ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

কনা হত্যা : মামলা তুলে নিতে আসামিদের চাপ

তানজিমুল হক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৫৯, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কনা হত্যা : মামলা তুলে নিতে আসামিদের চাপ

সাদিয়া আক্তার কনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : সাদিয়া আক্তার কনা হত্যার এক বছর পূর্তি হয়েছে গত ২৯ আগস্ট।

গত বছরের ওই দিন দিবাগত রাতে কনাকে তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ভুলু মিয়া (২৮)।

ভুলু মিয়ার সঙ্গে কনার চার বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। হত্যার এক বছর পূর্ণ হলেও বেশির ভাগ আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। পুলিশ তাদের গ্রেফতারই করতে পারেনি।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহায়তায় আসামিপক্ষ মামলার মীমাংসার জন্য বারবার চাপ প্রয়োগ করছে।

কনার বাবা আজিজুল হক ও মা মতিয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘হত্যার পর থেকেই আসামিপক্ষ মামলা তুলে নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় চাপ প্রয়োগ করছে। করছে ভয়ভীতি প্রদর্শন। কিন্তু আমরা কখনো বিচারের পথ থেকে সরে আসিনি। আমার আদরের ধনকে তারা মেরেছে, তাদের সর্বোচ্চ সাজা হোক, সব সময় এই দাবি করি।’

আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে তার কলেজের সহপাঠীরা, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ধারাবাহিক আন্দোলন করে আসছে।

সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে শ্বাসরোধ করে গলা টিপে হত্যার কথা বলা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও এই প্রতিবেদন ধরেই অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আজিজুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। এখন আর আমাদের করার কিছু নাই। বিজ্ঞ আদালত যা করবেন সেটাই। বিজ্ঞ আদালতের সামনে বাদী ও বিবাদীরা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। এরপর আদালত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, সুরতহাল প্রতিবেদন ও বাদী-বিবাদীদের বক্তব্যের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালত যা রায় দেবেন, তা-ই মেনে নিতে হবে।’

তদন্ত কর্মকর্তা প্রদত্ত অভিযোত্রপত্রে দণ্ডবিধি ৩০২/২০১/৪১৯/৩৪ ধারার অপরাধে ভুলু মিয়া (২৮), দেলোয়ার মিয়া (২২), বানী (৩৫), বাদল (২৫), ময়না বেগম (৩০), সেরেকুল (৫০), আবদুল হাই প্রামাণিকের (৫০) বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু কনার হত্যার ১ নম্বর আসামি ভুলু মিয়াকে আটক করা হয়েছে। আর বাকিরা সবাই পলাতক রয়েছেন। পুলিশ তাদের এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি।

বাদীপক্ষের আইনজীবী শহিদুল্লাহ সরকার বলেন, চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করা হয়েছে। চার্জশিটে কয়েকজন আসামির নাম বাদ গেছে। যাদের নামে ওয়ারেন্ট (গ্রেফতারি পরোয়ানা) হয়েছে পুলিশ তাদের গ্রেফতার না করলে সে ক্ষেত্রে মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দেবেন আদালত। যদি তা না হয়, সে ক্ষেত্রে পুলিশ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হবে। এরপরও যদি আসামিদের না পাওয়া যায়,  তবে তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য চলবে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৯ আগস্ট দিবাগত রাত ২টার সময় কনার বাড়ি মতিহার থানার নওদাপাড়া থেকে কৌশলে ডেকে নিয়ে গিয়ে একই থানার গুয়াবাসিনা গ্রামের ভুলু মাস্টার তার বাড়িতে কয়েকজন সহযোগীর সহায়তায় গলা টিপে হত্যা করে কনাকে। কনাকে প্রাইভেট পড়াতেন ভুলু মিয়া। প্রাইভেট পড়ানো অবস্থায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কনা চৌমুহনীর জিয়াউর রহমান কলেজের উচ্চমাধ্যমিক প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

 

 

 


রাইজিংবিডি/রাজশাহী/৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫/তানজিমুল হক/রণজিৎ/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়