ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

রণাঙ্গনে ৯ মাস

রাইজিংবিডি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ১৮:৪১, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
রণাঙ্গনে ৯ মাস

|| মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া ||

 

ডিসেম্বর মাস এলেই মনের অজান্তে অনেক স্মৃতি মনে এসে ভিড় করে। আমরা যারা বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ ৯ মাস জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছি তাদের কাছে এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য একটু ভিন্নমাত্রার। বার বারই স্মৃতি হাতড়ে বেরিয়ে আসে সেই সব দিনের কঠিন ও ভয়ঙ্কর মুহূর্তগুলো।

মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসের স্মৃতিকথা লিখতে গেলে প্রথমেই যে প্রসঙ্গটি উঠে আসে তা হলো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ। ২৬ মার্চ প্রত্যুষে দেশমাতৃকা রক্ষায় অন্য দশজনের মতো আমারও সেই দীপ্ত শপথের প্রেরণা ৭ মার্চের ভাষণ।

 

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ সকালে আমি যখন পিটিতে অংশ নিতে যাচ্ছি এমন সময় রক্তমাখা শরীরে এক হাবিলদার এসে জানালো, ‘স্যার পাঞ্জাবিরা ক্যান্টনমেন্ট (চট্টগ্রাম) দখল করে নিয়েছে। অনেক বাঙালি সৈনিককে তারা হত্যা করেছে।’

আমি হতভম্ব হয়ে যাই। এই দখলের উদ্দেশ্য কি আমার বুঝতে বাকি থাকে না। মুহূর্তের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিলাম ক্যান্টনমেন্ট পুনঃউদ্ধার করবো। যদিও পরিস্থিতির কারণে সেই সিদ্ধান্তে বেশি দূর এগুতে পারিনি। তবে দিনভর পরিশ্রম করে সৈন্য, অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করে কুমিড়ার লড়াই সংঘটিত করলাম। অনেকেই হয়তো জানেন ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিড়ার সেই রক্তক্ষয়ী লড়াইটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম এবং শত্রুপক্ষের ক্ষয়ক্ষতির বিবেচনায়ও ছিল সবচেয়ে বেশি। সেই যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর লে. কর্নেল শাহপুর খান বখতিয়ারসহ শত্রুপক্ষের ১৫২ জন নিহত হয়। এই লড়াইয়ের পর আমি ৩ নং সেক্টরের অধীনে দীর্ঘ ৯ মাস লড়াই করি।

 

যুদ্ধকালীন আমার সাথে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সাথে বিভিন্ন অপারেশন এবং যুদ্ধের নানা বিষয় নিয়ে কথা হলেও দু’জন বিশিষ্ট ব্যক্তির সাথে যোগাযোগের বিষয়টি তুলে ধরছি। তারা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরী ও অন্যজন খ্যাতিমান সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী। মিজানুর রহমান চৌধুরীর সাথে আমার প্রথম পরিচয় ১৯৭০ সালের ৫ জুলাই। সেদিন ছিল আমার বিয়ে। মিজান চৌধুরী ছিলেন আমার শ্বশুর সমাজসেবক ও আহম্মদ পাবলিসিং হাউজের স্বত্বাধিকারী মহিউদ্দিন আহমদের ঘনিষ্ঠজন। আমার বিয়ে হয় তৎকালীন শাহবাগ হোটেলে। সেদিন আমার বিয়েতে মিজান চৌধুরীসহ শ্বশুরের পরিচিত ১৫-২০ জন কেন্দ্রীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতা এসেছিলেন।

পাকিস্তান বাহিনীর ক্রেক ডাউনের পর যেসব আওয়ামী লীগ নেতা ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার আগরতলায় আশ্রয় নেন তাদের অনেকেই ছিলেন আগরতলা এমপি হোস্টেলে। তাদের মধ্যে আমার পরিচিত কয়েকজন হলেন মিজানুর রহমান চৌধুরী, সাবেক স্পিকার আবদুল মালেক উকিল, প্রখ্যাত রাজনীতিক মুজাফফর আহাম্মদ, আ.স.ম. আব্দুর রব, এডভোকেট সিরাজুল হক, সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী, এডভোকেট আহম্মদ আলী প্রমুখ।

 

এদের সাথে আমার ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ ছিল অন্য একটি কারণে। চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রথম অবস্থায় ‘কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ থেকে একটি ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। ঘোষণাটি ছিল, ‘যার যার অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে লালদীঘির ময়দানে ক্যাপ্টেন ভূঁইয়ার কাছে রিপোর্ট করুন।’ উল্লেখ্য যে, ২৯ মার্চ ৭১-এর এই অস্থায়ী বেতার কেন্দ্রটি থেকে এই ঘোষণা বার বার প্রচার হয়েছিল। সেই থেকে পাকবাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসররা আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে খুঁজছিল। আমার স্ত্রীকে খুঁজতে সেনাবাহিনীতে কর্মরত আমার দাউদকান্দির এক ক্যাপ্টেনকে তারা ব্যবহার করেছিল। শুনেছি সে সময়ে আমাদের নিকটাত্মীয়দের বাড়িতেও একাধিকবার আমার স্ত্রীকে খোঁজা হয়েছিল। আমি তখন মাঠ পর্যায়ে একের পর এক অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছি। জুনের শেষ দিকে আমার স্ত্রী মাহমুদা আক্তার আমার ছোট ভাই আবুল হোসেন ভূঁইয়ার মাধ্যমে আগরতলা পৌঁছে। সেখানে প্রথমে এডিশনাল ডিস্ট্রিক জজ এসএম আলীর বাসায় তার থাকার ব্যবস্থা করা হয়। মাহমুদা তখন অসুস্থ এবং সন্তানসম্ভবা ছিল বিধায় জজ সাহেবের বাসায় কিছুদিন থাকার পর তার সহায়তায় আগরতলা এমপি হোস্টেলে একটি রুমের ব্যবস্থা করা হয়। বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত মাহমুদা সেখানেই অবস্থান করছিল।

 

স্ত্রী অসুস্থ, তাই লড়াইয়ের ফাঁকে আমার সেক্টর কমান্ডার মেজর কেএম শফিউল্লাহর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আমি মাঝে মধ্যে আগরতলা এমপি হোস্টেলে আসতাম। যখনই আগরতলা আসতাম তখনই ওই নেতাদের সাথে দেখা হতো। বিশেষ করে মিজানুর রহমান চৌধুরী আগ্রহভরে জানতে চাইতেন যুদ্ধ ক্ষেত্রের কথা। কীভাবে অপারেশন করতাম খুঁটেখুঁটে জিজ্ঞেস করতেন। শত্রুপক্ষের উপর আক্রমণের লোমহর্ষক ঘটনাগুলো তিনি আগ্রহ সহকারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শুনতেন। আজ এই মহান ব্যক্তিটি নেই। ১৯৮৫ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এই নেতা আমার গ্রামের বাড়িতে একটি কৃষি ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন। বৃহত্তর কুমিল্লায় যে ক’জন নেতা আমাকে আওয়ামী লীগে যোগদান করতে উৎসাহিত করছিলেন মিজান চৌধুরী ছিলেন তাদের অন্যতম।

 

যুদ্ধকালীন বিশিষ্ট সাংবাদিক আব্দুল গাফফার চৌধুরীর কথাও আমার মনে পড়ছে। চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট, কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র, কুমিরার সশস্ত্র লড়াইসহ বিভিন্ন অপারেশন নিয়ে তিনি আমার সাথে কথা বলেছেন, আবার অনেক কথা নোটও করেছিলেন। আমরা কীভাবে বিদ্রোহ করেছিলাম, চট্টগ্রাম ও আশপাশে কোথায় কীভাবে লড়াই করেছিলাম, বিশেষ করে কালুরঘাটে অস্থায়ী বেতার কেন্দ্রে আমাদের কী কী কার্যক্রম ছিল তার বিস্তারিত সাক্ষাৎকার তিনি নিয়েছিলেন।

 

মুক্তিযুদ্ধের সময়কার এই স্মৃতিচারণে ছোট্ট অথচ তাৎপর্যপূর্ণ কয়েকটি ঘটনার চিত্র তুলে ধরছি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে যে কয়টি লড়াই উল্লেখযোগ্য ছিল তার মধ্যে কুমিড়ার লড়াইয়ের পর তেলিয়াপাড়ার লড়াই অন্যতম। তেলিয়াপাড়ায় অবস্থানকালে আমরা দারুণ অসুবিধার মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলাম। খাওয়া-দাওয়ার তেমন ব্যবস্থা ছিল না। মাঝে মধ্যে কিছু পেলেও খাওয়া সম্ভব হতো না। শত্রুরা খাওয়ার সময়কে টার্গেট করে আমাদের ওপর আর্টিলারী শেল ছুঁড়ত। সে সময় একসাথে কয়েকদিন প্রবল বৃষ্টিও ছিল, বৃষ্টির পানিতে আমাদের ট্রেঞ্চগুলো ভরাট হয়ে যেত। সেই পানি ভরাট ট্রেঞ্চে অবস্থান নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হতো। একদিন শত্রুপক্ষের আর্টিলারীর শেলে আমাদের ৫ জন ছাত্র যোদ্ধা শহীদ হয়। তাদের ৫ জনকে ওখানেই দাফন করা হয়। বেতার যোগাযোগের মাধ্যমে যুদ্ধ ক্ষেত্রে কমান্ড ও কন্ট্রোল নিয়ন্ত্রিত হয়। অনেক সময় আমার এবং মেজর মতিনের মধ্যে প্রায়ই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। সেই প্রচন্ড লড়াইয়ের মধ্যে কোন যোগাযোগ না থাকায় মনে হতো সবাই পজিশন ছেড়ে চলে গেছে। তবে সেটা রাতের বেলা প্রকটভাবে ধরা পড়ত। মনে হতো, আমি একা যেন ট্রেঞ্চে বসে আছি। প্রচণ্ড গোলাগুলির মধ্যে বোঝা সম্ভব ছিল না, কে কোথায় কীভাবে লড়ে যাচ্ছে। একমাত্র আল্লাহর ওপর ভরসা করে আমরা নিজ নিজ অবস্থানে বসে থাকতাম। সেই কয়েকদিনের যুদ্ধে মুজাহিদ দুলা মিয়া যে সাহসিকতায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়েছিলেন তা কখনো ভুলবার নয়। এই যুদ্ধের বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সেক্টর কমান্ডার মেজর কেএম শফিউল্লাহর কাছ থেকে ২৫ টাকা পুরস্কারও পেয়েছিল সে।

 

আজকের এই স্মৃতিকথায় দুলা মিয়ার সেদিনের বীরত্বের কথা না লিখলেই নয়। তেলিয়াপাড়ার লড়াইয়ের পর দুঃসাহসিক মুজাহিদ দুলা মিয়া পরে সিলেটের মুকুন্দপুরের লড়াইয়ে শত্রুর হালকা মেশিনগানের গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হয়। কয়েকটি গুলি তার পেটে লাগে। মারাত্মক আহত হওয়া সত্ত্বেও সে পিছু হটেনি। তার সাহসিকতায় সেদিন ক্যাপ্টেন মুরশেদের কোম্পানির লোকেরা প্রাণে বেঁচে যায়। দুলা মিয়াকে যখন আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়, তখনকার দৃশ্য এত করুণ ও বেদনাদায়ক ছিল যে, তা আজ লেখায় ব্যক্ত করা কঠিন। মুমূর্ষু দুলা মিয়া বামহাত দিয়ে তার পেট চেপে ধরে আছে। তার নাড়ি-ভুড়ি বের হয়ে আসছিল। ডানপায়ে গুলি লেগে মাংস কোনোরকম পায়ের হাঁড়ের সাথে লেগে আছে, আর তার সমস্ত শরীর রক্তাক্ত। গুলিবিদ্ধ বাঘের মতো সে ছটফট করছিল। মনে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে। সেই অবস্থায়ই তাকে আগরতলা জিবি হাসপাতালে পাঠানো হলো। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো দুলা মিয়া আর বাঁচবে না। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে হাসপাতালে দেড় মাস থাকার পর সুস্থ হয়ে সে আবার লে. মুরশেদের কোম্পানিতে যোগ দেয় এবং দেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ করে। অপ্রিয় হলেও সত্য যে, এ বীরত্বের স্বীকৃতি কিন্তু দুলা মিয়া পায়নি। অর্থাৎ তাকে কোনো পদক দিয়ে বীরের সম্মানটুকু দেওয়া হয়নি। আমাদের সেক্টরে তার চেয়ে দুঃসাহসী যোদ্ধা আর কেউ ছিল বলে আমার জানা নেই।

 

বেদনাদায়ক কিন্তু যুদ্ধের ময়দানে শৃঙ্খলা রক্ষায় অনেক সময় আমাদের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। এরই দুটি ঘটনার স্মৃতিচারণ- তেলিয়াপাড়ায় লড়াইয়ের সময় খাওয়া-দাওয়ার মারাত্মক অসুবিধার কথা আগেই বলেছি। জোয়ানদের ঠিকমত খাওয়া জুটত না। লড়াইয়ের ৬ষ্ঠ দিনে ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস-এর একটি ছেলে এসে জানালো তার গায়ে জ্বর এবং ক’দিন সে কোনো খাবার পায়নি। হাতের রাইফেলটি মাটিতে রেখে দিয়ে হতাশার সুরে সে বলল, ‘খাওয়া ছাড়া কীভাবে লড়াই করি। আমার পক্ষে আর লড়াই করা সম্ভব নয়।’

ক্যাপ্টেন মতিনকে লক্ষ করেই সে কথাগুলো বলছিল। মতিন শান্ত কণ্ঠে বললেন, ‘দেখ খাবার আমরাও পাইনি, কিন্তু তাই বলে লড়াই তো আর বন্ধ রাখা যায় না। অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে তাতে খাবার না পেলেও লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’

ক্যাপ্টেন মতিনের কথায় ছেলেটি অভিমানে অনেকটা রেগে গিয়ে বলল, ‘স্যার, যদি খাবার না দেন তাহলে লড়াই করতে পারবো না। এই নিন আমার রাইফেল।’

 

লড়াইয়ের ডিসিপ্লিনের স্বার্থে ক্যাপ্টেন মতিনকে কঠোর হতে হলো সেদিন। সাথে সাথে ছেলেটিকে গ্রেফতার করা হলো। পরে শাস্তি হিসেবে তাকে একটি কাঁঠালগাছের সাথে দড়ি দিয়ে পেঁচিয়ে বেঁধে রাখা হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা ছেলেটিকে এমনিভাবে গাছের সাথে বেঁধে রাখার পর আমি ক্যাপ্টেন মতিনকে বলে তাকে ছাড়িয়ে দেই।

 

১৫ ডিসেম্বর বিকেলে আশুগঞ্জ বাজারে আমার কোম্পানির ট্রেঞ্চগুলো ঘুরে ঘুরে পরিদর্শন করার সময় হঠাৎ রেডিওর খবর শুনলাম- নিয়াজী আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে। আর এই আত্মসমর্পণ মানে যুদ্ধ শেষ। আমাদের চূড়ান্ত বিজয়। খবরটি শুনেই আমার সৈনিকরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ল। তারা উল্লাসে আকাশে অবিরাম ফায়ার করতে লাগল। অবিরাম গুলিবর্ষণে আকাশ বাতাস কেঁপে উঠলো। তখন আমি পরলাম সংকটে। কারণ, নদীর ওপারেই শত্রু এবং ওদের সাথে তখনও আমাদের যুদ্ধ চলছে। যদি তারা নিয়াজীর আত্মসমর্পণ মেনে না নেয়, যদি আবার আক্রমণ করে বসে, তখন কী হবে? গুলি ফুরিয়ে গেলে কী দিয়ে যুদ্ধ করবো? পাকিস্তানিদের এমন কি বিশ্বাস, ওরা তো এতকাল পদে পদে বিশ্বাসঘাতকতাই করে এসেছে। তাই অনেকক্ষণ উচ্চস্বরে চিৎকার করে ফায়ার বন্ধ করালাম। অবশ্য ততক্ষণে আমার জোয়ানরা আনন্দে কয়েক হাজার রাউন্ড গুলি খরচ করে ফেলেছে। পুনরায় এ কাজ যেন আর না করে তাই সবাইকে ফল-ইন করিয়ে শাস্তি হিসেবে দু’হাতে অস্ত্র মাথায় তুলে একটা পুকুরে কনকনে শীতের মধ্যে মার্চ করলাম। ওরা তাই করল। এই হলো যুদ্ধ এবং যোদ্ধার নিয়ন্ত্রিত জীবন। সারারাত ভিজে কাপড়ে এই হিমেল হাওয়ায় কারো হাসি এতটুকু ম্লান হয়নি, কারণ সবাই তখন সকালের প্রতীক্ষায়। ১৬ ডিসেম্বরের সূর্যোদয়ের।

 

লেখক : প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ ডিসেম্বর ২০১৬/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়