ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

১০৬৯ বাঘ উধাও!

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪১, ২১ আগস্ট ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
১০৬৯ বাঘ উধাও!

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, খুলনা : সুন্দরবনসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে গত ১০ বছরে কমপক্ষে ১ হাজার ৬৯টি বাঘ উধাও হয়েছে। অবৈধ বাঘ শিকারিরা ২০০০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১০  সালের এপ্রিলের মধ্যে এ বাঘগুলোকে হত্যা করেছে। বাঘের হাড় ও চামড়ার জন্যই বাঘগুলো শিকার করা হয়।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড ফান্ড ফর নেচার (ডব্লিউডব্লিউএফ) এবং ওয়ার্ল্ড কনজারভেশন ইউনিয়নের (আইইউসিএন) সহযোগিতায় পরিচালিত ব্রিটেনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রাফিক ইন্টারন্যাশনাল বাঘবিষয়ক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে।

২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বিশ্বের ১৩টি দেশে বাঘের অস্তিত্ব রয়েছে। দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, চীন, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, থাইল্যান্ড, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়া।

এর মধ্যে ১১টি দেশ থেকে এ বাঘগুলো উধাও হয়েছে। এ দেশগুলো থেকে বাঘের চামড়া ও কঙ্কাল পাচার হয়। অনেক সময় পুরো বাঘও (জীবিত কিংবা মৃত) পাচার হয়। কারণ বাঘের মাংস, নখ, হাড়, দাঁত, খুলি, পুরুষাঙ্গ ও অন্যান্য অংশেরও কদর রয়েছে। বাঘের শরীরের বিভিন্ন অংশ সাধারণত তিনটি কাজে ব্যবহার করা হয়। এগুলো হচ্ছে ঘর সাজাতে, ওষুধ তৈরিতে এবং সৌভাগ্য বা পৌরষের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করতে।

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে বাঘের বিভিন্ন অংশ দিয়ে তৈরি পণ্যের সরবরাহকারী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এর মধ্যে নেপালকে বাঘ পাচারের জন্য মোক্ষম বলে গণ্য করা হয়। নেপালকে বাঘ পাচারের জন্য ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে অবৈধ বাঘ ব্যবসায়ীরা। তা ছাড়া ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত, মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ড সীমান্ত, মিয়ানমার-চীন সীমান্ত এবং রাশিয়া-চীন সীমান্ত বাঘ পাচারের জন্য কুখ্যাত। দক্ষিণ এশিয়ার বাঘবহুল সংরক্ষিত এলাকার ৫০ কিলোমিটারের মধ্যেও বেআইনিভাবে বাঘ শিকার করা হয় বলে  নিরাপত্তা বাহিনীগুলো জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বাঘকে বাঁচাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং একটি যৌথ বাহিনী তৈরির পরামর্শও দেওয়া হয়।

সূত্র জানিয়েছে, বাঘের অংশ দিয়ে তৈরি পণ্যের অন্যতম বড় বাজার সিঙ্গাপুর। অ্যানিমেল কনসার্নস রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন সোসাইটি (এসিআরইএস) ২০০৯ থেকে ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তদন্ত করে সিঙ্গাপুরের ১৩৪টি গয়নার দোকানের মধ্যে ৫৯টি দোকানে বাঘের অংশ দিয়ে তৈরি গয়নার তথ্য পায়।

শুধু তাই নয়, তদন্ত দল প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তারা সিঙ্গাপুরে ১৫৯টি বাঘের নখ, ৩৩৩টি দাঁত এবং ৩৮টি চামড়ার সন্ধান পেয়েছেন, যা বিক্রির জন্য থাইল্যান্ড, ভারত, শ্রীলঙ্কা, চীন, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, লাওস ও কম্বোডিয়া থেকে অবৈধভাবে আমদানি করা হয়েছে।

 



রাইজিংবিডি/২২ আগস্ট ২০১৫/নূরুজ্জামান/নওশের/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়