ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

পচা গম আমদানি, ক্ষতিপূরণের সুপারিশ সংসদীয় স্থায়ী কমিটির

এনআর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৪৪, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পচা গম আমদানি, ক্ষতিপূরণের সুপারিশ সংসদীয় স্থায়ী কমিটির

ফাইল ফটো

সংসদ প্রতিবেদক : বিদেশ থেকে আমদানিকৃত অনুপযোগী গম যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই খালাস করা হয়েছে। আবার ৬০ ভাগ গম খালাস করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ৯০ শতাংশ মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে। এতে সরকারের প্রায় শত কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটি ক্ষতিপূরণের অর্থ আদায়ের পাশাপাশি দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত বছরের ২৪ মার্চ খাদ্য মন্ত্রণালয় ঘোষিত দরপত্রের মাধ্যমে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ইমপেক্স কনসালটেন্ট লিমিটেড ফ্রান্স থেকে ৫২ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন গম আমদানি করে। ওই গম নিয়ে এমভি ট্রান্স স্প্রিং নামের একটি জাহাজ ১০ মে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায়। সেখানে ৩১ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন গম খালাস করা হয়। বাকি গম খালাস করতে জাহাজটি মংলা বন্দরে যায়। সেখানে গম খালাসে তদারকি কমিটি গুণগত মান পরীক্ষা করে খাবার অনুপযোগী বলে প্রমাণ পায়। ফলে ওই গম খালাস বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এর আগেই ওই গমের ৯০ শতাংশ মূল্য পরিশোধ করা হয়।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হওয়া গম দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। সেসব স্থানেও এই গম নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরে মংলাবন্দর থেকে পাওয়া প্রতিবেদন নিয়ে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পায়।

 

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমদানিতে সরকারের প্রায় শত কোটি টাকা ক্ষতির বিষয়টি তুলে ধরে বলা হয়, গুণগত মান যাচাই করার পর আমদানিকৃত গমের টাকা পরিশোধের নিয়ম থাকলেও এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। এতে বড় ধরণের আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। এ জন্য ইমপেক্স গ্রুপের স্বত্ত্বাধিকারী মো. সহিদ জাহাঙ্গীর ও নি¤œমানের গম সরবরাহে সহযোগিতাকারী প্রাক্তন মহাপরিচালক মো. সারোয়ার খান, বর্তমান মহাপরিচালক ফয়েজ আহমেদ, পরিচালক (সংগ্রহ) এলাহী দাদ খানসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া দুদকের মাধ্যমে তদন্তের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

 

এনএসআইর সুপারিশের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। কমিটির পক্ষ থেকে গম আমদানি নিয়ে একের পর এক কেলেঙ্কারীর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও অনিয়মের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। এ জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের অর্থ আদায়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।

 

এদিকে পচা গম নিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাধিক সংসদ সদস্য। তারা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে এই গম নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ অধিবেশনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, সরকার এ-সংক্রান্ত নীতিমালা পরিবর্তন করতে যাচ্ছে। আগামীতে গম বা চালের পরিবর্তে নগদ অর্থ প্রদান করা হবে।

 

উল্লেখ্য, খাদ্য অধিদপ্তর ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ইমপেক্স গ্রুপের মাধ্যমে আমদানি করা গম ছাড়াও চারটি প্যাকেজে গম আমদানি করে। ব্রাজিল থেকে আমদানি করা ওই চার প্যাকেজের মাধ্যমে ২ লাখ ৫ হাজার ১২৮ মেট্রিকটন গম নিম্নমানের হওয়ায় সারা দেশে আলোড়ন তৈরি হয়। যার ফলে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও সরকার বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এনআর/রাসেল পারভেজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়