ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

জয়তু রাইজিংবিডি

ইবনুল কাইয়ুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৩, ২৬ এপ্রিল ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জয়তু রাইজিংবিডি

রাইজিংবিডির লোগো

ইবনুল কাইয়ুম : দেখতে দেখতে কেটে গেল দুটি বছর। টেরই পেলাম না। এ যেন নতুন বাড়ি তৈরির মতো। ভিত তৈরি, কাঠামো দাঁড় করানো, ছাদ ঢালাই, চুনকাম, জানালা দরজা লাগানো, তারপর সুক্ষ সৌন্দর্যের বিষয়ে মনোযোগ। এভাবেই জন্মের পর থেকে একটু একটু করে বেড়ে উঠেছে রাইজিংবিডি।

 

একটি ছোট্ট ঘরে জন্ম রাইজিংবিডি ডটকমের। রাইজিংবিডির আতুড় ঘরটি মতিঝিলের দৈনিক বাংলার মোড়ে অবস্থিত প্রিন্টার্স বিল্ডিংয়ের লেভেল দশে। ২০১৩ সালের ২৬ এপ্রিল এক অনাড়ম্বর আয়োজনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হয় প্রতিষ্ঠানটির। বাংলাদেশের সেরা ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি ওয়ালটনের কিছু নিবেদিতপ্রাণ মানুষের উর্বর মস্তিষ্ক প্রসূত ভাবনার ফল এটি।

 

এর মধ্যে রাইজিংবিডির জন্মলগ্নের সম্পাদক উদয় হাকিমের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ যোগ্য। একই সঙ্গে বলতে হয় রাইজিংবিডির উপদেষ্টা সম্পাদক এস এম জাহিদ হাসান স্যারের কথা। এই দুজন চমৎকার মনের মানুষের হাত ধরে গুটি গুটি পায়ে চলতে আরম্ভ করে রাইজিংবিডি।

 

আর যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে রাইজিংবিডির আজকের রাইজিংবিডি হয়ে ওঠা তাদের অবদানও খাটো করে দেখার নয়। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সময়ের তাড়নায় অন্য পথ বেছে নিয়েছেন। তবে শুরুটা তাদের হাতে হয়েছিল নিপুন চমৎকারিত্বে। এদের মধ্যে কামরুজ্জামান শাহিন ভাই, আনু মোস্তফা ভাই, মিলটন আহমেদ ভাই, আমান ভাই, সদল ভাই, সবুজ ভাই, সোহাগ ভাই, লিমন ভাইয়ের কথা বিশেষভাবে বলতে হয়। রাত-দিনের তফাৎ ছিল না তাদের কাজের মধ্যে।

 

আমি এই প্রতিষ্ঠানটিতে যোগ দেই ২০১৩ সালের ২০ অথবা ২২ জুন। সঠিক তারিখটা এই মুহূর্তে মনে আসছে না। এসে এই প্রতিষ্ঠানটিতে কয়েকজন নিবেদিতপ্রাণ মানুষ দেখেছিলাম। তাদের অনেকেই এখনো সেরকমই আছেন। একটুও বদলায়নি। বরং দায়িত্ব আরো বেড়েছে তাদের। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা আরো পরিণত হয়ে উঠেছেন।

 

সেই মানুষগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক বিটের রিপোর্টার নিয়াজ মাহমুদ সোহেল, তানজিনা ইভা, স্পোর্টস রিপোর্টার ইয়াসিন, ইংরেজিতে অগাস্টিন সুজন বাড়ৈ এবং ইসমাইল ভাইকে দেখেছিলাম। তারা আজো নিজের কাজটিই আরো দক্ষতার সঙ্গে করে চলেছেন। অবশ্য এদের মধ্যে ইভা রিপোর্টিং থেকে সরে ডেস্কে শিফট ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে গ্রাফিক্স ডিজাইনার তোফাজ্জল হোসেন সোহলে ভাই এবং সিনিয়র সাব এডিটর সম্পা আপা ওয়ালটনের মূল কোম্পানিতে আলাদা আলাদা  দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন।

 

তা ছাড়া অনলাইন এই নিউজ পোর্টালটির প্রতি যাদের ভালবাসা এখনো এতটুকু কমেনি। যারা নিজের কাজের পাশাপাশি এখনো এটির উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করে চলেছেন তাদের মধ্যে হুমায়ুন কবীর স্যার, ফিরোজ আলম স্যার এবং লোকমান হোসেন আকাশ স্যারের কথা বিশেষভাবে উল্ল্যেখযোগ্য। পৃথিবীতে কিছু মানুষ থাকেন যাদের সংস্পর্শে আসলে মানুষ সবসময়ই কিছু না কিছু শেখে। তাদের মধ্যে উদয় হাকিম স্যার এবং জাহিদ হাসান স্যারসহ এই তিনজনকেও দেখেছি। কোনো সমস্যায় পড়লে তাদের কাছে গেলে যথেষ্ট আন্তরিকতার সঙ্গেই সমাধানের চেষ্টা করেছেন তারা।

 

বিডি নিউজ টোয়েন্টিফোর ছেড়ে আসার সময় মনে হয়েছিল একটি পরিবারকে ছেড়ে এলাম। তবে এখানে ধীরে ধীরে মন বসে গেল। হৃদয় ছুঁয়ে গেল এখানকার সহকর্মী এবং কর্মকর্তাদের আচরণ, মনোভাব এবং কাজের ব্যাপারে উদারতা। কবে কবে দুই বছর পার হয়ে গেলে টেরই পেলাম না।

 

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছুই বদলে যায়। নতুন এই প্রতিষ্ঠানটির জন্ম লগ্ন থেকে নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে চলতে হয়েছে। পরিবর্তনটাও তাই এসেছে বারবার। নতুন করে সাজিয়ে গুছিয়ে চলতে হয়েছে বারবার। খুব কম সময়ের মধ্যে অনলাইন নিউজ পোর্টালের দুনিয়ায় পাঠক প্রিয়তা অর্জন করে রাইজিংবিডি। সেজন্য এই প্রতিষ্ঠানের কর্মী এবং কর্মকর্তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টাকেই বড় করে দেখতে হয়।

 

এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে গিয়েই দেখলাম বড় মানুষেরা কত উদার মনের হতে পারে। কাছ থেকে তেমন দেখার সুযোগ হয়নি। তবে যেটুকু দেখেছি তার মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মাহবুবুল এ খালিদ স্যারকে মনে হয়েছে তিনি অত্যন্ত বড় মাপের এবং মনের মানুষ। রাইজিংবিডিতে যোগদান করার পর থেকেই বিভিন্ন মানুষের কাছে শুনেছি তার অকুণ্ঠ প্রশংসা। নিজেও তার সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি কত সহজে কোম্পানির ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কর্মীকে তিনি কত সহজে আপন করে নেন।

 

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাইজিংবিডির কলেবর বেড়ে চলেছে। সেই সঙ্গে পরিচিতি এবং পাঠক প্রিয়তাও বেড়ে চলেছে। আজ এই প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় একশ জন কর্মী সপ্তাহের সাত দিন চব্বিশ ঘণ্টা কাজ করে চলেছেন। সারা দেশ জুড়ে রয়েছে রাইজিংবিডির এক ঝাঁক নিবেদিত প্রাণ কর্মী। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এমনকি দেশের বাইরেও বেশ কয়েকটি দেশে কর্মঠ কিছু কর্মী নিরলস কাজ করে চলেছেন।

 

বর্তমানে যিনি নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন তিনি সবার প্রিয় সন্তোষ দা হিসেবেই অধিক পরিচিত। সন্তোষ দা দায়িত্ব নেওয়ার আগে আরেকজন কাণ্ডারী এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বভার কাঁধে নিয়েছিলেন। সাংবাদিক সমাজে বহুল পরিচিত এবং সুযোগ্য খান মো. শাহনেওয়াজ ভাই বেশ কয়েকমাস এটির পিছনে নিরলস পরিশ্রম করেছেন। সব মিলিয়ে বেশ কয়েকবার নেতৃত্ব বদল হলেও কর্মীদের ঐক্যে কখনো ফাঁটল ধরেনি। বরং যার যার নিজ দায়িত্ব থেকে সবটুকু নিংড়ে দিয়ে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন।

 

এক সময়ের সেই ছোট্ট রাইজিংবিডি এখন দৈনিক বাংলা মোড়ের প্রিন্টার্স বিল্ডিংয়ের লেভেল ১২তে বিশাল স্থান জুড়ে আছে। এখন নিউজ পোর্টালটি অনেক গোছালো, অনেক সুনির্দিষ্ট। আজকে রাইজিংবিডির এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমার বর্তমান ও প্রাক্তন সকল সহকর্মীদের প্রতিই রইল আন্তরিক অভিনন্দন। জয়তু রাইজিংবিডি।

 

 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ এপ্রিল ২০১৫/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়