ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

দস্যুদের আত্মসমর্পণে স্বস্তি

সুজন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দস্যুদের আত্মসমর্পণে স্বস্তি

অস্ত্র ও গুলিসহ দস্যুদের আত্মসমর্পণ

ডেস্ক রিপোর্ট : বনদস্যু ও জলদস্যুদের তৎপরতার কথা কে না জানে। তাদের অত্যাচারে দক্ষিণাঞ্চল-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার সাধারণ মানুষের জীবন ছিল অতিষ্ট। তবে গেল বছরের সবচেয়ে ভাল খবর হলো বেশ কয়েকটি দস্যু বাহিনী আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার চেষ্টা করছে। সরকারের সহযোগিতা আর মিডিয়ার ভূমিকাও এই ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। দস্যুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাওয়ার ইচ্ছাকে সাধারণ মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছে। আর ওই এলাকার সাধারণ মানুষসহ জেলেদের  মধ্যেও ফিরেছে স্বস্তি।

 

বাগেরহাটের মোংলা উপজেলায় চলতি বছরের ৩১ মে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করেন সুন্দরবনের বনদস্যু ‘মাস্টার বাহিনী’ প্রধান মোস্তফা শেখসহ ১০ জন।

 

ওই দিন বিকাল ৩টায় মোংলা বন্দরের জেটিসংলগ্ন এলাকায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে তারা আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় তারা দেশি-বিদেশি ৫২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও সাড়ে চার হাজার গুলি জমা দেন।

 

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সূত্র জানায়, গত ৩ মে দস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য মাস্টার বাহিনীর প্রধান মোস্তফা শেখসহ তার সাত সহযোগী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও র‌্যাবের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত আবেদন করলে তারা আত্মসমর্পণের আয়োজন শুরু করেন।

 

আত্মসমর্পণকারী ১০ জলদস্যুর বিরুদ্ধে ওই দিনই মোংলা  থানায় অস্ত্র আইনে দুটি মামলা করা হয়। পরের দিন ১ জুলাই  আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

 

পরবর্তীতে মাস্টার বাহিনীর ১০ সদস্যের মধ্যে ছয়জনকে আদালত মুক্তি দিলেও বাহিনীর প্রধান মোস্তফা শেখ ওরফে কাদের মাস্টার, সেকেন্ড ইন কমান্ড সোহাগ আকন, সুমন সরদার ও হারুনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও চাঁদাবাজির একাধিক মামলা থাকায় তখন তাদের কারাগার থেকে মুক্তি দেননি।

 

মাস্টার বাহিনীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঘোষণা দেন, অন্য দস্যুরাও যদি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চায়, তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ ঘোষণার পর ১৫ জুলাই বনদস্যু ইলিয়াস ও মজনু বাহিনীর ১০ জন সদস্য বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের বিএফডিসি জেটিতে ১৭টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৬৬৫টি গুলি ও গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করেন।

 

আত্মসমর্পণকারীরা ছিলেন, ইলিয়াস বাহিনীর প্রধান ইলিয়াস গাজী (২৭), মজনু বাহিনীর প্রধান মজনু গাজী (৪৩), নাছির উদ্দিন (৩৩), রবিউল ইসলাম (২৮), ইসমাইল গাজী (৫০), এনামুল সরদার (২৭), ইদ্রিস আলী (২৮), আবুল কালাম আজাদ (২০), মঞ্জু শেখ (৪৩), জাহাঙ্গীর মোড়ল (২২) ও বাবুল হাসান (২৪)। তারা সবাই খুলনার দাকোপ ও কয়রা উপজেলা এবং সাতক্ষীরার তালা ও শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা।

 

পরে ৮ সেপ্টেম্বর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বরিশালে বনদস্যু শান্ত ও আলম বাহিনী বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করেন। 

 

পশুর নদীর সুখপাড়া খাল সংলগ্ন জঙ্গলে আত্মসমর্পণের সময় শান্ত বাহিনীর ১০ জন এবং আলম বাহিনীর চারজন ২০টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও এক হাজার ৮টি গুলি জমা দেন।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩১ ডিসেম্বর ২০১৬/সুজন/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়