ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

অনুসন্ধান চলাকালেই অবৈধ সম্পদ জব্দের সিদ্ধান্ত দুদকের

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১৭, ২৪ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অনুসন্ধান চলাকালেই অবৈধ সম্পদ জব্দের সিদ্ধান্ত দুদকের

নিজস্ব প্রতিবেদক : অনুসন্ধান চলাকালেই অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ জব্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার সকালে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের বিশেষ সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় বলে একটি সূত্র রাইজিংবিডিকে নিশ্চিত করেছে।

দুদক চেয়ারম্যানের অফিস কক্ষে কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে নবগঠিত ‘অপরাধলব্ধ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ইউনিটের’ কার্যক্রম নিয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ২০০৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত অবৈধ সম্পদ সংক্রান্ত চলমান এবং কমিশনের পক্ষে রায় হয়েছে এমন সব মামলায় সম্পৃক্ত সকল প্রকার অবৈধ সম্পদ জব্দ/ক্রোক/অবরুদ্ধ করে মামলার তালিকা অনুযায়ী রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে কমিশনে উপস্থাপন করতে হবে এবং এসব কার্যক্রমে যারা যুক্ত থাকবেন তাদের ফরোয়ার্ড ডায়রি অনুসরণ করতে হবে।

ইতিমধ্যেই যেসব মামলায় আসামিদের শাস্তির পাশাপাশি আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে অথবা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাও রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দেন কমিশনের চেয়ারম্যান।

এখন থেকে প্রতিটি অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় সম্পদ জব্দ/ক্রোক করতে হবে। অবৈধ সম্পদ ভোগ করার সুযোগ কাউকেই দেওয়া হবে না। অবৈধ সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে আনার জন্য দুদক ব্যবস্থা নেবে।

এসব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় যাতে কোনো প্রকার দুর্নীতি, সম্পদের ক্ষতিসাধন কিংবা অব্যস্থাপনার সুযোগ না থাকে এমন একটি নীতিমালা প্রণয়নের জন্য কেবিনেট ডিভিশন, অর্থ মন্ত্রণালয়, আইন-বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে একটি যৌথসভায় আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে সম্পদ ব্যবস্থাপনা করা যায় কি না-তা পরীক্ষা করার নির্দেশ দেন।

এসব সম্পদের যারা জিম্মাদার হবেন, তাদের জবাবদিহিতার বিষয়টিও বিশেষভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতির একটি পথ বন্ধ করে আরেকটি পথ কখনই খুলতে দেওয়া যাবে না।

সভায় তিনি বলেন, দুদকের যেসব মামলায় আসামিরা মারা গেছেন কিন্তু অবৈধ সম্পতি রয়ে গেছে এসব অবৈধ সম্পদ ক্রোক/জব্দ/বাজেয়াপ্ত করার জন্য আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।

সম্প্রতি একটি আলোচিত অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী  সরকারির কর্মকর্তার প্রসঙ্গ টেনে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, তার জব্দকৃত ব্যাংক হিসাবে বাইরেও ব্যাংক হিসাব থাকতে পারে। তাই তার সকল ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইউনিটকে চিঠি দেওয়ার নির্দেশনা দেন।

সভায় একজন কর্মকর্তা কমিশনের বিভিন্ন অভিযান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দু-একটি নেতিবাচক মন্তব্য দুদক চেয়ারম্যানের দৃষ্টিগোচর করলে-দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কমিশনের প্রতিটি অভিযান আইনানুগ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা হচ্ছে।

কমিশন আইনের তফসিলভুক্ত অপরাধ দণ্ডবিধি ১৬৬ ধারা উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, কোনো ব্যক্তির ক্ষতি সাধনকল্পে সরকারি কর্মচারী কর্তৃক আইন আমান্যকরণ দণ্ডনীয় অপরাধ, যা কমিশনের তফসিলভুক্ত অপরাধও। তাই আইন অমান্য করে জনগণের কোনো ক্ষতিসাধন কিংবা ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করা হলে আরও কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সময় কমিশনের অপরাধলব্ধ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ইউনিটের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির, গোয়েন্দা ইউনিটের পরিচালক, আইন অনুবিভাগর পরিচালক ও বিশেষ তদন্ত অনুবিভাগের পরিচালকসহ  ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরবর্তীকালে দুদক কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদক মহাপরিচালক (প্রশাসন) মুনীর চৌধুরী বলেন, এখন থেকেই দুর্নীতির অনুসন্ধান বা তদন্তকালে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি দুদকের আওতায় নিয়ে আসা হবে। কোনোক্রমেই দুর্বীতিবাজ কিংবা অন্য কাউকে এই সম্পদ ভোগ করতে দেওয়া হবে না। দুদকই ওই সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবে৷

তিনি আরো বলেন, শুধু তাই নয় ২০০৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দুদকের মামলায় যত সম্পদ ফ্রিজ বা ক্রোক হয়েছে, তাও দুদকের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

এ সময় উপস্থিত অপর মহাপরিচালক (আইন) মঈদুল ইসলাম বলেন, দুদক যখনই চাইবে অনুসন্ধান বা তদন্ত পর্যায়ে সম্পদ জব্দ করতে পারবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ জানুয়ারি ২০১৯/এম এ রহমান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়