ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

অর্থপাচারের মামলায় মামুনের ৭ বছর কারাদণ্ড

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ২৪ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অর্থপাচারের মামলায় মামুনের ৭ বছর কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক : অর্থপাচার আইনের একটি মামলায় তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে ৭ বছর কারাদণ্ড এবং ১২ কোটি টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।

বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকের হিসাবে থাকা পাচারকৃত ৪ লাখ ১৮ হাজার ৮৫৩.৪৭ ব্রিটিশ পাউন্ড স্টার্লিং (৬ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ টাকা) রাষ্ট্রের অনূকুলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বাজেয়াপ্তের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে অবহিত করাসহ বাজেয়াপ্তকৃত সম্পত্তির তফসিলসহ সকল বিবরণ সরকারি গেজেটে প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ টাকা লন্ডন থেকে বাংলাদেশে ফেরত আনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণার সময় কারাগার থেকে ওই আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

দুদকের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। আসামিপক্ষে ছিলেন জাহেদুল ইসলাম কোয়েল, হেলাল উদ্দিন, আকবার হোসেন জুয়েল প্রমুখ আইনজীবী।

মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জানান, আদালত মানিলন্ডারিং আইন ২০০২ এর ১৩(২) ধারা অনুযায়ী আদালত সর্বোচ্চ দণ্ড প্রদান করেছেন। রায়ে আমি সন্তুষ্ট।

আসামিপক্ষের আইনজীবী জাহেদুল ইসলাম কোয়েল জানান, সুবিচার পাইনি। রায়ে আমরা সংক্ষুব্ধ। আদেশের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব।

তিনি বলেন, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৭ সালের ৩০ জানুয়ারি যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং, করফাঁকিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০টিরও বেশি মামলা হয়। মামলাগুলোর মধ্যে তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে মানিলন্ডারিং আইনের আরেকটি মামলায় তার ৭ বছরের কারাদণ্ড হয় ২০১৩ সালে। এরও আগে অস্ত্র আইনের একটি মামলায় ১০ বছর কারাদণ্ড হয়। যা পরে হাইকোর্ট বাতিল করেছেন। এছাড়া, অবৈধ সম্পদ অর্জনের একটি মামলাতেও তিনি ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।

এ মামলায় ২০১২ সালের ২৯ এপ্রিল গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখায় পুলিশ। সে হিসেবে আগামী ২৯ এপ্রিল তার সাজার মেয়াদ শেষ হচ্ছে বলে জানান জাহেদুল ইসলাম কোয়েল।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বিটিএল ও গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালের চেয়ারম্যান এম শাহজাদ আলী রেলওয়ের সিগন্যালিং আধুনিকীকরণের টেন্ডার পান। কিন্তু কার্যাদেশ চূড়ান্ত করার সময় গিয়াস উদ্দিন আল মামুন তার কাছে অবৈধ কমিশন দাবি করেন। নতুবা কার্যাদেশ বাতিল করার হুমকি দেন। ওই হুমকি দিয়ে মামুন ২০০৩ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে ৬ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ টাকা গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তা বাংলাদেশ থেকে লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকে পাচার করেন। এই অভিযোগে ২০১১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম। পরের বছর ২৬ এপ্রিল একই ব্যক্তি মামলাটি তদন্ত করে মামুনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলাটির বিচারকাজ চলাকালে আদালস চার্জশিটভুক্ত ১০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ এপ্রিল ২০১৯/মামুন খান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়