ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

গোয়েন্দা নজরদারিতে ফেসবুক ফুডিজ গ্রুপ

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৬, ১০ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গোয়েন্দা নজরদারিতে ফেসবুক ফুডিজ গ্রুপ

ফাইল ফটো

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : ফেসবুকভিত্তিক বিভিন্ন ফুডিজ গ্রুপ খুলে নানা পন্থায় রেস্টুরেন্ট মালিকদের হয়রানি, চাঁদাবাজি এবং ব্ল্যাকমেইলিং-এর অভিযোগে চট্টগ্রামভিত্তিক সবগুলো ফুডিজ গ্রুপকে গোয়েন্দা নজরদারিতে আনা হচ্ছে।

সম্প্রতি চট্টগ্রামের একটি ফুডিজ গ্রুপের এডমিনদের বিরুদ্ধে ব্ল্যাক মেইলিং ও চাঁদাবাজির অভিযোগ অনুসন্ধান করতে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর ফুডিজগ্রুপ ও তাদের এডমিনদের নজরদারিতে রাখার উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (ডিসি বন্দর) এ বি সিদ্দিক রাইজিংবিডিকে জানান, তথ্যপ্রযুক্তি, ফেসবুক কিংবা অন্যান্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে অনেকে নানাভাবে অনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ আসে তাদের কাছে। এর মধ্যে ফেসবুকভিত্তিক ফুডিজ গ্রুপের কতিপয় এডমিনদের চাঁদাবাজি, ব্ল্যাকমেইলিং এবং বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট মালিকদের নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ পাওয়ার পর সম্প্রতি এই বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশ। অনুসন্ধানে কয়েকটি ফুডিজ গ্রুপের বিরুদ্ধে এমন অনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার তথ্য-প্রমাণ হাতে পেয়েছে পুলিশ। এর ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের একটি বড় ফুডিজ গ্রুপের এডমিনদের সতর্ক করে গ্রুপটি বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। অন্য ফুডিজ গ্রুপ যাতে এমন অনৈতিক কার্যক্রম চালাতে না পারে, সেই ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট।

অনুসন্ধান ও পুলিশের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ফেসবুকে চট্টগ্রামভিত্তিক ১০ থেকে ১৫টি ফুডিজ গ্রুপ রয়েছে। নানা নামে এসব ফুডিজ গ্রুপ ফেসবুকে মেম্বার যুক্ত করে। এ সব ফুডিজ গ্রুপে ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ পর্যন্ত গ্রুপ মেম্বার রয়েছে। এই বিপুল সংখ্যক মেম্বারকে ব্যবহার করে চট্টগ্রামের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট মালিকদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায়ের ফাঁদ তৈরি করে কতিপয় ফুডিজ গ্রুপের এডমিন। কিন্তু এডমিনদের এমন অনৈতিক ব্যবসার ফাঁদ সম্পর্কে অবগত থাকে না লাখ লাখ গ্রুপ মেম্বার। সম্প্রতি চট্টগ্রামের একটি বড় ফুডিজ গ্রুপ চট্টগ্রামে ফুড ফেস্ট আয়োজন, রেস্টুরেন্ট মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় এবং বিভিন্ন এতিমখানায় দান কিংবা সামাজিক কাজে ব্যবহারের কথা বলে ৬০-৭০ লাখ টাকার ব্যবসা করেছে বলে পুলিশ তথ্য পেয়েছে।

চট্টগ্রামের কয়েকটি রেস্টুরেন্টের মালিক রাইজিংবিডিকে জানান, কতিপয় ফুডিজ গ্রুপের কাছে তারা অনেকটা জিম্মি হয়ে পড়েছেন। ফুডিজ গ্রুপের এডমিনদের অনৈতিক দাবি পূরণ করতে না পারলে রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার চালানো হতো। এমনকি, অশ্লীল, প্রকাশ অযোগ্য শব্দ ব্যবহার করে রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে নেগেটিভ প্রচারণা চালানো হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গোয়েন্দা পুলিশের তৎপরতা শুরু হওয়ায় ফুডিজ গ্রুপগুলোর অনৈতিক কার্যক্রম এখন কমে এসেছে।

গোয়েন্দা পুলিশের নজরদারিকে স্বাগত জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ফুডিজ গ্রুপের এডমিন রাইজিংবিডিকে জানান, বিপুল মেম্বারকে পুঁজি করে কয়েকটি ফুডিজ গ্রুপ অনৈতিক ব্যবসা খুলে বসায় সবগুলো ফুডিজ গ্রুপের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। গোয়েন্দা তৎপড়তার ফলে অসাধু এডমিনরা শাস্তির আওতায় আসলে ফেসবুকের জনপ্রিয় ফুডিজ গ্রুপগুলোর মাধ্যমে মেম্বাররা ভালো সেবা পাবে।



রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/১০ জুন ২০১৮/রেজাউল/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়