ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বিপিএলের সেরা একাদশ

পরাগ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১০, ১০ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিপিএলের সেরা একাদশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক : শেষ হয়েছে বিপিএলের চতুর্থ আসর। রাজশাহী কিংসকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা ডায়নামাইটস।

 

বাংলাদেশের ঘরোয়া এই টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে কোন ক্রিকেটার কতটা আলো ছড়াতে পারল কিংবা ব্যর্থ হলো, সেসব এখন বিশ্লেষণের পালা।

 

এই পর্বে থাকছে বিপিএলের সেরা একাদশ। একাদশে সর্বোচ্চ চারজন বিদেশি খেলোয়াড় রাখার নিয়ম অনুসারে এই বিপিএলের সেরা একাদশ নির্বাচন করেছে রাইজিংবিডির ক্রীড়া বিভাগ।

 

১ তামিম ইকবাল

বিপিএলটা দুর্দান্ত কেটেছে চিটাগং ভাইকিংসকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া তামিমের। এই বিপিএলে তামিম ছাড়া আর কেউই ৪০০ রান ছুঁতে পারেননি। ১৩ ইনিংসে ৪৩.২৭ গড়ে ছয় ফিফটিতে তামিমের ব্যাট থেকে আসে ৪৭৬ রান। দলকে ফাইনালে তুলতে না পারলেও দেশসেরা এই ওপেনার তার পারফরম্যান্সের জন্য সেরা একাদশে অটোমেটিক চয়েজ।

 

২ মেহেদী মারুফ

এই বিপিএলে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে সবার নজর কেড়েছেন মেহেদী মারুফ। টুর্নামেন্ট তিনি খুব বেশি বড় স্কোর গড়তে পারেননি। ফিফটি করেছেন দুটি। তবে ঢাকা ডায়নামাইটসকে প্রায় প্রতিটা ম্যাচেই এনে দিয়েছেন উড়ন্ত সূচনা। ১৪ ম্যাচে ২৬.৬৯ গড়ে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩৪৭ রান। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ২০টি ছক্কাও হাঁকিয়েছেন তিনিই। বিপিএলে পারফরম্যান্সের পুরস্কারও পেয়েছেন হাতেনাতে। ডাক পেয়েছেন নিউজিল্যান্ড সিরিজের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় প্রস্তুতি ক্যাম্পের বাংলাদেশ দলে।

 

৩ সাব্বির রহমান

এই বিপিএলে একমাত্র সেঞ্চুরিটি এসেছে সাব্বিরের ব্যাট থেকেই। রাজশাহী কিংস ব্যাটসম্যান বরিশাল বুলসের বিপক্ষে খেলেন ১২২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। যেটি বিপিএল ইতিহাসেরই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। ১৫ ম্যাচে ২৬.৯২ গড়ে সাব্বিরের ব্যাট থেকে আসে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩৭৭ রান। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৭টি ছক্কাও হাঁকিয়েছেন তিনি। তিন নম্বরে তার মতো বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানকে তাই জায়গা দিতেই হয়।

 

৪ মাহমুদউল্লাহ

অলরাউন্ড নৈপুণ্যের বিপিএলের চতুর্থ আসরের টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। টুর্নামেন্টে দল খুলনা টাইটান্সকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। টপ অর্ডারের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় দলের ব্যাটিং স্তম্ভও ছিলেন  মিডল অর্ডার এই ব্যাটসম্যান। ১৪ ম্যাচে দুই ফিফটিতে ৩৩ গড়ে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৯৬ রান আসে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে। হাত ঘুরিয়ে নিয়েছেন ১০টি উইকেট। দুটি ম্যাচে শেষ ওভারের অসাধারণ বোলিংয়ে দলকে জয় উপহার দিয়েছেন। খুলনাকে প্লে-অফে তুলতে প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে ঢাকার বিপক্ষে খেলেন ম্যাচজয়ী ২৮ বলে ৫০ রানের ইনিংস।

 

৫ মুশফিকুর রহিম

মুশফিকের দল বরিশাল বুলস টুর্নামেন্ট শেষ করেছে সাত দলে মধ্যে সবার নিচে থেকে। দল ভালো না করলেও মুশফিকের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স উজ্জ্বলই ছিল। ১২ ম্যাচে ৩৭.৮৮ গড়ে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৪১ রান। উইকেটের পেছনে ডিসমিসাল ৭টি। উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে তাই সেরা একাদশে জায়গা পেয়েছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক।

 

 

৬ সাকিব আল হাসান

টুর্নামেন্টে সাকিব যে পারফরম্যান্স করেছেন সেটি হয়তো তার নামের সঙ্গে যায় না। ১৪ ম্যাচে ২০.৫৪ গড়ে রান করেছেন ২২৬। হাত ঘুরিয়ে উইকেট নিয়েছেন ১৩টি। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রয়োজনের সময় দলকে ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন। কমপক্ষে ৪০ ওভার বল করেছেন এমন বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে সাকিবের ইকোনোমি রেটও সবার চেয়ে কম। টুর্নামেন্টে ৫০ ওভার বল করা সাকিবের ইকোনোমি রেট ৬.৮৪। ১২ ম্যাচে তার সমান ১৩ উইকেট নিয়েছেন আরেক বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানী। সানীর ইকোনোমি রেট (৬.২৯) সাকিবের চেয়ে কম হলেও তিনি বল করেছেন ৩০.৩ ওভার। কিছুদিন আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলিংয়ের নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরা সানীর বোলিং বিপিএলে আবার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

 

৭ মোহাম্মদ নবী

বিপিএলে আফগান অলরাউন্ডারের পারফরম্যান্স ছিল দারুণ। ব্যাট ও বল হাতে সমানতালে পারফর্ম করেছেন নবী। ১৩ ম্যাচে ৩২.৮৫ গড়ে রান করেছেন ২৩০। স্ট্রাইক রেট ছিল ১৭৪.২৪! বল হাতে ৬.৪৭ ইকোনোমি রেটে উইকেট নিয়েছেন টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৯টি। দুটি ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝড় তুলে, আরেকটিতে দারুণ বোলিংয়ে চিটাগংকে জিতিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা।

 

৮ ড্যারেন স্যামি

পারফরম্যান্সের পাশাপাশি দারুণ নেতৃত্ব দিয়ে রাজশাহী কিংসকে ফাইনালে তোলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক স্যামি। ১৫ ম্যাচে ১৭৪.৬৮ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ২৭৬। উইকেট নিয়েছেন ৬টি। দলে খুব একটা বড় খেলোয়াড় ছিল না। সেই দলকেই দারুণ নেতৃত্ব দিয়ে ফাইনালে তুলেছেন ক্যারিবীয় তারকা।  

 

ডোয়াইন ব্রাভো

এবার ঢাকা ডায়নামাইটসের শিরোপা জয়ে বড় অবদান ব্রাভোর। বল হাতে দারুণ করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান অলরাউন্ডার। ২১ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বোলার তিনিই। ১৩ ম্যাচের মাত্র দুটিতে উইকেট নিতে পারেননি। তাছাড়া সব ম্যাচেই উইকেট নিয়েছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিও তিনি।

 

১০ জুনাইদ খান

টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি খুলনার হয়ে খেলা পাকিস্তানের এই পেসার। খুলনার প্রথম ম্যাচেই ২৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে অবদান রেখেছিলেন। টুর্নামেন্টে দারুণ লাইন এন্ড লেংথ বজায় রেখে বলে করেছেন জুনাইদ। ১৪ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ২০টি।

 

১০ শফিউল ইসলাম

এবারের বিপিএলে বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট শফিউলের। খুলনা টাইটান্স পেসার ১৩ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ১৯টি। ইনজুরির কারণে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচ খেলতে পারেননি। নইলে উইকেটসংখ্যা আরো আরো বাড়তে পারতো।

 

সেরা একাদশ: তামিম ইকবাল, মেহেদী মারুফ, সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম (উইকেটকিপার), সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ নবী, ড্যারেন স্যামি (অধিনায়ক),  ডোয়াইন ব্রাভো, জুনাইদ খান ও শফিউল ইসলাম।

 

দ্বাদশ খেলোয়াড়: শোয়েব মালিক।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ ডিসেম্বর ২০১৬/পরাগ/ইয়াসিন 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়