ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

চাঁদের বুকে তাদের পদচিহ্ন

রাসেল পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ১৮ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চাঁদের বুকে তাদের পদচিহ্ন

রাসেল পারভেজ : গান, কবিতা, গল্প, ছড়ায় চাঁদের বন্দনা-বর্ণনার শেষ নেই। কত কত মানুষ কল্পনার ডানায় উড়ে চাঁদে পাড়ি জমিয়েছেন, তার হিসাব কে রাখে। মানুষের সেই কল্পনাকে সংকল্প করে যারা সত্যি সত্যি চাঁদের দেশ থেকে ঘুরে এসেছেন, তাদের সংখ্যা তিন আঙুলের করের সমান- মাত্র ১২ জন।

এই ১২ জনের মধ্যে সবার শেষে যিনি চাঁদের বুকে পা রাখেন, জগদ্বিখ্যাত নাসার সেই নভোচারী জেন সারনান সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বিদায়ের পর চাঁদে গমনকারী দুঃসাহসিক নভোচারীদের মধ্যে এখন বেঁচে আছেন ছয়জন। এ পর্যন্ত চাঁদের মাটিতে পা রাখা প্রয়াত ও জীবিত ১২ জনকে আরেকবার জেনে নেওয়া যাক।


নিল আর্মস্ট্রং

হাজার বছর মানুষের চাঁদে যাওয়ার স্বপ্নকে যিনি বাস্তবে রূপ দেন তিনি হলেন নিল আর্মস্ট্রং। তিনিই প্রথম চাঁদের মাটিতে পা রাখেন, চাঁদের বুকে এঁকে দেন পদচিহ্ন। পৃথিবীর বাইরে কোনো গ্রহ-উপগ্রহের পৃষ্ঠে মানুষের অবতরণের ইতিহাস সৃষ্টি হয় আর্মস্ট্রংয়ের মাধ্যমে। তার চাঁদে অবতরণের ঐতিহাসিক সেই দিনটি ছিল ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই। চন্দ্রবিজয়ের ওপর আর্মস্ট্রংয়ের সেরা উক্তি- ‘একজন মানুষের জন্য এটি ক্ষুদ্র পদক্ষেপ, কিন্তু মানবজাতির জন্য বিরাট পদক্ষেপ।’ ২০১২ সালের ২৫ আগস্ট তিনি মারা যান।

বাজ অলড্রিন


               তরুণ অলড্রিন (বাঁয়ে) ও ২০১৬ সালে লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে অলড্রিন

অ্যাপোলো-১১ নভোযানে নিল আর্মস্ট্রংয়ের সঙ্গী ছিলেন বাজ অলড্রিন। বাবা-মায়ের দেওয়া নাম এডুইন ইউজেন অলড্রিন জুনিয়র। পরে তার নাম হয় বাজ অলড্রিন। তিনিও ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই চাঁদের মাটিতে পা রাখেন। অলড্রিনের বয়স এখন ৮৬ বছর। ২০১৬ সালে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লেও সে ধাক্কা কাটিয়ে ওঠেন তিনি।

চার্লস কনরাড ও অ্যালান বিন

চন্দ্রপৃষ্ঠে হাঁটা তৃতীয় নভোচারী হলেন চার্লস কনরাড (ছবিতে বাঁয়ে)। অ্যাপোলো-১২ নভোযানে চাঁদে গমনকারী চার্লসের সঙ্গী ছিলেন অ্যালান বিন (ছবিতে ডানে)। ১৯৬৯ সালের নভেম্বর মাসে কনরাডের পর চতুর্থ ব্যক্তি হিসেবে চাঁদে পা রাখেন অ্যালান বিন। ১৯৯৯ সালে ৬৯ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়ায় মারা যান কনরাড। আর ১৯৮১ সালে নাসা থেকে অবসর নেওয়া পর ছবি আঁকাতে মন দেন অ্যালান বিন। তার বয়স এখন ৮৪ বছর।

অ্যালান শেপার্ড ও এডগার মিচেল

চাঁদের মাটিতে পা রাখা পঞ্চম ও ষষ্ঠ ব্যক্তি হলেন যথাক্রমে অ্যালান শেপার্ড (ছবিতে মধ্যে) ও এডগার মিচেল (ছবিতে ডানে)। অ্যাপোলো-১৪ নভোযানে ১৯৭১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তারা দুজন চাঁদে পৌঁছান। এটি ছিল তৃতীয় চন্দ্রবিজয় মিশন। এই মিশনের কমান্ডার ছিলেন স্টুয়ার্ট রোসা (ছবিতে বাঁয়ে)। কিন্তু তিনি চাঁদের মাটিতে পা রাখেননি। সফল চন্দ্র মিশনে গেছেন, কিন্তু চাঁদে পা রাখেননি, এমন ২৪ জনের মধ্যে একজন হলেন রোসা। ২০১৬ সালের শুরুতে মিচেল এবং ১৯৮৮ সালে শেপার্ড মারা যান। চাঁদে গমনকারীদের মধ্যে শেপার্ড সবচেয়ে বেশি বয়সি নভোচারী।

ডেভিড স্কট ও জেমস ইরউইন

চাঁদে হাঁটা সপ্তম ও অষ্টম ব্যক্তি হলেন যথাক্রমে ডেভিড স্কট (ছবিতে ডানে) ও জেমস ইরউইন (ছবিতে বাঁয়ে)। অ্যাপোলো-১৫ মিশনে ১৯৭১ সালের ১ আগস্ট তারা চাঁদের বুকে পা রাখেন। ১৯৯১ সালে ইরউইন মারা যান। ডেভিড স্কট বেঁচে আছেন। তার বয়স এখন ৭১ বছর। চাঁদে হাঁটার সময়ে স্কটের হাতে একটি ঘড়ি ছিল, যা ২০১৫ সালে এক নিলামে ১০ লাখ ৬২ হাজার ডলারে বিক্রি হয়।

জন ইয়ং ও চার্লস ডাক

চাঁদের বুকে পা রাখা নবম ব্যক্তি হলেন জন ইয়ং (ছবিতে মধ্যে)। এই মিশনে তার সঙ্গী চার্লস ডাক (ছবিতে ডানে) দশম ব্যক্তি হিসেবে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করেন। অ্যাপোলো-১৬ নভোযানে গমনকারী তারা দুজন ২১ এপ্রিল ১৯৭২ সালে চন্দ্রপৃষ্ঠে নামেন। চাঁদে অবতরণকারীদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ হলেন চার্লস ডাক, তখন তার বয়স ছিল ৩৬ বছর। তাদের মিশনে ছিলেন থমাস মিটিংলি (ছবিতে বাঁয়ে)। তবে তিনি চাঁদে নামেননি। অ্যাপোলো-১৬ মিশনের তিন নভোচারীই বেঁচে আছেন।

হ্যারিসন স্কমিট ও জেন সারনান

যে ১২ নভোচারী চাঁদের বুকে পদচিহ্ন রেখে এসেছেন, তাদের মধ্যে একাদশ ও দ্বাদশতম হলেন হ্যারিসন স্কমিট (ছবিতে ডানে) ও জেন সারনান (ছবিতে বাঁয়ে)। ১৯৭২ সালে আপোলো-১৭ মিশনে তারা দুজন চাঁদে পৌঁছান এবং ১২ ডিসেম্বর চাঁদের মাটিতে পা রাখেন। একই মিশনে তারা দুবার চাঁদে নামেন। দুই দিন আগে ১৬ জানুয়ারি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই মিশনের জেন সারনান।

 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ জানুয়ারি ২০১৭/রাসেল পারভেজ/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়