ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

জাবি যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ

সুজন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৫, ২৬ এপ্রিল ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জাবি যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ

জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পয়লা বৈশাখে ছাত্রী লাঞ্ছনার ঘটনায় তদন্তে নিয়োজিত যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ এনে নতুন আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্য মঞ্চ।

 

রোববার বিকেল সোয়া ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক লাউঞ্জে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এ অভিযোগ তুলে দায়ীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।

 

একই সঙ্গে ‘নিরাপত্তা বিধানে ব্যর্থতা ও নিপীড়নের ঘটনায় অসহযোগিতামূলক আচরণের কারণে’ প্রক্টরকে স্বপ্রণোদিত হয়ে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির আহ্বান জানান আন্দোলনকারীরা।

 

তবে যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের প্রধান অধ্যাপক রাশেদা আখতার পক্ষপাতের অভিযোগ নাকচ করে বলেছেন, ‘ঘটনার সময় আন্দোলনকারীরা অথবা আমরা তদন্তকারীরা উপস্থিত ছিলাম না। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযোগকারী, অভিযুক্ত এবং অন্যান্যদের বক্তব্য নিয়েছি। ঘটনা সম্পর্কে আমরা এখন বেশি জেনেছি। বাইরে থেকে তারা অনুমানে অনেক কিছুই বলছেন। আসলে আমরা কারো পক্ষে কাজ করছি না।’

 

সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্য মঞ্চের সংগঠক দীপাঞ্জন সিদ্ধার্থ কাজল। এ সময় দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রায়হান রাইন, আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া, নিজার আলমসহ ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফ্রন্টের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশাসনের কাছে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হল- নিপীড়কদের আজীবন বহিষ্কার, ফৌজদারি আদালতে মামলা, নিপীড়িত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, রাতে পর্যাপ্ত আলো ও পাহারার ব্যবস্থা করা এবং প্রক্টরের পদত্যাগ।

 

এসব দাবি আদোয়ে তিন দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন তারা। কর্মসূচির মধ্যে আছে- আগামীকাল সোমবার সকাল ১১টায় ক্যম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশ, মঙ্গলবার ‘নিপীড়কদের’ শাস্তির দাবিতে গণসংযোগ ও প্রচারণা এবং বুধবার সকাল ১১টায় প্রশাসনিক ভবনের সানে ছাত্র-শিক্ষকদের অবস্থান ও সমাবেশ।

 

লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, ‘নিপীড়করা ক্ষমতাসীন দলের হওয়ায় প্রশাসনের ছত্রছায়ায় রয়েছে। পরবর্তীতে লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন অনেকটা অনিচ্ছামূলকভাবে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করে ও তা নিয়ে নানা টালবাহানা করে।’

 

নিপীড়নবিরোধী সেলকে ‘নাটুকে’ অভিহিত করে তারা অভিযোগ করেন, ‘অভিযোগকারী মেয়েটিকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের নামে নানা রকম হয়রানি করে তারা সচেতনভাবে তারা ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন। ফলে বিচারপ্রক্রিয়া আরো বিলম্বিত হচ্ছে।’

 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রায়হান রাইন বলেন, ‘ঘটনার শিকার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তদন্তকারীদের প্রশ্নের ধরণ এবং তদন্তকারী সেলের প্রধান বিভিন্ন সময় সহকর্মীদের কাছে অভিযোগকারী ছাত্রীর বিষয়ে যেসব মন্তব্য করেছেন, তার ভিত্তিতে আমরা এসব অভিযোগ করছি।’

 

এসব অভিযোগের বিষয়ে যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের প্রধান অধ্যাপক রাশেদা আখতার বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের পূর্ণ রেকর্ড আমাদের কাছে আছে। আমরা কাউকে হয়রানি করিনি। আর সহকর্মীদের কাছে শুধু নয়, কারো কাছে ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য আমি করিনি। তারা ভেতরের খবর জানেন না। তাই নানা অভিযোগই করতে পারেন তারা।’

 

সংবাদ সম্মেলনে জাবি প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানানো হয়।

 

প্রক্টরের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, ‘ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই প্রক্টরকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হলে তিনি তা আমলে নেননি এবং নিপীড়িত শিক্ষার্থীর প্রতি চরম অসহযোগিতামূলক আচরণ করেছেন।’

 

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্তদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। সুতরাং আমরা অসহযোগিতা করিনি।’

 

 

 

 


রাইজিংবিডি/জাবি/২৬ এপ্রিল ২০১৫/সুজন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়