ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ক্ষমতায় গেলে ক্রসফায়ার-গুম বন্ধ করবে বিএনপি

রেজা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:১৬, ২৬ জুন ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ক্ষমতায় গেলে ক্রসফায়ার-গুম বন্ধ করবে বিএনপি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি গুম সংস্কৃতি ও বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ।

 

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহারে বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রক্ষা করেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

 

রোববার এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি গুম হবে না, কাউকে বিনা বিচারে আটক রাখা হবে না, বিচার বহির্ভুত হত্যার শিকার হতে হবে না। এটা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে, যদি আইনের শাসনে বিশ্বাস করি। যদি করতে না পারি, জনগণ ধিক্কার দেবে।’

 

রোববার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতিসংঘ ঘোষিত ‘আন্তর্জাতিক নির্যাতন বিরোধী দিবস’ উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি।

 

মওদুদ আহমেদ জানান, দেশে একদিকে ক্রসফায়ার, অন্যদিকে জঙ্গি ও উগ্রবাদের উত্থান হচ্ছে। গুম, বিচার বহির্ভুত হত্যা, জঙ্গি ও উগ্রবাদের অবসান ঘটাতে হলে দেশে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরেপক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

 

জবাবদিহিমূলক ও জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার না থাকার কারণে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেন মওদুদ।

 

‘দেশে কোনো জাবাবদিহিমূলক ও জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার নেই। যে কারণে নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সত্যিকার অর্থে দেশের কোনো নির্বাচিত সরকার নেই। সেই কারণে জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের উত্থান হচ্ছে।’

 

জঙ্গি দমনে সরকার জিরো টলারেন্সের নীতির কথা বললেও কার্যত কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এই নীতি নির্ধারক।

 

মওদুদ বলেন, ‘এই যে ব্লগার, মসজিদের মুয়াজ্জিন, মন্দিরের পুরোহিত, বৌদ্ধভিক্ষু মারা গেলেন, তাহলে কিসের জিরো টলারেন্সের কথা বলেন? সরকার একটি হত্যাকাণ্ডেরও বিচার শুরু করতে পারেনি।’

 

তিনি বলেন, ‘বিএনপি উগ্র ও জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দেয় না, ঘৃণা করে। কিন্তু মিথ্যাচার করে, অপপ্রচার করে বিএনপিকে ডানপন্থি দল হিসেবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। কিন্তু এটি সত্য নয়।’

 

ছিনতাই-চাঁদাবাজি রোধে প্রয়োজনে গুলি-পুলিশের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘একজন পুলিশ কি এটা বলতে পারেন? দেশ কে চালাচ্ছে। দেশে কি কোনো সরকার আছে। জবাবদিহি নেই বলেই এই ধরনের কথা বলা হচ্ছে।’

 

আন্তর্জাতিক নির্যাতন বিরোধী দিবসের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘প্রতিটি গ্রামে এই দিনটি পালিত হওয়া উচিত। কারণ আজ একেবারে তৃনমূল পর্যায়েও নির্যাতন চলছে। বিষয়টি নিত্যনৈমিতত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

 

মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘দেশের মানুষের ভেতর যে ক্ষোভ রয়েছে এর প্রকাশ ঘটানো যাচ্ছে না। এটি করতে হলে সুসংগঠিত রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে গড়ে তুলতে হবে। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে অব্যাহত রাখতে হবে।’

 

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে ও দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আইনজীবী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।

 

এছাড়া গুম হওয়ার পর ফিরে আসা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান খোকন তালুকদার, গুম হওয়া নিজাম উদ্দিন মুন্নার বাবা সামসুউদ্দিন, সোহেলের স্ত্রী সাম্মী আখতার, সাজেদুল ইসলাম সুমনের বড় বোন আঁখি, পারভেজ হোসেনের মেয়ে হৃদি বক্তব্য দেন।

 

আলোচনা সভায় আরো ছিলেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সাংগঠনিক সহসম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, দপ্তর সহসম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা প্রমুখ।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ জুন ২০১৬/রেজা/এসএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়