ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সালমান শাহর মৃত্যুর রহস্য তদন্তে পিবিআই

এমএ খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৬, ৭ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সালমান শাহর মৃত্যুর রহস্য তদন্তে পিবিআই

নিজস্ব প্রতিবেদক : চিত্রনায়ক সালমান শাহকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

 

ঢাকা মহানগর হাকিম লস্কর সোহেল রানা আলোচিত এ মামলা পিবিআইকে দিয়ে পুনরায় তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

 

মঙ্গলবার আদালতের এই আদেশ হলেও তা জানা গেছে বুধবার।

 

এ সম্পর্কে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরীর আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত সালমান শাহ হত্যা মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা সঠিক তদন্ত আশা করছি। আশা করছি, এবার আমরা ন্যায়বিচার পাব। দেশবাসী, সালমান শাহর ভক্তরা অধীর আগ্রহে বিচারের অপেক্ষায় আছে।’

 

নীলা চৌধুরী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সালমান শাহ হত্যা মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দিয়েছেন আদালত। দেখা যাক কি হয়। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহ কাটছে না। বর্তমান সরকারের সময়ে সুষ্ঠু তদন্ত হচ্ছে। আমার ছেলে হত্যার বিচার যদি শেখ হাসিনার সময়ে না হয় তাহলে আর জীবনে হবে না।’

 

তিনি দাবি করেন, আমার ছেলে আত্মহত্যা করেনি। আত্মহত্যা করবে কেন? তাকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

 

প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহকে ইস্কাটন রোডের বাসায় নিজ কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে প্রথমে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা সালমান শাহকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

ওই ঘটনায় সালমান শাহর বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। ওই মামলা প্রথমে রমনা থানা পুলিশ, পরে ডিবি পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবির তদন্ত করেন। তদন্তকালে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সালমান শাহর লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। প্রতিবেদনে আত্মহত্যার কথা উল্লেখ করা হয়। পরে সালমান শাহর পরিবার ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আপত্তি জানালে সালমান শাহর লাশ কবর থেকে তুলে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফের ময়নাতদন্ত করা হয়। এ প্রতিবেদনে বলা হয়, লাশ অত্যধিক পচে যাওয়ার কারণে মৃত্যুর কারণ নির্নয় কারা সম্ভব হয়নি।

 

১৯৯৭ সালের ২৭ জুলাই অপমৃত্যুর মামলা এবং ক্যান্টনমেন্ট থানার মামলা একত্রে তদন্তের জন্য সিআইডির ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়। সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার খালেকুজ্জামান প্রায় সাড়ে ৩ মাস তদন্তের পর ১৯৯৭ সালের ২ নভেম্বর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, বাদীপক্ষ মামলায় পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে এবং জনৈক রেজভী হত্যাকাণ্ডে নিজে জড়িত ও এতে জড়িত অন্যদের নাম প্রকাশ করে। পরে জেলখানায় রেজভীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, সালমান শাহর মৃত্যুর বিষয়ে সে কিছুই জানে না। এতে প্রমাণিত হয়, তার স্বীকারোক্তি স্বেচ্ছায় প্রদত্ত ছিল না। মূলত সালমান শাহর সঙ্গে নায়িকা শাবনূরের অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠতার কারণে তার স্ত্রীর সঙ্গে দাম্পত্য কলহের সূচনা হয়। দাম্পত্য কলহের কারণেই সে আত্মহত্যা করে। যা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সমর্থন করে। তাই সালমান শাহর মৃত্যু আত্মহত্যাই।

 

এই আদেশের বিরুদ্ধে নারাজি দেন সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী। এর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি র‌্যাবকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেন ঢাকার সিএমএম আদালত। কিন্তু ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা মহানগরের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করেন। শুনানি শেষে গত ২৫ আগস্ট র‌্যাবকে তদন্ত করার বিষয়ে সিএমএমের আদেশ বাতিল করেন ঢাকার বিশেষ জজ-৬। একই সঙ্গে আদালত বিচার বিভাগীয় প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে সালমানের মায়ের নারাজি আবেদন পুনঃশুনানি করতে ঢাকার সিএমএম আদালতকে নির্দেশ দেন।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ ডিসেম্বর ২০১৬/এমএ খান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়