মনের ক্ষোভ বনে লড়াই (ভিডিও)
সাইফুল আহমেদ || রাইজিংবিডি.কম
সাইফুল আহমেদ : ১০ বছর আগের কথা। ২০০৬ সালের উয়েফা কাপের খেলা। ফরাসি ক্লাব ন্যান্সি ও নেদারল্যান্ডের ক্লাব ফেয়েনুর্ডের মধ্যে মধ্যে ম্যাচে। ম্যাচে ৩-০ গোলে ফেয়েনুর্ড হারলেও নক-আউট পর্যায়ে যাওয়ার কথা ছিল তাদেরই।
তবে আর তা হলো কোথায়। কথায় বলে, বিধাতার কৃপা না থাকলে পাওয়া ধনও হারাতে হয়। ফেয়েনুর্ডের অবস্থা হলো তা-ই। ম্যাচ চলাকালীন ন্যান্সির সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল স্বাগতিক ফেয়েনুর্ডের সমর্থকরা। তাই উয়েফার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি সে বছর টুর্নামেন্ট থেকে বহিষ্কার করল ফেয়েনুর্ডকে। পাশাপাশি ২০০৬-০৭ সেশনে তাদেরকে ৮১ হাজার পাউন্ড জরিমানা ও দুটি ম্যাচ দর্শকশূন্য মাঠে খেলার শাস্তি দেওয়া হলো।
তবে ফেয়েনুর্ডের ক্ষোভ বিধাতার ওপর না, গিয়ে পড়ল ন্যান্সির সমর্থকদের ওপর। ক্ষোভ নাকি আগুনের মতো। আগুন যেমন একটুখানি লাগলেই অনুকূল পরিবেশে ব্যাপক ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষোভও তেমনি, মনে সৃষ্টি হয়ে মাথা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। আর তা হাতের ব্যবহার না হওয়া পর্যন্ত নিবারণ হয় না।
উয়েফা কাপ থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর থেকেই ফেয়েনুর্ডের সমর্থকরা ক্ষোভানলে জ্বলছিল প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য। এতদিন সুযোগ পায়নি। অবশেষে দিন এলো সেই। ফেয়েনুর্ডের সমর্থকরা ন্যান্সির সমর্থকদের একটি ‘সম্মুখ সমরে’ আহ্বান জানাল।
২০০৬ সালে ফেয়েনুর্ডের সমর্থকদের কাছে মার খেয়ে এসেছিল ন্যান্সির সমর্থকরা। শাস্তিস্বরূপ ফেয়েনুর্ড উয়েফা কাপ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিল, তাতে কী। পিঠের ব্যথা কী আর মনে সারে! তাই ফেয়েনুর্ড সমর্থকদের আহ্বানে সারা দিল ন্যান্সির সমর্থকরা। প্রতিশোধ যে তাদেরও নেওয়ার আছে!
গত শনিবার নেদারল্যান্ডের রটারডামের একটি বনে পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে লড়াইয়ে লিপ্ত হয় ন্যান্সি ও ফেয়েনুর্ডের সমর্থকরা। লড়াইয়ের শর্ত ছিল, কোনো পক্ষই অস্ত্র আনতে পারবে না। ফেয়েনুর্ডের সমর্থকরা ছিল আপাদমস্তক কালো পোশাকে। আর ন্যান্সির সমর্থকরা ছিলেন সাদা টি-শার্টের সঙ্গে জিন্স পরিহিত। ন্যান্সির সমর্থকরা তাদের সঙ্গে স্ট্রাসবুর্গের কয়েকজন বন্ধু নিয়ে এসেছিল। ফেয়েনুর্ডের ১৯ ও ন্যান্সির পক্ষে ২৪ জন সমর্থক লড়াইয়ে অংশ নেয়।
‘কী ভয়ানক লড়াই হলো মা যে, শুনে তোমার গায়ে দেবে কাঁটা’। অস্ত্র ছাড়াই ভয়াবহ, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হলো। লাথি, ঘুষি, কনুই দিয়ে আঘাত যে যেভাবে পারে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে প্রাণপণ লড়তে লাগলো। ‘তবুও ঘুচিল না, ফেয়েনুর্ডের সমর্থকদের বেদনা’। কারণ এবারও ভাগ্যবিধাতা তাদের সঙ্গে ছিলেন না। তাই হারতে হলো ফেয়েনুর্ডকে।
আগ্রাসী ও সংখ্যায় বেশি ন্যান্সির সমর্থকরা স্বাগতিক ফেয়েনুর্ডের সমর্থকদের ‘মেরে ফাটিয়ে’ দিলেন। নিজেদের ক্ষোভানলে নিজেরাই জ্বলে পুড়ল ফেয়েনুর্ডের সমর্থকরা। ২০০৬ সালে ন্যান্সির সমর্থকদের মার দিতে পারলেও এবার মার খেয়ে হারাতে হলো ইজ্জাতটাও।
ভিডিও :
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ নভেম্বর ২০১৬/সাইফুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন