ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

গ্রন্থমেলায় বাজছে ভাঙনের সুর

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৪, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গ্রন্থমেলায় বাজছে ভাঙনের সুর

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেখতে দেখতে একেবারে শেষ প্রান্তে এসে গেছে বাঙালির প্রাণের অমর একুশে গ্রন্থমেলা। সোমবার এ মেলা ভেঙে যাবে। এখন মেলায় বাজছে ভাঙনের সুর। বিদায় জানাতে শুরু করেছে গ্রন্থমেলায় আসা লেখক-পাঠক, প্রকাশক-বিক্রেতা, সাহিত্যিক-বইপ্রেমীরা।

 

মেলার একেবারে শেষপ্রান্তে এসে তাই জমে ওঠেছে বেচাকেনা। চলছে নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি ছাড়ে বই বিক্রি। পাঠক ও বইপ্রেমীরাও আসছেন কেবলই বই কিনতে।

 

শনিবার মেলার ২৭তম দিনে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মেলার শুরুর চেয়ে শেষদিকেই বেশি খুশি প্রকাশক ও বিক্রেতারা। বাংলা একাডেমির তথ্যকেন্দ্র থেকে জানা যায়, এদিন মেলায় নতুন বই এসেছে ১৭৯টি। এ পর্যন্ত মেলায় আসা মোট বইয়ের সংখ্যা ৩ হাজার ২১২ টি।

 

শনিবারও মেলার চিত্র ছিল অন্যসব দিনের মতোই। সকাল সাড়ে ১০টায় মেলার প্রবেশদ্বার উন্মুক্ত হওয়ার আগে থেকেই ছিল মেলার দুইপাশের প্রবেশপথ ও এর আশপাশে ভিড়। মেলার দ্বার উন্মুক্ত হওয়ার পর ভিড় বাড়তে থাকে। সকালের দিকে শিশুরাই বেশি এসেছে বাবা মায়ের হাত ধরে। দুপুরের দিকে মেলায় লোক সমাগম কিছুটা কমে গেলেও সন্ধ্যার আগেই মেলা তার পূর্ণরূপ লাভ করে। প্রথম দিকের ভিড়ের চেয়ে শেষের দিকের মেলায় ভিড়ের পার্থক্য হলো এখন যারা মেলায় আসেন তারা শুধু আড্ডা দেন না। আড্ডার সঙ্গে সঙ্গে প্রচুর বইও কেনেন তারা। মেলাফেরত বইপ্রেমীদের প্রত্যেককেই ফিরতে দেখা গেছে এক বা একাধিক বইয়ের প্যাকেট হাতে।

 

মালিবাগ থেকে আসা কবির জানান, তিনি বেশ কয়েকটি বই কিনেছেন। আগেও মেলায় এসেছেন। কিন্তু বই কেনেন নি। আর হয়তো আসা হবে না। তাই এদিন পছন্দের বই কিনে নিয়ে যান।

 

রাজধানীর উত্তরা থেকে বান্ধবী রোমানা ইয়াসমিন লাজকে নিয়ে মেলায় আসে লোকমান হোসেন সবুজ। সবুজ জানান, তিনি মেলায় এসে হুমায়ূন আহমেদের চারটি বই কিনেছেন। এছাড়া একটি নজরুল সমগ্রও কিনেছেন। তিনি জানান, মেলার শেষদিকে বিক্রেতারা দাম নিয়ে খুব একটা ঝামেলা করেন না। কিছুটা কম দামে হলেও বই বিক্রি করছেন। নজরুল সমগ্র কেনায় তিনি ৩০ ভাগ ছাড় পেয়েছেন।

 

মেলার ভেতরে বইয়ের বেচাকেনা বেশি থাকলেও মেলার সর্বত্রই লক্ষ্য করা গেছে বিদায়ের পালা। সোমবার ভেঙে যাবে বাঙালির আবেগের ও প্রাণের এই মিলনমেলা। আবারো সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করবে একটি বছরের জন্য। মেলার বিভিন্ন স্টলে, নজরুল মঞ্চে, মূলমঞ্চসহ মেলাজুড়েই ছিল বিদায়ের আবেশ। এক মাসের জন্য সাজানো বিভিন্ন নকশা ও আল্পনাতেও দেখা গেছে শেষ হয়ে যাওয়ার মৌনতা। বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিভিন্ন জায়গায় লাগানো ফুলের গাছের তাজা ফুলগুলো শুকিয়ে গেছে। এর পাশাপাশি অনেককেই এবারের মতো মেলা থেকে বিদায় শুভেচ্ছা জানাতে শোনা যায়।

 

শনিবার ছিল এবারের গ্রন্থমেলার শেষ ছুটির দিন। এদিন বাংলা একাডেমি ঘোষিত শিশু প্রহর না হলেও কচিকাঁচার আসর জমেছিল যেনো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সকাল থেকে দুপুর যেনো ছিল শিশুদের রাজ্য। বাবা-মায়ের হাত ধরে শিশুদের পদচারণায় মুখরিত ছিল মেলা। 

 

রোববারের আয়োজন : রোববার গ্রন্থমেলা শুরু হবে দুপুর ২টায় এবং শেষ হবে রাত ৮টায়। বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন মোস্তফা জব্বার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্যামসুন্দর সিকদার এবং তারিক সুজাত। সভাপতিত্ব করবেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/আরিফ সাওন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়