ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

ভালোবাসায় ৬১ বছর

এসটি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৩, ৩ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভালোবাসায় ৬১ বছর

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাঙালির মননের আলোয় গড়া প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণাধর্মী এই প্রতিষ্ঠান।

 

আজ শনিবার ৩ ডিসেম্বর বাঙালি জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক প্রতিষ্ঠানটির ৬১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

 

জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে বাংলা একাডেমির সুনাম। সামনের বছরে সে সুনাম অক্ষুন্ন রেখে বাংলা সাহিত্যের অমর সৃষ্টিগুলো পুনর্মুদ্রণ করার উদ্যোগ নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

 

৬১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে আজ সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানমালার সূচনা হয়। একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিভিন্ন স্তরের লেখক, সাহিত্যিক ও একাডেমির কর্মকর্তারা।

 

বিকেলে একাডেমির রবীন্দ্র চত্বরে রয়েছে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে ‘বাংলা একাডেমি : বাঙালির মননতীর্থ’ শীর্ষক বক্তৃতা করবেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য, লেখক-গবেষক অধ্যাপক পবিত্র সরকার। বাংলা একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।

 

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী প্রসঙ্গে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘জাতীয় পর্যায় পেরিয়ে বাংলা একাডেমির এগিয়ে চলা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও প্রশংসিত হচ্ছে। সমগ্র বিশ্বেই আমাদের লোকজ গবেষণা নিয়ে আলোচনা হয়।’

 

আগামী বছরের কর্মপরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের বাংলা সাহিত্যে প্রচুর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ রয়েছে, যা বিপুল পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে সেগুলো এখন আর বাজারে নেই। নতুন প্রজন্মের কাছে সেসব গ্রন্থ পুনরায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলা একাডেমি। এর মধ্যে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলামের বইও রয়েছে। সে সঙ্গে আগামী এক বছরে আমরা একাডেমি থেকে অর্ধশতাধিক গ্রন্থ প্রকাশ করব। এর মধ্যে বাংলা একাডেমির প্রাক্তন মহাপরিচালক নীলিমা ইব্রাহিমের ‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি’ বইটির ইংরেজি অনুবাদও রয়েছে। সব মিলিয়ে আরেকটি কর্মমুখর বছর পার করতে যাচ্ছি আমরা।”

 

১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন বর্ধমান হাউসে বাংলা একাডেমির পথচলা শুরু। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের পরবর্তী প্রেক্ষাপটে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের চর্চা, গবেষণা ও প্রচারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে। প্রতিষ্ঠার ৬১ বছর পরও সে লক্ষ্যে অবিচল রয়েছে একাডেমি।

 

চারটি বিভাগের মাধ্যমে বাংলা একাডেমি বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদন করছে। সেগুলো হলো- গবেষণা, সংকলন ও ফোকলোর বিভাগ; ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও পত্রিকা বিভাগ; পাঠ্যপুস্তক বিভাগ এবং প্রাতিষ্ঠানিক পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ বিভাগ। একাডেমি প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ এর আয়োজন করে। সেই সঙ্গে প্রদান করে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, যা দেশের অন্যতম সম্মানের এক পুরস্কার হিসেবে বিবেচিত।

 

এ ছাড়া রবীন্দ্র পুরস্কার, মযহারুল ইসলাম কবিতা পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার ও প্রবাসী সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করে থাকে। এসবের পাশাপাশি বর্ধমান হাউসে ভাষা আন্দোলন জাদুঘর জাতীয় সাহিত্য ও লেখক জাদুঘর এবং লোকঐতিহ্য জাদুঘর পরিচালিত হয় প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে। দেশের পথিকৃৎ ভাস্কর নভেরার নামাঙ্কিত একটি গ্যালারিও পরিচালিত হয় একাডেমির তত্ত্বাবধানে।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ ডিসেম্বর ২০১৬/এসটি/হাসান/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়