ওয়ালটন সেলফি কর্নারে বাড়তি বিনোদন
আরিফ সাওন : সেলফি নেশায় আসক্ত এখন অনেকেই। একটু ভালো ব্যাকগ্রাউন্ড, ভালো জায়গা পেলে বা বিভিন্ন মেলা কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে গেলে অনেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন সেলফি তুলতে।
নিজে কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে সেই মুহূর্তটা স্মৃতি করে রাখতে ফ্রেমবন্দি হতে দেরি করেন না সেলফি আসক্তরা। বিশেষ করে, উঠতি বয়সি তরুণ-তরুণীরা সেলফিতে বেশি আসক্ত।
বাড়তি বিনোদন আর স্মৃতি ধরে রাখার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে এবারের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ওয়ালটন করেছে সেলফি কর্নার। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের বিনোদনে সঙ্গী হতে একমাত্র ওয়ালটনই করেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর আকর্ষণীয় সেলফি কর্নার।
বাণিজ্য মেলায় ওয়ালটন মেগা প্যাভিলিয়নে প্রবেশ ফটকের বাইরে হাতে বাম পাশে লিফটের কাছে করা হয়েছে ওয়ালটন সেলফি কর্নার। বাণিজ্য মেলায় পাঁচ বছর ধরে ওয়ালটনের প্যাভিলিয়নে লিফট স্থাপন করা হচ্ছে। আর এ বছরই বিক্রির জন্য প্রথম লিফট প্রদর্শনী করছে এই স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেলফিপ্রেমীদের পদচারণায় মুখর থাকে ওয়ালটন সেলফি কর্নার। শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী, মধ্যবয়সি এমনকি বৃদ্ধদেরও সেলফি তুলতে দেখা যায়। কারো সঙ্গে স্ত্রী, কারো সঙ্গে প্রেমিকা, কেউ কেউ বন্ধুদের সঙ্গে আবার কেউ কেউ বাবা-মা ও স্বজনদের সঙ্গে সেলফি তুলছেন। রীতিমতো লাইন ধরে দাঁড়াতে হচ্ছে। সেলফির তোলার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হননি বিদেশিরাও।
কয়েকজন যখন সেলফি তুলতে থাকেন, তখন অন্যদের অপেক্ষা করতে হয়। একদলের তোলা শেষ হলে সিরিয়াল অনুযায়ী আরেক দল সেলফি তুলতে শুরু করেন। কেউ কেনাকাটার আগে আবার কেউ কেটাকাটার পরে পণ্য নিয়ে সেলফি তোলেন। অনেকের মুখের অবয়ব আর পুলকিত হাসিতে সেলফি তোলার ভিন্ন ভিন্ন স্টাইল দেখে অপেক্ষায় থাকা সেলফিপ্রেমীরাও অনেক সময় মনের অজান্তে না হেসে পারেন না।
সেলফি কর্নারে লোকজন থাকছেন। কখনোই ফাঁকা হচ্ছে না। দুজন নারী ও পুরুষ দাঁড়িয়ে ছিলেন সেলফি তোলার জন্য। কিন্তু সিরিয়াল না পেয়ে বিরক্ত হয়ে ওই নারী তার সঙ্গীকে বললেন, ‘চলো এখন যাই। এই ভিড় সহজে কমবে না। পরে আসব।’
তাদের কাছাকাছি কয়েকজন তরুণী দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাদের বিভিন্ন কথাবর্তা আর হাসাহাসি-আড্ডায় মুখরিত সেলফি কর্নার। তারা কিন্তু সেলফি তুলে তবেই যাবেন।
ঠিক সে মুহূর্তে আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী শিহাবুল ইসলাম রাকিব ও তার বন্ধুদের দেখা যায় ওয়ালটন সেলফি কর্নারে সেলফি তুলতে। সেলফি তোলার পর, কার ছবি কেমন হয়েছে, তাও পরখ করে দেখছিলেন সবাই।
ছবি দেখতে দেখতে শিহাবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘ওয়ালটন যদি সেলফি তোলায় পুরস্কারের ব্যবস্থা করতো, তাহলে প্রথম পুরস্কারটা আমিই পেতাম। ইস, কপাল খারাপ যে, ওয়ালটন সেলফি তোলায় পুরস্কারের কোনো অপশন রাখেনি ।’ তার এমন কথায় হো হো করে হেসে ওঠে বন্ধুরা। বন্ধুরা হাসলেও তার আত্মবিশ্বাস ছিল যে, তার সেলফি তোলাই সবচেয়ে ভালো হয়েছে।
কথা হয় রাকিবের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বন্ধুরা মিলে মেলায় এসেছি আনন্দ করতে, ছবি তুলতে। আমরা সেলফি তোলার জন্য ভালো লোকেশন খুঁজছিলাম। এখানে এসে দেখি ওয়ালটনের সেলফি কর্নার। ওয়ালটনের এই সেলফি কর্নার আমাদের বিনোদন অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। ওয়ালটন মেলায় পণ্য বিক্রির বিষয়টিই যে শুধু মাথায় রেখেছে তা নয়, সেলফি কর্নারই বলে দেয় তারা মেলায় আসা ক্রেতা-দর্শনার্থীদের বিনোদনের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়েছে। এজন্য ওয়ালটন সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। ধন্যবাদ ওয়ালটনকে। দেশীয় পণ্য কিনে আমরা ধন্য ।’
রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রিন্স এসেছেন বাণিজ্য মেলায়। তার সঙ্গে ছিলেন বন্ধু বোরহান। দুই বন্ধুকে বিভিন্ন ভঙ্গিতে ওয়ালটন সেলফি কর্নারে সেলফি তুলতে দেখা যায়। বোরহান বলেন, ‘আমি সাধারণত সেলফি তুলি না। কিন্তু এখানে দেখলাম চমৎকার একটি সেলফি জোন করেছে ওয়ালটন। যেখানে রয়েছে ফুলের বাগান। রয়েছে বসারও সুব্যবস্থা। তাই বসে, দাঁড়িয়ে ও হেলান দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকগ্রাউন্ড রেখে সেলফি তুলেছি।’
প্রিন্স বলেন, ‘সব মিলিয়ে লোকেশনটা চমৎকার।’
দিদারুল আলম থাকেন মালয়েশিয়ায়। দেশে এসেছেন কিছুদিনের জন্য। তার সঙ্গে ছিল সুরাইয়া আক্তার লাবনীসহ আরো পাঁচ বন্ধু। তারা বলেন, ‘সেলফি তোলার জন্য জায়গাটা খুবই উপযোগী। এমন চমৎকার সেলফি কর্নার করার জন্য ওয়ালটনকে ধন্যবাদ।’
ওয়ালটনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (পিআর অ্যান্ড মিডিয়া) হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘মানুষ এখন এতই কর্মচঞ্চল যে ব্যস্ততার কারণে হাসতে ভুলে গেছে। আমরা মনে করি যিনি খুব বেশি হাসেন তার মনটা খুব ভালো থাকে। চিকিৎসকরাও বলেন, হাসলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। যান্ত্রিকতার এই ইট-কাঠ-পাথরে ঘেরা ঢাকা শহরে চিত্তবিনোদনের বড়ই অভাব। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা হচ্ছে একটি মিলনমেলা। এই মিলনমেলায় সত্যিকার অর্থে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের সামান্যতম হলেও বিনোদন দিতে ওয়ালটন সেলফি কর্নার অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের বিনোদনে ভিন্ন মাত্রা যোগ করার বিষয়টি মাথায় রেখেই ওয়ালটন সেলফি কর্নার করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে ১ জানুয়ারি শুরু হওয়া এ মেলা চলবে এক মাস। বাণিজ্য মেলার প্রধান গেট দিয়ে ঢোকার পরই চোখে পড়বে ওয়ালটন মেগা প্যাভিলিয়ন।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ জানুয়ারি ২০১৭/আরিফ সাওন/এসএন/সাইফুল/রফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন