সিলেটে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিকতার ছোঁয়া
কামাল || রাইজিংবিডি.কম
সিলেট নগরীর টিলাগড়ে নির্মিতব্য ট্রান্সফার স্টেশন
রফিকুল ইসলাম কামাল, সিলেট : সিলেট মহানগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় লাগছে আধুনিকতার ছোঁয়া।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সহজ করতে এবং পরিবেশ দূষণ রোধ করতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন করছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)।
এ লক্ষ্যে সিলেট মহাগরীতে ৪টি ‘সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন’ নির্মাণ করা হচ্ছে। এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) তিন কোটি ২০ লাখ টাকা অর্থ সহায়তায় এ প্রকল্প এগিয়ে চলেছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ‘আরবান এনভায়রনমেন্ট হেলথ সেক্টর ডেভলাপমেন্ট প্রজেক্ট’-এর আওতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, মহানগরীতে প্রতিদিন দুইশ’ থেকে আড়াইশ’ মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদন হয়। এসব বর্জ্য ভ্যানগাড়ি দিয়ে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা ডাস্টবিনে এনে ফেলা হয়। পরে ট্রাকযোগে এসব ময়লা-আবর্জনা নিয়ে যাওয়া হয় দক্ষিণ সুরমার পারাইরচকস্থ সিসিকের গার্বেজ গ্রাউন্ডে।
তবে গার্বেজ গ্রাউন্ডে নেওয়ার আগে দীর্ঘসময় খোলা ডাস্টবিনে পড়ে থাকা বর্জ্য দুর্গন্ধ ছড়ায়। এতে দূষিত হয় পরিবেশ। ভোগান্তি পোহান নগরবাসী।
এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে সিলেট নগরীর টিলাগড়, শাহী ঈদগাহ, রিকাবিবাজার ও দক্ষিণ সুরমার স্বর্ণশিখা আবাসিক এলাকায় চারটি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন নির্মাণ করছে সিসিক। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্মিত প্রত্যেকটি ট্রান্সফার স্টেশন নির্মাণে খরচ হচ্ছে ৮০ লাখ টাকা। এ হিসাবে চারটি স্টেশন নির্মাণে ব্যয়ের পরিমাণ তিন কোটি ২০ লাখ টাকা। এই পুরো টাকাই দিচ্ছে এডিবি।
ইতোমধ্যেই রিকাবিবাজার, টিলাগড় ও শাহী ঈদগাহের ট্রান্সফার স্টেশনের কাজ প্রায় শেষের পথে। কিছুদিনের মধ্যে এ স্টেশনগুলো উদ্বোধন করে কাজে লাগানো হবে।
ট্রান্সফার স্টেশনগুলো উদ্বোধন হয়ে গেলে মহানগরীর ময়লা-আবর্জনা খোলা ডাস্টবিনে ফেলা হবে না। সিসিকের নিজস্ব ভ্যানগাড়ি দিয়ে বর্জ্য সরাসরি ট্রান্সফার স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হবে। ট্রান্সফার স্টেশনে বর্জ্য পরিশোধনের পর সেগুলো সিসিকের স্থায়ী গার্বেজ গ্রাউন্ড পারাইরচকে নিয়ে যাওয়া হবে। এতে একদিকে নগরীর পরিবেশ দূষণমুক্ত থাকবে, দুর্গন্ধের হাত থেকে বাঁচবেন নগরবাসী।
অন্যদিকে পরিশোধন ছাড়া বর্জ্য ফেলায় পারাইরচক এলাকার পরিবেশে যে বিরূপ প্রভাব পড়তো, তাও কমে আসবে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব বলেন, ‘ট্রান্সফার স্টেশনগুলো চালু হলে পরিবেশ দূষণমুক্ত হওয়ার পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও সহজ হবে। এই চারটি স্টেশন চালু হলে নগরীর প্রায় অর্ধেক এলাকাই আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আওতায় চলে আসবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পুরো নগরীকে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আওতায় আনতে আরো কয়েকটি ট্রান্সফার স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এ জন্য জায়গা প্রয়োজন। প্রকল্পের নির্মাণকাজের জন্য অর্থ বরাদ্দ থাকলেও জায়গার জন্য কোনো বরাদ্দ নেই।’
রাইজিংবিডি/সিলেট/১৩ ডিসেম্বর ২০১৬/কামাল/রুহুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন