ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ইউরোপের সেরা ফুটবল লিগ পঞ্চকের কড়চা

নেছার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৫, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ইউরোপের সেরা ফুটবল লিগ পঞ্চকের কড়চা

স্প্যানিশ লা লিগার শিরোপা নিয়ে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের খেলোয়াড়, কোচ ও কর্তাদের উচ্ছ্বাস

নেছার উদ্দিন : প্রবাদে আছে, সময় এবং স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না। সময় চলে তার আপন গতিতেই । সময়ের পথে পাল্লা দিয়ে বিদায় নিচ্ছে আরো একটি বছর। কালের গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে ২০১৪। এ বছরটি কেমন কাটল ইউরোপের সেরা লিগ-পঞ্চকের? আলোচনা-পর্যালোচনার পর লিগ-পঞ্চকের কড়চা রাইজিংবিডির পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো :

 

১৮ বছর পর অ্যাটলেটিকোর শিরোপা জয় : রিয়াল-বার্সাকে হটিয়ে লা লিগায় চ্যাম্পিয়ন হয় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। স্প্যানিশ ফুটবলে নতুন রাজত্ব শুরু করে তারা। কেউ কেউ বলতে শুরু করেন, বার্সা-রিয়ালের পর ‘তৃতীয় ঘোড়া’ হিসেবে তাদের আবির্ভাব স্প্যানিশ ফুটবলে নতুন মাত্রা যোগ করবে।

 

লা লিগার শেষ ম্যাচে বার্সেলোনার সঙ্গে ড্র করে ১৮ বছর পর আবারও শিরোপা ঘরে তোলে অ্যাটলেটিকো। অঘোষিত ফাইনালে রুপ নেওয়া লিগের শেষ ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করে শিরোপা উৎসবে মেতে উঠেন দিয়েগো সিমেয়োনের শিষ্যরা।

 

শিরোপার পরিসংখ্যান : লা লিগায় সর্বোচ্চ ৩২ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বার্সেলোনো। ২০১৩-১৪ মৌসুমের শিরোপা নিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১০ বার চ্যাম্পিয়ন হলো অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ।

 

লিগের হিসাবনিকাশ : ২০১৩-১৪ মৌসুমে ৩৮ ম্যাচ শেষে ৯০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ছিল অ্যাটলেটিকো। সমান ম্যাচে ৮৭ পয়েন্ট নিয়ে বার্সেলোনার অবস্থান দ্বিতীয়। আর তৃতীয় স্থানে থাকা রিয়ালের পয়েন্টও সমান ৮৭। গোল গড়ে পিছিয়ে থাকায় তাদের এমন অবস্থান।

 

চলতি মৌসুমে লা লিগার অবস্থা : ২০১৪-১৫ মৌসুমে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে বছর শেষ করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ১৫ রাউন্ড শেষে তাদের অর্জন ৩৯ পয়েন্ট। ১ ম্যাচ বেশি খেলে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে বার্সেলোনার অবস্থান দ্বিতীয় স্থানে। আর তৃতীয় স্থান অধিকারী অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সংগ্রহ ৩৫।

 

প্রিমিয়ার লিগের সেরার মুকুট ম্যানসিটির : বিশ্বের ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে জমজমাট আসর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। আর লিগের শিরোপা নির্ধারণও হয়েছে চরম উত্তেজনার মধ্য দিয়েই। শিরোপা নিশ্চিত করতে সিটির প্রয়োজন ছিল এক পয়েন্ট। তাই ড্র করলেই চলতো তাদের। কিন্তু ওয়েস্টহামকে ২-০ গোলে হারিয়ে পুরো তিন পয়েন্ট আদায় করেই প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা ঘরে তোলে ম্যানচেস্টার সিটি।

 

শিরোপার পরিসংখ্যান : সিটিজেনরা এ নিয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা ঘরে তুলল চারবার। সর্বশেষ তারা লিগ শিরোপা জেতে ২০১১-১২ মৌসুমে। তারও আগে ১৯৬৭-৬৮ ও ১৯৩৬-৩৭ মৌসুমে ইংলিশ লিগের ট্রফি জিতেছিল ম্যানসিটি।

 

লিগের হিসাবনিকাশ : এই জয়ের ফলে ২০১৩-১৪ মৌসুমে ম্যানসিটির ভান্ডারে জমা হলো ৮৬ পয়েন্ট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লিভারপুলের পয়েন্ট ৮৪। ৮২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে হোসে মরিনহোর চেলসি। ৭৯ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করেছে আর্সেন ওয়েঙ্গারের আর্সেনাল।

 

চলতি মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগের অবস্থা : ২০১৪-১৫ মৌসুমে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে বছর শেষ করেছে চেলসি। ১৯ রাউন্ড শেষে তাদের অর্জন ৪৬ পয়েন্ট। সমসংখ্যক ম্যাচে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে ম্যানচেস্টার সিটির অবস্থান দ্বিতীয়। আর তৃতীয় স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সংগ্রহ ৩৬।

 

জার্মান বুন্দেসলিগার শিরোপা বায়ার্নের : বুন্দেসলিগায় জয় দিয়ে মৌসুম শেষ করে বায়ার্ন মিউনিখ। লিগের শেষ ম্যাচে স্টুটগার্টকে ১-০ গোলে হারায় তারা। দলের পক্ষে অতিরিক্ত সময়ে একমাত্র গোলটি করেন পেরুর স্ট্রাইকার ক্লাদিও পিজারো। চলতি লিগে রেকর্ড সাত ম্যাচ বাকি থাকতে চ্যাম্পিয়ন হয় বায়ার্ন। পেপ গার্দিওলার অধীনে এমন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত বায়ার্নের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা।

 

বুন্দেসলিগার হিসাবনিকাশ : ২০১৩-১৪ মৌসুমে ৩৪ ম্যাচে রেকর্ড ২৯টিতে জয় পায় বায়ার্ন। ঝুলিতে ৯০ পয়েন্ট পুজি করে তারা। ৭১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে মৌসুম শেষ করে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। তৃতীয় স্থানে থাকা শালকের সংগ্রহ ছিল ৬৪।

 

চলতি মৌসুমে বুন্দেসলিগার অবস্থা : ২০১৪-১৫ মৌসুমে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে বছর শেষ করেছে বায়ার্ন মিউনিখ। ১৭ রাউন্ড শেষে তাদের অর্জন ৪৫ পয়েন্ট। সমসংখ্যক ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে ওলফসবুর্গের অবস্থান দ্বিতীয়। আর তৃতীয় স্থান অধিকারী বেয়ার লেভারকুসেনের সংগ্রহ ২৮।

 

ইতালিয়ান সিরি’আ লিগের চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাস : টানা তৃতীয়বারের মতো ইতালিয়ান সিরি’আ লিগের চ্যাম্পিয়ন হয় জুভেন্টাস। তিন ম্যাচ হাতে রেখেই ইতালিয়ান সিরি’আ শিরোপা ঘরে তোলে তারা। পালের্মোকে ১-০ গোলে হারানোয় হ্যাটট্রিক শিরোপা নিশ্চিত হয় তাদের। এবার জুভাদের শিরোপা জয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেন কার্লোস তেভেজ। জুভেন্টাসের হয়ে এ মৌসুমে ১৯টি গোল করেন তিনি।

 

লিগ পয়েন্টের হিসাবনিকাশ : ২০১৩-১৪ মৌসুমে ৩৮টি ম্যাচের মধ্যে ৩৩টিতে জয় পেয়েছে জুভেন্টাস। ১০২ পয়েন্ট নিয়ে মৌসুম শেষ করে তারা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রোমার সংগ্রহ ৮৫ পয়েন্ট। আর ৭৮ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করে নাপোলি।

 

চলতি মৌসুমে ইতালিয়ান সিরি’আ এর অবস্থা : ২০১৪-১৫ মৌসুমে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে বছর শেষ করেছে জুভেন্টাস। ১৬ রাউন্ড শেষে তাদের অর্জন ৩৯ পয়েন্ট। সমসংখ্যক ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে রোমার অবস্থান দ্বিতীয়। আর তৃতীয় স্থান অধিকারী লাজিওর সংগ্রহ ২৭।

 

ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানের শিরোপা পিএসজির : ১৯৯৩-৯৪ মৌসুমের সব শেষে ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানের শিরোপা জিতেছিল প্যারিস সেইন্ট জার্মেই। ১৯ বছর পর ২০১২-১৩ মৌসুমে সেই ট্রফি পুনরুদ্ধার করে পিএসজি। ২০১৩-১৪ মৌসুমেও শিরোপা ঘরে তোলে তারা। অলিম্পিক লিঁওকে ১-০ গোলে হারিয়ে দুই ম্যাচ হাতে রেখে নিশ্চিত হয়েছে ট্রফি জয়।

 

লিগের হিসাবনিকাশ : ২০১৩-১৪ মৌসুমে ৩৮ ম্যাচ খেলে ২৭টি জয় পেয়েছে পিএসজি। ঝুলিতে ছিল ৮৯ পয়েন্ট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মোনাকোর ভা-ারে সঞ্চিত হয় ৮০ পয়েন্ট। আর ৭১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করে লিলি।

 

চলতি মৌসুমে লিগ ওয়ানের অবস্থা : ২০১৪-১৫ মৌসুমে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে বছর শেষ করেছে অলিম্পিক মার্শেই । ১৯ রাউন্ড শেষে তাদের অর্জন ৪১ পয়েন্ট। সমসংখ্যক ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে লিওনের অবস্থান দ্বিতীয়। আর তৃতীয় স্থান অধিকারী পিএসজির সংগ্রহ ২৭।



 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ ডিসেম্বর ২০১৪/নেছার/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়