ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

বিচ্ছিন্ন করার নীতি থেকে সরে আসলেন ট্রাম্প

সাইফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২১ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিচ্ছিন্ন করার নীতি থেকে সরে আসলেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী পরিবারগুলোকে বিচ্ছিন্ন করার নীতি থেকে সরে আসলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

প্রবল জনমতের চাপে নতি স্বীকার করে সিদ্ধান্ত পাল্টে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। এতে অবৈধ অভিবাসনের অভিযোগে আটক পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

বিবিসি জানিয়েছে, বৈধ কাগজপত্র ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা বাবা-মায়ের কাছ থেকে সন্তানদের আলাদা রাখার নীতি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। মার্কিন কংগ্রেস থেকেও এ নিয়ে চাপে ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প তার আগের অবস্থান থেকে সরে এসে ওই নির্বাহী আদেশে সই করেছেন।  

ট্রাম্পের নতুন এই আদেশের ফলে অবৈধ অভিবাসী শিশুদের আলাদা না করে তাদের পরিবারের সঙ্গেই রাখা হবে। আর শিশুদের ২০ দিনের বেশি আটক না রাখার আদেশ সংশোধন করতে আদালতের কাছে আবেদন করা হবে।

হোয়াইট হাউজে বুধবার ওই নির্বাহী আদেশে সই করার পর ট্রাম্প বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া বাবা-মায়ের কাছ থেকে সন্তানদের আলাদা করার দৃশ্য আর দেখতে চান না তিনি। ট্রাম্প বলেন, তার স্ত্রী মেলানিয়া এবং মেয়ে ইভাঙ্কাও অভিবাসী পরিবারগুলোকে বিচ্ছিন্ন করার নীতি পরিবর্তনের পক্ষে ছিলেন।

‘আমার মনে হয়, হৃদয়বান যে কেউ বিষয়টা অনুধাবন করতে পারবে। পরিবারগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে, এটা আমরা আর দেখতে চাই না’- বলেন ট্রাম্প।

তবে ইতোমধ্যে যেসব পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদাভাবে রাখা হয়েছে, তাদের বিষয়ে আদেশে কিছু বলা হয়নি। 

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্মকর্তাদের হিসেবে, গত ৫ মে থেকে ৯ জুনের মধ্যে মোট ২ হাজার ২০৬ জন কারাবন্দি বাবা-মায়ের কাছ থেকে ২ হাজার ৩৪২ শিশুকে আলাদা করে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।


তবে চাপের মুখে অভিবাসন নীতিতে পরিবর্তন আনলেও ট্রাম্প বলেছেন তার সরকার অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রাখবে।

নতুন নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে- যতদিন মামলা চলবে, ততদিন অভিবাসী পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গেই বন্দি রাখা হবে। পরিবারগুলোর মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে। অবৈধ অভিবাসনের অভিযোগে আটক শিশুদের ২০ দিনের বেশি আটক না রাখার বিষয়ে আদালতের যে নির্দেশনা রয়েছে, তা সংশোধনের জন্য অনুরোধ জানানো হবে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এর আগে বলেছিলেন, নির্বাহী আদেশ দিয়ে তিনি ওই নীতিতে পরিবর্তন আনতে পারবেন না। তিনি ইংগিত দিয়েছিলেন, এর জন্য কংগ্রেসের সম্মতি প্রয়োজন হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে রিপাবলিকান পার্টির নেতা পল রায়ান বলেছেন, অভিবাসী পরিবারগুলোর সদস্যদের একসঙ্গে রাখার আইন করার বিষয়ে বৃহস্পতিবার প্রতিনিধি পরিষদে ভোটাভুটি হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্মকর্তাদের হিসেবে, গত ৫ মে থেকে ৯ জুনের মধ্যে মোট ২ হাজার ২০৬ জন কারাবন্দি বাবা-মায়ের কাছ থেকে ২ হাজার ৩৪২ শিশুকে আলাদা করে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে আগে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে কেউ আটক হলে প্রথমবার তাদের আদালতের মুখোমুখি করে ছেড়ে দেওয়া হত। কিন্তু গত এপ্রিলে নতুন ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি প্রকাশ করা হয়, যেখানে সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রেবেশকারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা এবং কারাগারে পাঠানোর কথা বলা হয়।

তবে শিশুদের যেহেতু কারাগারে রাখার নিয়ম নেই, তাদের আলাদাভাবে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার কথা বলা হয়। কিন্তু আশ্রয়কেন্দ্রে শিশুদের ঘুমিয়ে থাকার ছবি এবং তাদের কান্নার অডিও প্রকাশ হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ জুন ২০১৮/সাইফ/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়