ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘জাতীয় নির্বাচনের দাবি এড়াতে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন’

রেজা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ৯ অক্টোবর ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘জাতীয় নির্বাচনের দাবি এড়াতে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন’

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় নির্বাচনের দাবিকে পাশ কাটাতে সরকার দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচনের আয়োজনের ‘নীল নকশা’ করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

 

বিষয়টিকে ‘সরকারের কুটকৌশল’ আখ্যা দিয়ে দলটি এর নিন্দা জানায়। একই সঙ্গে সরকারকে অবশ্যই মূল দাবিতে (জাতীয় নির্বাচন) ফিরে আসতে হবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করে দলটি।

 

শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বিএনপির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন।

 

তিনি বলেন, ‘পত্রিকায় খবর এসেছে, আগামীতে পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলো দলীয় প্রতীক ও মনোনয়নের ভিত্তিতে হবে। প্রয়োজনে আইন সংশোধনের কথা বলা হয়েছে।’

 

রিপন বলেন, ‘বিগত কয়েকটি স্থানীয় নির্বাচনে দেখা গেছে, দলীয় প্রতীক ও মনোনয়নের ভিত্তিতে না হলেও সেখানে এক ধরনের দলীয় মনোনয়ন থাকে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে যেভাবে প্রার্থী বাছাই হয়েছে, তাতে দলীয় মনোনয়নের বিষয়টি খুব প্রকাশ্যে এসেছে। এরপরে সংশ্লিষ্টরা এবং বিষেশজ্ঞদের কেউ কেউ মত প্রকাশ করেছিলেন স্থানীয় নির্বাচন দলীয়ভাবে হতে পারে।’

 

দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচনের বিষয়টিকে নীতিগতভাবে সমর্থন করলেও বাংলাদেশের বিভাজ্য রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, ‘অনিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন’ এবং ‘আজ্ঞাবহ প্রশাসনের’ দ্বারা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন রিপন।

 

তিনি বলেন, ‘দেশে বিভাজিত সমাজ ব্যবস্থা এবং অপরাজনীতির চর্চার কারণে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আছে। তা ছাড়া এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে দলীয় প্রতীকে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ‘আজ্ঞাবহ’ এই কমিশন ইতিমধ্যে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন করার মতো শক্তি, সাহস, ন্যায়বোধ তাদের নেই।’ জনগণের ভোট পাহারা দেওয়ার মতো ক্ষমতা প্রশাসনের নেই বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা।

 

স্থানীয় নির্বাচনের আগে বর্তমান নির্বাচন কমিশন ভেঙে দিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার অংশগ্রহণে আলোচনার মাধ্যমে একটি কার্যকর কমিশন গঠনের দাবি জানান আসাদুজ্জামান রিপন।

 

দলীয় প্রতীকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলে তাদের কাছ থেকে ভিন্ন দলের লোকেরা প্রয়োজনীয় সেবা পাবেন কি’না-সেই শঙ্কা প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা।

 

তিনি বলেন, ‘উন্নত গণতান্ত্রিক দেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে নয়। কিন্তু আমাদের দেশে পলিটিক্যাল কেমেস্ট্রি (রাজনৈতিক রসায়ন) এতো উন্নত নয়। এমনিতেই আমাদের সমাজ ও রাজনীতি বিভাজিত। যখন দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে, তখন জনপ্রতিনিধিরা আওয়ামী লীগ বা বিএনপির দলে পরিচিত হবেন।  এক্ষেত্রে শাসক দলের যে চরিত্র বিকশিত হচ্ছে, তাতে এই দলের জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে ভিন্ন দলের সমর্থকরা প্রয়োজনীয় সেবা পাবেন বলে মনে করিনা।’

 

রিপন অভিযোগ করে বলেন, ‘বিগত নির্বাচনগুলোতে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয়নি। তা স্বত্ত্বেও যেসব প্রার্থীরা বিএনপির সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তাদের অধিকাংশ নির্বাচিত মেয়র, চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানদের অপসারিত করা হয়েছে। সরকার আইনের কালো কানুনটি ব্যবহার করে ক্ষমতাবলে ইতিমধ্যে তাদের বরখাস্ত করেছে। মামলা দিয়ে তাদের কার্যক্রমে বাধা দিয়েছে।’

 

তিনি বলেন, ‘সারা দেশে বিএনপি সমর্থিত জনপ্রতিনিধিদের সরিয়ে দিয়ে সরকার দলীয় লোকজনকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে বসানো হয়েছে। যেখানে দলীয় প্রতীক ছাড়াই নির্বাচনের এই হাল, তখন দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বিএনপির জনপ্রতিনিধিদের বের করে দেওয়ার পথটি আরো পরিষ্কার হবে।’ 

 

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতাদের মধ্যে অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ অক্টোবর ২০১৫/রেজা/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়