ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ঐতিহ্যে দাঁড়িয়ে জগন্নাথপুর জমিদার বাড়ি

মামুন চৌধুরী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৯, ২২ জুন ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঐতিহ্যে দাঁড়িয়ে জগন্নাথপুর জমিদার বাড়ি

জগন্নাথপুরের জমিদারবাড়ির অতিথিশালা (ছবি : মামুন)

‘পুঁতি পাঠ হতো। হতো পালা গান। বাদ যেত না কোনো উৎসব। পূঁজা হত নিয়মিত। কেউ এসে না খেয়ে ফিরে যেতে পারত না। হত দরিদ্রদের জন্য সহায়তার হাত সর্বদা খোলা ছিল এখানে।’

 

প্রতিবেদকের কাছে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার জগন্নাথপুর জমিদার বাড়ির ঐতিহ্যকে এভাবে তুলে ধরলেন তৎকালীন জমিদারদের বংশধর শ্রী সত্যব্রত পাল চৌধুরী।

 

আলাপকালে তিনি জানান, প্রায় ৫০০ বছর পূর্বে এ বাড়িতে জমিদারদের বসবাস ছিল। সুদিয়াখলা, নিজগাঁও, তালুগড়াই, কাজীরগাঁও, গোড়ামী, সাদিপুর, কলাপাড়া, মহলুলসুনাম, জগন্নাথপুর, বিরামচরসহ বিভিন্ন এলাকা নিয়ে কানুরাম পাল চৌধুরী জমিদারী শুরু করেন।

জগন্নাথপুরের জমিদারদের দান করা জমিতে নির্মিত রাধাকৃষ্ণ মন্দির (ছবি : মামুন)

 

তিনি সততার সঙ্গে জমিদারী পরিচালনা করেন। তার পরে জমিদারী পরিচালনা করে গেছেন দূর্গাচরণ পাল চৌধুরী, শরৎ পাল চৌধুরী, কৌলাস পাল চৌধুরী, সুরেষ পাল চৌধুরী, বিনোদ পাল চৌধুরী, হরেন্দ্র পাল চৌধুরী, দেবেন্দ্র পাল চৌধুরী ও মহেন্দ্র পাল চৌধুরী।

 

পরিদর্শনকালে দেখাগেছে এখনো জমিদারী আমলের নির্মিত এ বাড়ির অতিথিশালাটি দণ্ডায়মান আছে। তাদের দানকৃত জমিতে গড়ে উঠেছে রাধাকৃঞ্চ মন্দির। রয়েছে জমিদারী আমলের পুকুর।

 

শ্রী সত্যব্রত পাল চৌধুরী আরো জানান, এ বাড়ির জমিদারেরা শান্তপ্রিয়ভাবে জমিদারী পরিচালনা করে গেছেন। খাজনার বেলা প্রজাদের কোনো প্রকারের অত্যাচার করা হয়নি।

 

জমিদারী বিলুপ্ত হওয়ার পরে এ বাড়ির অনেক বাসিন্দা ভারতের কলকাতা, মোম্বাই, আসাম, ত্রিপুরা, দিল্লি, কাছার, আগরতলাসহ বিভিন্নস্থানে গিয়ে বসবাস করছেন। শত প্রতিকুলতার মধ্যেও তারা জমিদারী স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরে আজো এ বাড়িতে বসবাস করছেন বলে জানান সত্যব্রত।

জমিদারি আমলে খনন করা পুকুর (ছবি : মামুন)

 

তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিতে বিশ্বাসী। এমন মনোভাব নিয়ে পূর্ব পুরুষেরাও চলাফেরা করেছেন, আমরাও করছি। এ বাড়ির বর্তমান প্রজন্মের বাসিন্দারা ভালই আছে।’

 

এলাকার বাসিন্দা সিকান্দর আলী বলেন, ‘জগন্নাথপুরের জমিদারেরা ভাল ছিলেন। তারা শান্তপ্রিয়ভাবে জমিদারী পরিচালানা করে গেছেন। জমিদারী পরিচালনাকালে প্রজাদের কোনো সমস্যা হয়নি। স্থানীয়ভাবে এখনও এ বাড়ির সুনাম অক্ষুন্ন রয়েছে। লোকজন এ বাড়িকে চৌধুরী জমিদার বাড়ি বলে ডাকেন।’

 

জমিদারদের বর্তমান প্রজন্মের একজন জনি চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের পূর্ব পুরুষরা জমিদারী পরিচালনাকালে লোকজনকে আর্থিকসহ নানাভাবে সহযোগীতা করে গেছেন। এ কারণে লোকজন আমাদের বাড়ির ঐতিহ্য সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেন। এতেই আমদের গর্ববোধ হয়।’



 

 

রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/২২ জুন ২০১৫/মামুন চৌধুরী/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়