ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

অবৈধভাবে আনা বিলাসবহুল গাড়িতে ৩৫ লাখ টাকার শুল্ক ফাঁকি

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৯, ৮ অক্টোবর ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অবৈধভাবে আনা বিলাসবহুল গাড়িতে ৩৫ লাখ টাকার শুল্ক ফাঁকি

কেএমএ হাসনাত : শুল্ক ও কর ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে আনা বিলাসবহুল একটি মার্সিডিজি বেঞ্জ গাড়ি আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

 

এ গাড়ির আনুমানিক দাম প্রায় ৫ কোটি টাকা। এতে প্রায় ৩৫ লাখ টাকার শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। ধানমন্ডির একটি বাড়ি থেকে ঢাকা মেট্রো-গ-১৪-৯৭৩৮ রেজিস্ট্রেশন নম্বরের গাড়িটি আটক করা হয়। এ বিষয়ে ধানমন্ডি থানায় গত ৫ অক্টোবর একটি মামলা হয়েছে।

 

এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান রাইজিংবিডিকে বলেন, বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরে র‌্যাবের সহযোগিতায় গত ৩ এপ্রিল রাজধানির বাড়ী নং-২৩/এ, রোড নং-৫, ধানমন্ডিতে অভিযান চালিয়ে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়। গাড়িটির মালিক মো. বেলায়েত হোসেন। তার বাবার নাম মরহুম হাজী ইয়াকুব আলী।

 

বেলায়েত হোসেন গাড়িটি অবৈধভাবে দেশে ঢুকিয়েছেন। গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের জন্য যে সব কাগজ ব্যবহার করা হয়েছে তার সবগুলো ভূয়া। শুল্ক ও কর ফাঁকি দিয়ে গাড়িটি এনে রেজিস্ট্রেশনও নিয়েছেন একই ভাবে। এতে সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

 

সূত্র জানায়, জব্দকৃত গাড়িটি শুল্ক আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া অবৈধভাবে/চোরাচালানের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করানোর ফলে এর শুল্কায়িত মূল্য তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া গাড়িটি ২০০৮ মডেলের এবং এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ৭ বছরের পুরাতন এবং বিভিন্ন কাস্টম হাউস থেকে গাড়িটির শুল্কায়নযোগ্য মূল্য না পাওয়ায় তথা শুল্ক মূল্যায়ন (আমদানি পণ্যের মূল্য নির্ধারণ) বিধিমালা, ২০০০ এর বিধি ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৮ প্রয়োগ করে মূল্য নির্ধারণ করা সম্ভব না হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে একই বিধিমালার বিধি ৯ প্রয়োগ করে গাড়িটির শুল্কায়নযোগ্য মূল্য পঁচিশ লাখ চল্লিশ হাজার দুইশত তিরাশি টাকা নিরূপণ করা হয়।  সে অনুযায়ী ফাঁকি দেওয়া শুল্ককরাদির পরিমাণ ৩৪ লাখ ৬২ হাজার চারশ টাকা।

 

দি কাস্টমস অ্য্যাক্ট, ১৯৬৯ এর, সেকশন ১৫৬ এর সাব-সেকশন ১ এর টেবিলভূক্ত ক্লজ-৯০ অনুযায়ী অপরাধের মাত্রা বিবেচনায় শুল্কায়নযোগ্য মূল্য/অপরাধযোগ্য মূল্যের উপর সর্বোচ্চ ১০ গুন জরিমানা আরোপের বিধান আছে। সে অনুযায়ী জরিমানা আরোপিত হলে মূল্য দাড়ায় তিন কোটি ১৪ লাখ টাকা। তবে রেজিস্ট্রেশন ও অন্যান্য আনুসাঙ্গিক খরচসহ গাড়িটির মূল্য অনুমানিক ৫ কোটি টাকা হতে পারে।

 

সূত্র জানায়, আটককৃত গাড়িটি কিভাবে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে কাস্টমস দলিলাদি তৈরি করে বাংলাদেশে প্রবেশ করলো তা বের করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই কমিটি তদন্ত শেষে এনবিআরের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে যেহেতু অবৈধভাবে খালাসকৃত গাড়িটি বাংলাদেশের একজন নাগরিকের মালিকানা ও হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সেহেতু বর্তমান মালিকের অর্থাৎ যার হেফাজত  থেকে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়েরের সুপারিশ করে।

 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গত ১ জুনের এক চিঠিতে তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে জব্দকৃত গাড়িটির ওপর প্রযোজ্য শুল্ককরাদি ৩৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে এটি চোরাচালানের মাধ্যমে অবৈধভাবে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করানোর অভিযোগে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।

 

দি কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৮ অনুসারে প্রযোজ্য শুল্ক করাদি ফাঁকিসহ বিল অব এন্ট্রি দাখিল না করে সেকশন ৮০ অনুসারে শুল্কায়ন ও সেকশন ৮৩ অনুসরণ না করে পণ্য খালাসসহ ভূয়া বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে বিআরটিএ হতে রেজিস্ট্রেশনসহ পুরো কার্যক্রমটিই দ-নীয় অপরাধ।
 





রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ অক্টোবর ২০১৫/হাসনাত/নওশের

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়