ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

তুরস্কের নারী `রুব্দ্র তরক` হ্যাক হওয়া অর্থ তুলে নেয়

এম এ রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৭, ২৬ মে ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
তুরস্কের নারী `রুব্দ্র তরক` হ্যাক হওয়া অর্থ তুলে নেয়

এম এ রহমান : রুব্দ্র তরক গুরুং নামের তুরস্কের এক নারী বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংক থেকে হ্যাক হওয়া প্রায় দুই কোটি টাকা (আড়াই লাখ ডলার) ওই দেশের একটি শাখা হতে তুলে নিয়েছিল।

 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে এমন তথ্য বেরিয়ে আসলেও দেশের অভ্যন্তরে কারো সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত অভিযোগটি এফআরটির (অভিযোগ থেকে অব্যাহতি) মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়। দুদকের পরিচালক মীর জয়নুল আবেদিন শিবলী অভিযোগটি তদন্ত করেন।

 

দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল রাইজিংবিডিকে এমনই তথ্য দিয়েছেন।

 

তিনি বলেন, ২০১৩ সালে সোনালী ব্যাংক এ বিষয়ে মামলা দায়ের করার পর দুদককে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে তদন্তে সোনালী ব্যাংক কিংবা বাংলাদেশের কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।

 

দুদকের তদন্তের সাফল্যের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের তদন্তে এ টুকু বেরিয়ে আসে হ্যাকাররা সুইফট কোড ব্যবহার করে সোনালী ব্যাংক, ইউকে শাখা থেকে ওই অর্থ ছাড় করিয়েছিল। যা তুরস্কের একটি শাখা থেকে রুব্দ্র তরক গুরুং উত্তোলন করে দিয়ে যায়।

 

দুদক সচিব আরো বলেন, তারা বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দিয়ে প্রযুক্তিগত বিষয়টি খতিয়ে দেখেছেন। বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন সুইফট কোড হ্যাক করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোনো কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়নি কিংবা ওই ঘটনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক কিংবা সোনালী ব্যাংকের কেউ জড়িত নয়। তদন্তের সার্বিক বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পর তারা এফআরটির মাধ্যমে মামলাটি নিষ্পত্তি করার সিদ্ধান্ত নেন।

 

তিন বছর আগে ভুয়া সুইফট মেসেজের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়াত্ত সোনালী ব্যাংকের আড়াই লাখ ডলার হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি সম্প্রতি রয়টার্সের সূত্র ধরে আলোচনায় আসে। ২০১৩ সালে সুইফট কোড ব্যবহার এই টাকা লোপাটের ঘটনা ঘটেছিল। সেই সময়ে সুইফট কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশ বিষয়টি জানিয়েছিল। তবে তুরস্কে পাচার হওয়া ওই অর্থ আর ফেরৎ আনা সম্ভব হয়নি।

 

সোনালী ব্যাংকের আড়াই লাখ ডলার হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনার সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির যোগসূত্র আছে কি না- পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে বলে বিদেশি সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে।

 

ঘটনার এক বছর পর ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তখনকার সচিব এম আসলাম আলম সোনালী ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে ওই ঘটনা প্রকাশ করার আগ পর্যন্ত বিষয়টি দেশের মানুষের কাছে অজানা ছিল।

 

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সোনালী ব্যাংকের ঘটনাও সুইফট ম্যাসেজিং প্ল্যাটফরম ব্যবহার করে অর্থ পরিশোধের ভুয়া অনুরোধ পাঠিয়ে টাকা চুরি করা হয়। বাংলাদেশের বাইরে এ বিষয়টি নিয়ে সেই সময় তেমন আলোচনা হয়নি। ফেব্রুয়ারিতে একই কায়দায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সাইবার চুরির ঘটনাটি ঘটার আগে সোনালী ব্যাংকের মামলা এক প্রকার হিমঘরেই ছিল।

 

সোনালী ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, ২০১৩ সালের সেই চুরির বিষয়টি সুইফট কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তুরস্কের এক অ্যাকাউন্টে সরিয়ে ফেলা সেই টাকা আর উদ্ধার করা যায়নি। ওই ঘটনায় হ্যাকাররা ব্যাংকের কোনো একটি কম্পিউটারে ‘কি লগার সফটওয়্যার’ বসিয়ে পাসওয়ার্ড চুরি করে। পরে সেই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেই ভুয়া মেসেজ পাঠানো হয়।

 

বিষয়টি ধরা পড়ার পর অর্থ লেনদেনের বিষয়টি দেখভালের দায়িত্বে থাকা দুই কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তারও করেছিল। কিন্তু পরে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয় দুজনকেই। 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ মে ২০১৬/এম এ রহমান/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়