ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মেমনের জীবনের শেষ কটি মুহূর্ত

টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ৩০ জুলাই ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মেমনের জীবনের শেষ কটি মুহূর্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইয়াকুব মেমনের ফাঁসি পেছানোর আর্জি নিয়ে রাতভর দিল্লিতে চলল নাটক। রাষ্ট্রপতি মেমনের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দেওয়ার পর রাতেই প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হাজির হন মেমনের আইনজীবীরা। ১৪ দিনের জন্য প্রাণভিক্ষার আর্জি জানান তারা। এরপরই প্রধান বিচারপতি তিন বিচারপতির বেঞ্চ তৈরি করে দেন। কেন ফের মেমনের প্রাণভিক্ষার শুনানি হবে সে নিয়ে আদালতের বাইরে বিক্ষোভ চলে।

রাত ৩টা ২০ মিনিটে শুনানি শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টের ৪ নম্বর এজলাসে। মেমনের পক্ষে আইনজীবী অশোক গ্রোভার আদালতে জানান, প্রাণভিক্ষার আর্জি নয়, ফাঁসি পেছানোর জন্যই তারা নতুন করে আবেদন জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টে। অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি এবং মেমনের আইনজীবীদের জন্য প্রায় দেড় ঘণ্টা চলে সওয়াল জবাব।

বিচারপতিরা জানান, মেমনকে সময় দেওয়া হয়েছে। এরপরেও যদি তার ফাঁসি পেছানো হয়, তাহলে তা বিচারব্যবস্থার ক্ষেত্রে খারাপ নজির তৈরি হবে। ভোর প্রায় পাঁচটা নাগাদ বিচারপতিরা ফাঁসি পেছানোর আবেদন খারিজ করে দেন। সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে সাতটার মধ্যে ফাঁসি কার্যকর করার জন্য নাগপুর জেলে নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে সারা রাতে কিছুই খাননি মেমন। জেলের এক কোণে বসে চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে ছিলেন। রাতে খাবার দিতে এলেও কিছু খেতে চাননি। কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর বলছেন, ‘আমি জানি আমি মরব। কোনো ম্যাজিকই এখন আমায় বাঁচাতে পারে। শুধু একবার আমার মেয়েকে দেখতে চাই।’

রাত ৩টার সময় ঘুম থেকে তোলা হয় মেমনকে। এরপর সবই চলতে থাকে ঘড়ির কাঁটায় কাঁটায়। ১৫ মিনিট বাদে স্নান করানো হয়। এরপরেই পাঁচ মিনিটের মধ্যে নতুন পোশাক পরিয়ে তৈরি করা হয়। এর মধ্যেই এসে পড়ে জলখাবার। জীবনের শেষ খাবার খেতে চাননি। সাড়ে ৩টা থেকে দুই ঘণ্টা ধরে ধর্মগুরুর উপস্থিতিতে করেন বিশেষ প্রার্থনা। সাড়ে পাঁচটার কিছু পরে ইয়াকুবকে সাজা পড়ে শোনানো হয়। এরপর অপরাধের ক্ষমাপ্রার্থনা করেন ইয়াকুব।

৫.৩৫ মিনিটে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ফিট ঘোষণা করেন ডাক্তাররা। ৫.৪৫ মিনিটে সেলের মধ্যে ঘুরিয়ে সহ-বন্দিদের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়। সহ-বন্দিদের মধ্যে কেউ কেউ আবেগে ভেঙে পড়েন। ৬টা থেকে ৬টা ২৫ : কোরআন তিলাওয়াত ও বিশ্রাম করেন। ৬টা ২৫ মিনিটে তার সেল থেকে ২৫ পা দূরে ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়। ৬.৩৫ মিনিটে ফাঁসি কাষ্ঠে ঝোলানো হয়। নিয়ম মেনে ৩০ মিনিট ঝুলিয়ে রাখার পর ডাক্তাররা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ২১ বছর জেলে থাকার পর মুম্বাই বিস্ফোরণের মূল অভিযুক্তর জীবনকাহিনিতে দাঁড়ি পড়ে।

তথ্যসূত্র : জি নিউজ

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জুলাই ২০১৫/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়