ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সব আকর্ষণ বাংলাদেশকে ঘিরে

উদয় হাকিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:০০, ২৪ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সব আকর্ষণ বাংলাদেশকে ঘিরে

আয়ারল্যান্ডে খেলছে বাংলাদেশ। নিজ দেশকে সমর্থন জানাতে মাঠে ছুটে এসেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা

উদয় হাকিম : আয়ারল্যান্ডে বসেছে জমজমাট ক্রিকেট আসর। ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষ হচ্ছে আজ বুধবার। শেষ ম্যাচে মাঠে নামছে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। সিরিজের আরেক দল স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড। কিন্তু খেলা তিন দেশের হলেও সিরিজের পুরো আকর্ষণ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ।

সিরিজের ম্যাচগুলো একমাত্র বাংলাদেশেরই তিনটি চ্যানেল সরাসরি সম্প্রচার করছে। বিটিভি, গাজী টিভি এবং মাছরাঙা। আর কোনো দেশেই একটির বেশি চ্যানেলে খেলা দেখানো হচ্ছে না। ইন্টারনেটে খেলা দেখাচ্ছে বাংলাদেশের অনলাইন টিভি- একতা। ম্যাচগুলো সরাসরি সম্প্রচারের রাইটস ও বাংলাদেশি একটি প্রতিষ্ঠানের। মাঠের ইনস্টেডিয়া রাইটস বাংলাদেশের- টোটল স্পোর্টস মার্কেটিং এর।

এবার আসি দৃশ্যমান আরো কিছু বিষয়ে। ইউরোপের মাটিতে খেলা হলেও সিরিজের টাইটেল স্পন্সর বাংলাদেশের ওয়ালটন। কো স্পন্সর এবং এ্যাসোসিয়েট স্পন্সরও বাংলাদেশি ব্র্যান্ডগুলোর দখলে। আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের পার্টনার ছাড়া মাঠে আর কারো পেরিমিটার বোর্ড নেই।

দৃষ্টি দেয়া যাক মাঠের বাইরে। যত দর্শক মাঠে উপস্থিত থাকেন তার প্রায় ৯০ শতাংশই বাংলাদেশি। জাতীয় দলের জার্সি এবং জাতীয় পতাকা নিয়ে যত রঙ-ঢঙ-উৎসব সব বাংলাদেশের দর্শকরাই করছেন। চার ছক্কা কিম্বা প্রতিপক্ষের আউটের সময় বাংলাদেশিরাই বেশি চিয়ার্স করছেন। পুরো প্রাঙ্গণ প্রাণবন্ত রাখছেন বাংলাদেশিরা। বলা চলে মাঠের সব আকর্ষণ বাংলাদেশকে ঘিরেই। 

 


আইরিশদের বিপক্ষে বড় জয়ের নায়ক মুস্তাফিজুর রহমানের হাতে ম্যাচসেরার পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের সিনিয়র অপারেটিভ ডিরেক্টর ও লেখক উদয় হাকিম

 

বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড দ্বিতীয় ম্যাচের দিন মালাহাইড গ্রাউন্ডের পশ্চিম পাশে কথা হলো খন্দকার জামাল হোসেনের সঙ্গে। গ্রামের বাড়ি বরিশালে। ১৬ বছর ধরে আছেন আয়ারল্যান্ডে। এসেছেন খেলা দেখতে। বাংলাদেশ দলকে সাপোর্ট করতে। বললেন, দেশের ছেলেরা খেলছে। কি যে ভালো লাগছে। বন্ধু এবং পরিচিতদের নিয়ে এসেছেন। মজা করছেন সবাই মিলে।

‘আবার কবে বাংলাদেশ দল দক্ষিণ আয়ারল্যান্ডে আসবে কে জানে? তাই সুযোগ মিস করতে চাই নি’। বললেন, রুহুল আমিন। বাড়ি দিনাজপুরে। থাকেন ডাবলিনে। তিনি বলেন, ‘মাঠে এসে অবাক হচ্ছি। সাইট স্ক্রিনে, বোলিং ম্যাটে ওয়ালটনের বড় বড় লোগো দেখে। বাংলাদেশের একটা কোম্পানি এতো দূরে এসে স্পন্সর হয়েছে! ওয়ালটন এখন মাল্টিন্যাশনাল। বাংলাদেশের গর্বের বিষয়।’

আলমগীর হোসেনের বাড়ি চাঁদপুরে। থাকেন রাজধানী শহর ডাবলিনে। কিছুটা দূর থেকে তিনি দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন। বার বার বলছিলেন, আমি কিন্তু ওয়ালটন ফ্যামিলি। কী রকম? পরিবারে সবকিছুই ওয়ালটনের। আত্মীয় স্বজন সবাই ওয়ালটন পণ্য ব্যবহার করি। সারা বিশ্বে বাংলাদেশি পণ্যের সুনাম ছড়িয়ে পড়ছে। ওয়ালটনের ফ্রিজ, টিভি এখন বাংলাদেশিদের প্রথম পছন্দ। ফোনে কথা হলে আত্মীয়দের বলি, আপনারা দেশের পণ্য কিনেন।

ওই গ্রুপেরই একজন জামিল হায়দার। তিনি বলেন, ওয়ালটন এখন আমাদের কাছে একটা সম্মানের বিষয়। তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশের পণ্য আজ ইউরোপে এসে শো অফ করছে। কতটুকু সাহস এবং শক্তি থাকলে সেটা করা সম্ভব।

 


হাতে দেশের পতাকা। গায়ে দলের জার্সি। টাইগারদের জন‌্য আয়ারল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশিদের অধীর অপেক্ষা

 

কোলন টার্ফ স্টেডিয়ামে কথা হয়েছিলো আজিমের সঙ্গে। সম্ভবত গলওয়ে থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে সফলভাবে ব্যবসা করছেন আয়ারল্যান্ডে। তিনি আগ্রহ দেখালেন ওয়ালটনের সঙ্গে ব্যবসা করা যায় কি না সে বিষয়ে আলোচনার। লোকজনের ভিড়ে তাকে বলি, কিছুক্ষণ পরে কথা হবে এ বিষয়ে।

পতাকা নিয়ে বাংলাদেশিদের দৌড়াদৌড়ি, মাথায় ব্যান্ড পরে একসঙ্গে হৈ হুল্লোড় দেখতে দেখতে সময় এগোয়। সবার সঙ্গে কথা বলতে, হাই হ্যালো করতে করতে কখন যে সময় শেষ হয়ে যায়! কিন্তু উৎসব শেষ হয় না।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ মে ২০১৭/উদয় হাকিম/অগাস্টিন সুজন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়