ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

জাতীয় দলে ফেরা চ্যালেঞ্জিং, অসম্ভব নয় : শামসুর রহমান

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪১, ২৭ জুন ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জাতীয় দলে ফেরা চ্যালেঞ্জিং, অসম্ভব নয় : শামসুর রহমান

শামসুর রহমান শুভ

জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে ২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরে একবার টেস্ট স্কোয়াডে ডাক পেয়েছিলেন শামসুর রহমান শুভ। তবে সেবার তামিম, জুনায়েদ ও ইমরুল কায়েসকে টপকে দলে খেলার সুযোগ হয়নি।

 

বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল)দ্বিতীয় আসরের প্রথম রাউন্ডে ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোনের হয়ে ২৬৭ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস খেলে ২০১৪ সালের ২০ জানুয়ারি জাতীয় দলে আবারও জায়গা করে নেন শুভ। ২৮৬ বলে ২৭ বাউন্ডারি ও ১০ ছক্কায় ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান করেন তিনি। তার ওই ইনিংসই তাকে জাতীয় দলে ফিরিয়ে আনে।

 

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুরের অভিষেক টেস্টে দুই ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে ৪২ (৩৩+৯)। অভিষেক টেস্টে রানের ক্ষুধা মেটাতে পারেননি মারকুটে এই ওপেনার। কিন্তু নিজের দ্বিতীয় টেস্টেই স্বরূপে ফেরেন ঢাকার এই তারকা।

 

টস জিতে শ্রীলঙ্কা ব্যাটিং করায় ফিল্ডিং করতে হয় বাংলাদেশকে। মাঠে থেকেই কুমার সাঙ্গাকারার ৩১৯ রানের ইনিংস দেখেছিলেন শুভ। আর তাতেই অনুপ্রাণিত। বাংলাদেশের পয়মন্ত ভেন্যুতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তামিমের সঙ্গী হয়ে মাঠে নামেন শুভ। তামিম রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে! চাপে বাংলাদেশ। সেই চাপ সামলে নেন মাত্র এক টেস্ট খেলা শুভ।

 

টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেই তিন অঙ্কের ম্যাজিকাল ফিগার স্পর্শ করেন । ২৬২ মিনিট ক্রিজে থেকে ১৯১ বলে ১১ চার ও ১ বাউন্ডারিতে ১০৬ রানের ইনিংস খেলেন । একই টেস্টের চতুর্থ ইনিংসেও করেন ৪৫ রান। সেখানেই নিভে যান!

 

নিজের প্রথম চার ইনিংসে রান ১৯৩। আর পরের ৮ ইনিংসে রান মাত্র ১১২! সংখ্যাটি তার নামের পাশে পুরোই বেমানান। দলের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর আর ঘরের মাটিতে জিম্বাবুয়ে সিরিজে ভালো না করায় জায়গা হারাতে হয় তাকে। ২০১৪ সালের শুরুটা তার ভালো হলেও শেষটা একেবারে বিষাদময়। বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের সূচক ঠিক যে সময়ে ওপরে উঠছে, ঠিক সে সময়ে তার দলের বাইরে যাওয়া নিতান্তই হতাশাজনক।

 

জাতীয় দল থেকে জায়গা হারানোর পর এখন পর্যন্ত নির্বাচকদের নজর কাড়তে পারেননি শুভ। ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্স থাকলেও লিটন কুমার দাস ও রনি তালুকদারের ব্যাটিং জোয়ারে ঢাকা পড়ে গেছেন শুভ। সব মিলিয়ে খুব খারাপ সময় পার করছেন তিনি। পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে শুভকে জাতীয় দলে ফিরতেই হবে। এ জন্য যা করা প্রয়োজন, তাই করতে প্রস্তুত শুভ।

 

শনিবার রাইজিংবিডির ক্রীড়া প্রতিবেদক ইয়াসিন হাসানের মুখোমুখি হন শামসুর রহমান। একান্ত আলাপচারিতায় নিজের পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন তিনি। রাইজিংবিডির পাঠকদের জন্য চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো্-

 

প্রশ্ন : বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বর্তমান পারফরম্যান্স নিশ্চয়ই মুগ্ধ করেছে। নিজের মতো করে যদি মূল্যায়ন করেন?

শামসুর রহমান : বাংলাদেশ ক্রিকেট তার সেরা সময় পার করছে এখন। জাতীয় দলের পারফরম্যান্স অসাধারণ। জিম্বাবুয়ে সিরিজ, এরপর বিশ্বকাপ ও পাকিস্তান সিরিজে আমরা অসাধারণ খেলেছি। ভারতের সঙ্গেও ভালো করলাম। দিন যতই যাচ্ছে আমরা ততই উন্নতি করছি। আর এই উন্নতিটা আমাদের সবার চোখেই পড়ছে। যদি ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং এই তিন বিভাগ একইভাবে খেলতে পারে তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও আমরা ওয়ানডে সিরিজ জিততে পারব। কিন্তু আমি বলব না সিরিজ জিততেই হবে। যে ধারাবাহিকতা আছে, তা ধরে রাখতে হবে। ম্যাচ বাই ম্যাচ ভালো খেললেই আমরা জিততে পারব।

 

প্রশ্ন : বিস্ময়কর মুস্তাফিজকে কেমন মনে হলো?

শামসুর রহমান : ও (মুস্তাফিজ) যেটা করেছে সেটা সত্যিই বিস্ময়কর। বলতে গেলে ওর পারফরম্যান্সই ভারতের বিপক্ষে পুরো রেজাল্ট পাল্টে দিয়েছে। কিন্তু ও যেটা করেছে সেটা এখানেই শেষ। ওটা নিয়ে কথা বলে সামনে আর কোনো কিছু পাওয়া যাবে না। সামনে ওর অনেক পথ যেতে হবে। যদি সে চিন্তা করে থাকে, আমি তিন ম্যাচে ১৩ উইকেট পেয়েছি, অনেক বড় কিছু হয়ে গেছে, তবে এটি ওর জন্য বড় ভুল হবে।

 

প্রশ্ন : কখনো কি মুস্তাফিজের বল খেলা হয়েছে? নাসির সেদিন বলছিল নেটে যেন মুস্তাফিজ তাকে ‘কাটার’ না মারে! এ রকম কিছু কি আপনার সঙ্গেও হয়েছিল?

শামসুর রহমান : (হাসি)। না এরকম কিছু হয়নি। আমার ওকে বেশি খেলা হয়নি। ‘এ’ দলের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের সময় আমি ওকে প্রথম দেখেছিলাম, ২০১৪ সালে। ওর বিপক্ষে এখনো খেলা হয়নি। কিন্তু নেটে খেলা হয়েছে। প্রিমিয়ার লিগে যখন খেললাম, এরপর আবার যখন ‘এ’ টিমে খেললাম দুটির মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পেয়েছি। বেশ ভালো বোলিং করে। আর দ্রুত সবকিছু শিখে যায়।

 

প্রশ্ন : জাতীয় দলের ড্রেসিং রুমটাকে এখন অনেক মিস করছেন, না?

শামসুর রহমান : বর্তমান ড্রেসিং রুম অন্য সব বারের ড্রেসিং রুমের চেয়ে আলাদা। আমাদের যে পারফরম্যান্স তাতে পুরো ড্রেসিং রুমের চিত্র পাল্টে গেছে। মিস না করার কোনো কারণ নেই।

 

প্রশ্ন : এবার আপনাকে নিয়ে কিছু বলি। এই মুহূর্তে শামসুর রহমান শুভ কী নিয়ে ব্যস্ত?

শামসুর রহমান : না সে রকম কিছু করছি না। রোজা রাখছি নিয়মিত। এই তো।

 

প্রশ্ন : জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছেন প্রায় ছয় মাস হয়ে  এল, এ সময় কি ফর্মের কোনো উন্নতি হয়েছে?

শামসুর রহমান : আমি যেভাবে আমার ফর্ম চাইছি, সেভাবে পাচ্ছি না। আমার পারফরম্যান্সে আমি নিজে সন্তুষ্ট না। কয়েকটা ম্যাচে রান করেছি। যেগুলো অনেক বড় হতে পারত। কিন্তু হয়নি। নিজের ভুলের কারণেই হয়নি। আর ভুলগুলো বেশি হয়েছে বলে রান যা করেছি তা সামনে আসেনি।

 

প্রশ্ন : চিরচেনা শুভকে ফিরিয়ে আনতে কীভাবে কাজ করছেন?

শামসুর রহমান : একজন ক্রিকেটারের উত্থান ও পতন থাকে। কখনো সময়ের গ্রাফ (সূচক) ওপরে থাকবে কখনো নিচে। আমি এখন এমন সময় অতিক্রম করছি। এমন না যে, আমি শেষ হয়ে গেছি; আমার ক্রিকেট খেলা শেষ হয়ে গেছে। একটা খারাপ সময় মানুষের যাবে, একটা ভালো সময় আবার আসবে। যত তাড়াতাড়ি ভালো সময় আনতে পারি সেটা আমার জন্য ভালো। সামনে বিপিএল আছে, প্রিমিয়ার লিগ হবে, জাতীয় লিগ হবে। প্রতিটি টুর্নামেন্টে আমাকে ভালো করতে হবে। যেন জাতীয় দলে ফিরতে পারি, সেভাবেই পারফর্ম করতে চাই।

 

প্রশ্ন : জিম্বাবুয়ে সিরিজের পর বাদ পড়েছিলেন? এরপর থেকে শেষ ছয় মাসের একটা চিত্র যদি তুলে ধরেন।

শামসুর রহমান : জিম্বাবুয়ের সঙ্গে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচের পর যখন বাদ পড়লাম তখন প্রিমিয়ার লিগ চলছিল। আর যখন প্রিমিয়ার লিগের প্রথম রাউন্ড শেষ হয় তখন কিন্তু আমি লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার। আমার দল কলাবাগান ক্রীড়া চক্র, সুপার লিগ খেলতে পারেনি। আর ওখানেই কিন্তু আমার লিগ শেষ! যদি সেই পর্যন্ত হিসাব করা হয়, আমি কিন্তু অন্যদের চেয়ে ভালো রান করেছি। আর যদি সুপার লিগ খেলতে পারতাম, তাহলে আরো ২০০-২৫০ রান করতে পারতাম। তখন কিন্তু বিশ্বকাপের আগে জাতীয় দলে জায়গা পেতেও সুবিধা হতো। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমি সেটা করতে পারিনি। তারপরও জাতীয় লিগ আর বিসিএলে ৫০-৬০ রান। কিন্তু ১০০-১৫০ করতে পারেনি। এদিকেও আমি পিছিয়ে পড়েছি। এই মৌসুমটা খারাপ গেছে। যে ভুলগুলো হয়েছে সেগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনের মৌসুম পুরোটা ভালো খেলতে চাই।

 

প্রশ্ন : জাতীয় দলে অল্প কিছুদিনের জন্য ছিলেন। যদি আরো কয়েকটি সুযোগ পেতেন, তাহলে ফর্ম পাল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকত। অনেককেই তো পিছন থেকে ব্যাক করায় এখন ভালো ফল পাচ্ছে?

শামসুর রহমান : জিম্বাবুয়ে সিরিজে বাদ পড়ায় আমার ক্ষোভ কাজ করেনি। নির্বাচকদের প্রতিও না। কারণ আমি সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু আমি কাজে লাগাতে পারিনি। স্বাভাবিকভাবেই আমার জায়গায় নির্বাচকরা অন্য কারো কথাই চিন্তা করবেন। আমাকে কেন নেননি- এ নিয়ে তাদের ওপর আমার কোনো ক্ষোভ নেই। কারণ তারাও একটা দায়িত্ব পালন করছেন। আমি যদি খারাপ খেলি, উনারা আমার রিপ্লেসমেন্ট অবশ্যই খুঁজবেন, সেটাই সংগত। আর দলের সঙ্গে থাকলে কী হতো, তা তো আর বলা যাচ্ছে না।

 

প্রশ্ন : জাতীয় দলে ফেরা কি এখন খুব কঠিন হয়ে গেল?

শামসুর রহমান : আমার জাতীয় দলে ফিরতে হলে দুটি সমীকরণে অবশ্যই মিল থাকতে হবে, প্রথমত আমাকে ঘরোয়া লিগগুলোতে ভালো খেলতে হবে এবং দ্বিতীয়ত আমার পজিশনে জাতীয় দলে এখন যারা খেলছে, তাদের খারাপ খেলতে হবে। তাহলে আমি জাতীয় দলে ফিরতে পারব। অন্যথায় সম্ভব না। আমি কিন্তু কখনোই চাই না, জাতীয় দলে থাকা ক্রিকেটাররা খারাপ পারফর্ম করুক। আর এই মুহূর্তে জাতীয় দলের রাস্তাটা অনেক বড়। যখন প্রথম সুযোগ পেয়েছিলাম তার চেয়েও বেশি। কারণ সবাই ভালো ক্রিকেট খেলছে। বাংলাদেশ ভালো ক্রিকেট খেলছে। সবাই ফর্মে আছে। এখন আমাকে আমার জন্য খেলতে হবে। যেখানেই খেলি না কেন, সেখানে পারফর্ম করতে হবে। তাহলে নির্বাচকরা দ্বিতীয়বার আমার কথা চিন্তা করবেন।

 

প্রশ্ন : কোনো নির্দিষ্ট টার্গেট নিয়ে সামনের মৌসুম শুরু করবেন?

শামসুর রহমান : ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলা আমার মূল টার্গেট। তাহলে আমার তিনটা বিশ্বকাপ হবে। ওটার প্রতি লক্ষ্য রেখেই আমি এগিয়ে যাব। বিপিএল, প্রিমিয়ার লিগ প্রতিটিতে আমার রান করতে হবে।

 

প্রশ্ন : এই কঠিন সময়ে আশপাশের মানুষের কাছ থেকে কতটুকু সমর্থন পাচ্ছেন?

শামসুর রহমান : স্বাভাবিকভাবেই খারাপ খেললে পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিবর্তন হবে। তবে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পরও আমার কাছে এখনো মনে হয় আমি জাতীয় দলে আছি। যখন জাতীয় দলের খুব কাছের মানুষদের ফোন-মেসেজ পাই, তারা যখন খোঁজখবর নেয় তখন নিজের কাছে খুব ভালো লাগে। জাতীয় দলে যাদের সঙ্গে খেলেছি, তারা আমার খোঁজখবর নেওয়া মানে আমাকে ভেঙে পড়া থেকে আটকানো। মুশফিক ও মুমিনুলের সঙ্গে খুব ভালো যোগাযোগ হয়। মুশফিক বন্ধুর মতো আর মুমিনুল আমাকে বড় ভাইয়ের আসনে রেখে ভালো ভালো কথা বলে। তারা সব সময় আমাকে ইতিবাচক চিন্তা করাতে বাধ্য করে। আমি এই দুজনের কাছে কৃতজ্ঞ। মুমিনুল সব সময় বলে, ‘আপনি আবার খেলতে পারবেন, আপনি একটু ভালো খেলেন। দেখবেন আবার চলে আসবে। একটা ভালো সময়ে এলেই দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে।’ এসব জিনিস সামনে এগিয়ে যেতে অনেক উপকার করে।

 

প্রশ্ন : এই মুহূর্তে আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী অনেক। তাদের পেছনে ফেলা কতটুকু কঠিন হবে?

শামসুর রহমান : আসলে বাস্তবতা হচ্ছে, আমি জাতীয় দল থেকে অনেক দূর চলে আসছি। এখন আমার সঙ্গে যার প্রতিদ্বন্দ্বিতা, সেও অনেক ভালো খেলছে। মনে করেন, ইমরুল কায়েস টেস্টে অনেক ভালো করছে। সৌম্য সরকার, লিটনও আছে। রনি দলে থেকেও খেলার সুযোগ পাচ্ছে না। এনামুল হক বিজয়ও আছে। চার-পাঁচটা ওপেনারকে বিট করে আমাকে আসতে হলে প্রমাণ দিয়েই আসতে হবে, রান করতে হবে। তাহলে নির্বাচকরাও চিন্তা করবেন ও (শুভ) আবার পাকাপোক্ত হয়ে জাতীয় দলে ব্যাক করার ক্ষমতা তৈরি করেছে। সেই বিশ্বাস আনতে হলে আমাকে ঘরোয়া লিগগুলোতে খুব ভালো খেলতে হবে।

 

প্রশ্ন : আপনি তো বিসিবির হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের ব্যাটিং বিভাগে আছেন। সেখানে ভালোমতো অনুশীলন করে তো আবার জাতীয় দলে ফেরা সম্ভব?

শামসুর রহমান : হ্যাঁ, আমি এখন ব্যাটিং এলিট প্যানেলে আছি। ঈদের পর থেকে ব্যাটিং ইউনিটের কাজ শুরু হবে। তবে এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া।

 

প্রশ্ন : দীর্ঘ প্রক্রিয়া বলতে …

শামসুর রহমান : আমরা যারা জাতীয় দল থেকে সাম্প্রতিক সময় বাদ পড়েছি, তাদেরকে নিয়ে বিসিবির আলাদা করে ভাবা উচিত। আমাদের যদি একাডেমিতে অনুশীলন করার সুযোগ করে দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের দ্রুত কামব্যাক করার সুযোগ থাকবে। ফিটনেস ট্রেনিং, জিম যেটাই বলেন না কেন, যে কাজটা আমাদের ব্যক্তিগতভাবে করতে হচ্ছে, সেটা ভালো কারো তত্ত্বাবধানে করতে পারলে আমাদের জন্য ভালো হবে। যদি জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন করার সুযোগ তৈরি হয় তাহলে তা অনেক ভালো হবে। এখন সব কাজ নিজেকে করতে হচ্ছে। ক্লাব ক্রিকেট, বিপিএল, জাতীয় লিগ, বিসিএলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু আমাদের নিয়ে যদি আলাদা একটা ক্যাম্প করা হতো, তাহলে আমরা অনুশীলনের মধ্যে থাকতাম, ফিটনেস নিয়েও কাজ করতে পারতাম। তবে এখানেও সমস্যাও আছে! জাতীয় দল এখন অনুশীলন করছে, বাইরে থেকে দল আসছে তারাও অনুশীলন করবেন, ‘এ’ দল আছে, অনূর্ধ্ব-১৯ দলও; সবাই অনুশীলন করছে একই জায়গায়। আমরা যারা এখন দলের বাইরে, তাহলে তারা কখন অনুশীলন করব? আশা করি, এটা নিয়েও ক্রিকেট বোর্ড ভাববে।

 

প্রশ্ন : এখন তাহলে কীভাবে অনুশীলন চালাচ্ছেন?

শামসুর রহমান : নিজেরটা নিজের করতে হচ্ছে, কষ্ট করতে হচ্ছে। অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছি। মিরপুরেই অনুশীলন করছি। শিডিউল দিয়ে কিছু হচ্ছে না। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ হচ্ছে, সেখানে খেলছি। নিজের জন্য এখন যা করা প্রয়োজন তাই করছি। জাতীয় দলে ফেরা আমার জন্য অনেক কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু অসম্ভব কিছু নয়।

 

রাইজিংবিডিকে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

শামসুর রহমান : আপনাকেও ধন্যবাদ। রাইজিংবিডির পাঠকদের ধন্যবাদ। আশা করছি সবাই আমার জন্য ও টিম বাংলাদেশের জন্য দোয়া করবেন।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ জুন ২০১৫/ইয়াসিন/রাসেল পারভেজ/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়