ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

কারখানায় সামাজিক সংলাপে প্রকল্প

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪০, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কারখানায় সামাজিক সংলাপে প্রকল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক : চ্যালেঞ্জিং বিশ্বব্যবস্থায় কলকারখানার উৎপাদনবৃদ্ধি, কর্মপরিবেশ সুস্থ, সুন্দর, শান্তিপূর্ণ রাখতে কারখানায় সামাজিক সংলাপের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক।

 

মঙ্গলবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। এ সময় আরো কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেওয়ার বিষয়েও জানান প্রতিমন্ত্রী।

 

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মহাপরিচালক গাই রাইডার গত ৯ ডিসেম্বর চার দিনের সফরে বাংলাদেশে আসেন। মঙ্গলবার তার সফরের শেষ দিন। বাংলাদেশ সফরকালে তিনি যেসব কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন তা জানাতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, চ্যালেঞ্জিং বিশ্বব্যবস্থায় কলকারখানার উৎপাদনবৃদ্ধি, কর্মপরিবেশ সুস্থ, সুন্দর, শান্তিপূর্ণ রাখতে অনেক ক্ষেত্রে সামাজিক সংলাপের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। সামাজিক সংলাপের বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা নিতে সরকার, মালিক-শ্রমিকদের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল ডেনমার্ক ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শন করেছেন। আমাদের দেশের কারখানাতে সামাজিক সংলাপের সফলতা আনতে ‘প্রোমোটিং সোশ্যাল ডায়ালগ অ্যান্ড হারমোনিয়াস ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশনস ইন দ্য বাংলাদেশ রেডিমেড গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রি’ শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ডেনমার্ক ও সুইডেন সরকার এই প্রকল্পে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে। গত ১১ ডিসেম্বর তিনি এবং আইএলও মহাপরিচালক এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।

 

প্রতিমন্ত্রী আরো জানান, আইএলও এবং ইউরোপীয়ার ইউনিয়নের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ‘স্কিলস ২১ প্রজেক্ট’ এর চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় দক্ষতা উন্নয়ন, নিয়োগ যোগ্যতা ও শোভন কাজের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে ৮নং লক্ষ্য এবং সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বর্ণিত টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে তরান্বিত করবে। এই চুক্তি ছাড়াও সোমবার সকালে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে ‘আরএমজি ফেজ-২’ নামে আরো একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

 

চুক্তি অনুযায়ী এ প্রকল্পের মাধ্যমে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিপ্তরের কাজের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কারখানা পরিদর্শন, ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো চিহ্নিত করে আরো ভাল কর্মপরিবেশ তৈরিতে সহায়তার লক্ষ্যে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

 

সংবাদ সম্মেলনে মুজিবুল হক জানান, সফরের প্রথম দিনে তিনি এবং আইএলও মহাপরিচালক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে আইএলও মহাপরিচালক ট্রেড ইউনিয়নের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চান। প্রতিমন্ত্রী তাকে জানান, এখন পর্যন্ত ৮ হাজার ট্রেড ইউনিয়নের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর গত তিন বছরে শুধু গার্মেন্টস সেক্টরেই চারশ’ ট্রেড ইউনিয়নের অুনমোদন দেওয়া হয়েছে।

 

এ ছাড়া সকল গার্মেন্টস কারখানাকে পরিদর্শনের আওতায় আনা হয়েছে। অন্য কারখানাগুলোও পরিদর্শনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শ্রম আইন সংশোধন করা হয়েছে। কারখানা নিরাপত্তা রক্ষায় সংস্কার সমন্বয় সেল-আরসিসি এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলেও জানানো হয়।

 

সংবাদ সম্মেলনে আইএলও মহাপরিচালক গাই রাইডার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ও অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

 

আইএলও শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষের অধিকার রক্ষা ও তাদের কল্যাণের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক সংস্থা। শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নয়নের সব ধরনের সুবিধা দিয়ে থাকে আইএলও।

 

এর আগে গত ১১ ডিসেম্বর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দক্ষতা, নিয়োগ যোগ্যতা ও শোভন কাজ শীর্ষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সম্মেলনের উদ্বোধান করেন। সম্মেলনে শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয় বলেও জানান শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ ডিসেম্বর ২০১৬/আরিফ সাওন/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়