ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ট্রেনে ভিড়, ফাঁকা বাস

মেহেদী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০৫, ২০ জুলাই ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ট্রেনে ভিড়, ফাঁকা বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঈদের ছুটি শেষে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে রাজধানীবাসী। শুরুর চাপটা ট্রেনে বেশি হলেও দূরপাল্লার বাসে তেমনটি নেই। তবে আগামীকাল থেকে যাত্রীর চাপ বাড়বে বলে জানিয়েছে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

 

কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, ভোর থেকেই ট্রেনের ভেতরে-বাইরে ছাদে যে যেভাবে পারছে ঢাকায় ফিরে আসছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে ফিরছে অধিকাংশ মানুষ।

 

কমলাপুর রেলস্টেশন ম্যানেজার আবু সাঈদ আহমেদ রাইজিংবিডিকে জানান, ট্রেন যথাসময়ে ঢাকা এসে পৌঁছাচ্ছে; শিডিউল বিপর্যয় নেই। যাত্রীদেরও তেমন কোনো অভিযোগ নেই। সবার সহযোগিতায় ঈদের আনন্দ শেষে মানুষ ট্রেনযোগে নির্বিঘ্নে ঢাকায় ফিরে আসছে।

 

জানা গেছে, ঈদের ছুটি শেষে প্রথমদিন সোমবার সকালেই সারাদেশ থেকে ট্রেনযোগে প্রায় ১৫ হাজার যাত্রী ঢাকায় ফিরে আসে। ভোর ৫টা থেকেই রাজধানীর এয়ারপোর্ট ও কমলাপুর রেলস্টেশনে এসে পৌঁছাচ্ছে নিয়মিত ট্রেন সার্ভিসগুলো। তার মধ্যে ৫টা ৪০ মিনিটে সিলেট থেকে যাত্রী নিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছে উপবন, একই সময়ে রাজশাহী থেকে কমলাপুর পৌঁছে ধুমকেতু। ৭টা ২৫ মিনিটে ঢাকায় এসে পৌঁছায় দিনাজপুরের একতা এক্সপ্রেস। ৭টা ৪০ মিনিটে কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছে চট্টগ্রামের আন্তনগর ট্রেন তুর্ণা নিশিতা এবং ৮টা ৫ মিনিটে আসে চট্টগ্রাম মেইল ট্রেন।
এভাবে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সারাদেশ থেকে আসতে থাকবে ট্রেনগুলো। সারাদিন ২৯টি ট্রেন দেশের বিভিন্ন রুটে আসা-যাওয়া করবে বলেও জানিয়েছেন স্টেশন ম্যানেজার।

 

এবারের ঈদেও ঢাকা ফেরত মানুষের ভোগান্তি হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে টিকিট পেতে যেমন হয়রানির শিকার হতে হয়েছে- তেমনি আসন পেতেও সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। কেউ কেউ দাঁড়িয়ে ঢাকায় পৌঁছেছেন। তবে বৈধ যাত্রীদের বেশি বিরক্ত করেছে পথে পথে টিকিট ছাড়া ওঠানামা করা অবৈধ যাত্রীরা। পুলিশ ও রেলওয়ের অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এসব যাত্রী টিকিট ছাড়াই ওঠানামা করে। তবে, ফিরতি ট্রেনগুলো যথাসময়ে ফিরে আসায় স্বস্তি জানিয়েছেন যাত্রীরা।

 

একটি বেসরকারি ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আবু আজম জানান, ট্রেনের শিডিউল ঠিক ছিল। কিন্তু ভেতরে বাজে অবস্থা। ট্রেন অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন। দুর্গন্ধ নিয়ে ঢাকায় ফিরে আসতে হয়েছে। এ ছাড়া পথে পথে টিকিট ছাড়া যাত্রীর ওঠানামায় ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তাদের কারণে অনেক যাত্রীর জিনিসপত্র খোয়া গেছে। এসব যাত্রী পুলিশ ও রেলের অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অবৈধভাবে ট্রেন ভ্রমণ করেছে। এদের  প্রতিবাদ করলে উল্টো হয়রানির শিকার হতে হয়। এ ধরণের অবৈধ যাত্রীদের মধ্যে বেশিরভাগই মাদকাসক্ত, ছিনতাইকারি থাকে। তারা ট্রেনে উঠে পরে যাত্রীদের নানাভাবে সমস্যায় ফেলে।

 

এদিকে রাজধানীর ব্যস্ততম বাস টার্মিনাল মহাখালী আন্ত:জেলা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, দুরপাল্লার বাসগুলোতে যাত্রীদের তেমন চাপ নেই। চাপ না থাকায় অর্ধেক সিট ফাঁকা রেখেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় আসছে চেয়ার কোচগুলো।

 

কথা হয় ময়মনসিং-ঢাকা-চট্রগামগামী এনা পরিবহেনর মেইনটেইন ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন মানিকের সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে জানান, ভোর রাত থেকে দুপুর পর্যকন্ত এনা পরিবহনের ৫০টি গাড়ি ঢাকায় এসেছে। যাত্রীর চাপ না থাকায় সবগুলো কোচকেই অর্ধেক সিট  ফাঁকা রেখে আসতে হয়েছে। তবে আগামীকাল থেকে ঢাকা ফেরা যাত্রীর চাপ বাড়বে বলে জানান তিনি।

 

একই কথা বলেন, রাজশাহী-চাঁপাই-ঢাকা রুটে চলাচলকারী একতা এক্সপ্রেসের টিকিট বুকিং মাষ্টার আলফাজ মোল্লা। তিনি জানান, রাজশাহী-চাপাই থেকে আসা একতার ২০টি  কোচের বেশিরভাগ সিটই ফাঁকা ছিল। এ ছাড়া টানা বৃষ্টির কারণে অনেকেই বুকিং দেওয়া সিট বাতিল করেছেন বলেও জানান তিনি।

 

স্ত্রী, সন্তানসহ চট্রগাম থেকে আসা এনা পরিবহনের যাত্রী নজরুল ইসলামের কাছে আজই ঢাকায় ফেরার কারণ জানতে চাইলে বলেন, ‘টিকিট আগেই কাটা ছিল। তা ছাড়া আগামীকাল থেকে অফিস শুরু হবে তাই চলে এলাম।’

 

রাস্তায় যানজট না থাকায় অনেক সহজে ও নিরাপদে ঢাকায় আসা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান, বেসরকারি একটি কোম্পানির এই কর্মকর্তা।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ জুলাই ২০১৫/মেহেদী/নইমুদ্দিন/সুমন মুস্তাফিজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়