্ত।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো: আলী হোসেন বলেন, ‘নাফ ট্যুরিজম পার্ক’ স্থাপনের জন্য টেকনাফ ও দক্ষিণ হ্নীলা মৌজার নেটং পাহাড়ের নিকটবর্তী টেকনাফ স্থলবন্দর সংলগ্ন নাফ নদীর মধ্যখানে জালিয়ার দ্বীপের ২৭১.৯৩ একর জমি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখানে যাতায়তের পথ ব্যবহারের জন্য বন বিভাগের ২১.১২ একর জমিও অনুমোদন পাওয়া গেছে। জার্মানভিত্তিক একটি কোম্পানির সহায়তায় এ প্রকল্পে পর্যটকদের বিনোদনের জন্য ক্যাবল কারসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলা হবে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, পরিবেশ ও বন সচিব কামাল উদ্দিন আহমদসহ ১১ জন সচিবকে জালিয়ার দ্বীপে নিয়ে যান। নদী বেষ্টিত দ্বীপের সৌন্দর্য্য দেখে মুগ্ধ হন সকলে। এরপর বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দ্বীপটিকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

 

 

 

রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/১৩জানুয়ারি ২০১৭/সুজাউদ্দিন রুবেল/শাহ মতিন টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়