ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

কী হচ্ছে আলেপ্পোয়?

রাসেল পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫০, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কী হচ্ছে আলেপ্পোয়?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সিরিয়ার আলেপ্পোয় বিদ্রোহীরা পরাজিত হয়েছে। আলেপ্পো ছেড়ে যাওয়ার জন্য সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছে তারা।

চুক্তি অনুযায়ী, আলেপ্পো থেকে বের হয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা সরকারের। কিন্তু এখনো তা করা হয়নি। এ নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে বিদ্রোহী যোদ্ধারা।

রাশিয়ার মধ্যস্থতায় ও তুরস্কের সহযোগিতায় আলেপ্পোয় বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। কিন্তু চুক্তিমতো তাদের স্থানান্তর করা হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিদ্রোহী সূত্রের বরাত দিয়ে বলছে, বিদ্রোহী যোদ্ধা ও তাদের সমর্থক বেসামরিক লোকদের স্থানান্তরে দেরি হবে। কত দেরি হবে, তাও নিশ্চিত নয়। এ নিয়ে কোনো কথা বলেনি আসাদের সরকার।

বুধবার সকাল থেকে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে তা দেরি হচ্ছে। আটকে রাখার জন্য বিদ্রোহীরা দায়ী করছে ইরান ও শিয়া মিলিশিয়াদের। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সমর্থনে দেশটিতে লড়ছে শিয়ারা।

পাঁচ বছরের গৃহযুদ্ধের পর পুরো আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়েছে সরকারি বাহিনী। একে আসাদের ব্যাপক বিজয় বলে মনে করা হচ্ছে। তবে আলেপ্পোয় গণহত্যা চালানো জন্য আসাদকে হুঁশিয়ার করেছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

এদিকে, আলেপ্পোর সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আলজাজিরা অনলাইন। আলেপ্পোয় সরকারি বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ বেসামরিক লোকদের উদ্ধৃতি দিয়ে যে খবর প্রকাশ করছে আলজাজিরা, তাতে স্পষ্ট, জীবন নিয়ে উদ্বেগে আছেন তারা।

আলজাজিরা খবরে বলা হয়েছে, বিদ্রোহীদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত পূর্ব আলেপ্পোর ছোট এলাকায় ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ আটকা পড়েছে। সেখানকার অবস্থা নিয়ন্ত্রণহীন। বিদ্রোহীরা এখন যেখানে অবস্থান নিয়েছে, তার আয়তন ১০ বর্গকিলোমিটারের মতো হবে। সেখানে অসংখ্য শিশু ও নারী রয়েছে।

বুধবার সকালে বিদ্রোহীদের দুজন রয়টার্স অনলাইনকে জানিয়েছেন, স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হতে দেরি হলেও যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে সেখানে। বাস আনা হয়েছে। তবে বিদ্রোহীদের নিয়ে কোনো গাড়ি ছেড়ে যায়নি।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আলেপ্পোয় তাদের যেসব সেনা ও বেসামরিক লোক আহত হয়েছে, আগে তাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের স্থানান্তর করা হবে।

তবে বিদ্রোহীদের দাবি, তাদের পক্ষে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করা খুব বেশি দেরি হয়ে যাবে। প্রতিমুহূর্তে তারা জীবন যাওয়ার আতঙ্কে রয়েছে।

২০১২ সাল থেকে পূর্ব আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ ধরে বিদ্রোহীরা। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহের অভিযানে বিদ্রোহীরা কোনঠাঁসা হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত সোমবার পূর্ব আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ চলে যায় সরকারি বাহিনীর হাতে। বিদ্রোহীরা পরাজয় স্বীকার করে পূর্ব আলেপ্পো ছেড়ে যাওয়ার জন্য সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে।

সিরিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন এ শহরে গত চার বছরের যুদ্ধে কয়েক হাজার মানুষ হতাহত হয়েছে, উদ্বাস্তু হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ।

অন্যদিকে, আলেপ্পোয় বিদ্রোহীদের পরাজয় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তাদের আন্তর্জাতিক সমর্থকরা। কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, আলেপ্পোয় আসাদের বিজয় মানে সিরিয়া যুদ্ধের শেষ নয়। একই ধরনের কথা দুই দিন আগে বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট আসাদ।
 

 

 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ডিসেম্বর ২০১৬/রাসেল পারভেজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়