ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

দেখুন বিশ্বের সবচেয়ে দামি আলোকচিত্র

মুম রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৮, ১৯ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দেখুন বিশ্বের সবচেয়ে দামি আলোকচিত্র

পিটার লিক, ফ্যান্টম

|| মুম রহমান ||

ভূতুড়ে ছবি : উপরের ছবিটি দেখুন। অস্ট্রেলিয়ার ফটোগ্রাফার পিটার লিক ছবিটি তুলেছেন। ছবিটির শিরোনাম ‘ফ্যান্টম’। না, এটি কোনো ভূতের ছবি নয়। এরিজোনার এন্টিলোপ ক্যানিয়নে তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটা গুহার ভেতরে গুহার ওপর থেকে আলো আসছে। সেই আলো অবয়ব তৈরি করছে। সাদাকালোতে তোলা এই ছবি বিশ্বের অন্যতম দামি একটি ছবি। দাম কতো? কী মনে হয় আপনার, একটা সাদাকালো ছবির একটা প্রিন্টের সর্বোচ্চ দাম কতো হবে? এক হাজার, দশ হাজার, এক লাখ, দশ লাখ...।

না, আপনি অনুমানের ধারে কাছেও নেই। ২০১৪ সালে ছবিটি নিলামে বিক্রি হয়েছে ৬৫ লাখ ডলারে। বাংলা টাকায় দামটা তাহলে কতো একটু ক্যালকুলেটর টিপে দেখেুন। আর ছবির দাম এতো কেন? সেই হিসাব করতে হলে চিত্রকলা, ফটোগ্রাফি ইত্যাদি বিষয়ে একটু গুগলিং করে নিন। আমি বরং বিশ্বের সবচেয়ে দামি দশটা ছবি মানে ফটোগ্রাফের সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেই। তাতে অন্তত ফটোগ্রাফার আর ফটোগ্রাফির প্রতি অবহেলাটা কমবে।

উল্লেখ্য পিটার লিকের এই ছবি বিক্রির রেকর্ডে এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফটোগ্রাফ। এই ছবিটার সাথে আরো দুটো ছবি মিলিয়ে ওই নিলামে পিটার লিক আয় করেছেন মাত্র ১ কোটি ডলার। কে কিনেছেন সে খবরটি গোপন আছে। আর নিজের সম্পর্কে পিটার লিক বলেছেন, ‘আমার সকল ছবির উদ্দেশ্য হলো প্রকৃতির ক্ষমতা তুলে ধরা এবং কাউকে এর সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করা।’

দয়া করে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ছবিটার দিকে অন্তত এক মিনিট তাকিয়ে থেকে দেখুন, নিজেকে সংযুক্ত করতে পারেন কিনা।

রাইন -২, আন্দ্রেস গুরস্কি


সাজানো প্রকৃতি : বিশ্বের সবচেয়ে দামি ছবিটির মালিক পিটার লিক। কিন্তু এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফটোগ্রাফার বলা যায় আন্দ্রেস গুরস্কিকে। জার্মান এই ফটোগ্রাফার বিশাল আকারের সব ছবি তোলেন। সাধারণত ল্যান্ডস্কেপ (প্রকৃতিচিত্র) কিংবা স্থাপত্যকলার ছবিই বেশি তোলেন। তার তোলা ছবি ‘রাইন-২’ বিশ্বের দ্বিতীয় দামি ছবি। ৪৩ লাখ ডলারে বিক্রি হওয়া এই ছবিটি আপাতভাবে খুবই সাধারণ। ছবিতে দেখা যাচ্ছে একদম চিত্রকলার মতোই অংক কষে সমুদ্র, আকাশ, জমি আর এক চিলতে পথ রয়েছে মাপে মাপে বসানো। রঙের ব্যবহারও খুব হিসাব করে করা। মূলত ছবিটি এমন ছিলো না। গুরস্কি এই ছবি থেকে একটা ফ্যাক্টরি ভবন, পথচারী ও সাইকেল আরোহীদের সরিয়ে দিয়েছেন, যেন দর্শক স্রেফ রাইন নদীর প্রকৃতি অনুভব করতে পারে। এক সাক্ষাৎকারে গুরস্কি বলেন, ‘খুব স্বল্প উপাদান ব্যবহার করে এ ছবি অনেক কথা বলে... আমার জন্যে এটি একটি রূপকধর্মী ছবি যা জীবনের মানে এবং চারপাশের সব কিছু কেমন থাকা উচিত তা তুলে ধরে।’

শিরোনামহীন, সিনথিয়া মরিস সিডনি সারম্যান


সেলফিরও আগে : আপনারা যারা নিজেদের বিরাট বড় সেলফি-কুতুব ভাবেন তারা আমেরিকান ফটোগ্রাফার, চলচ্চিত্রকার সিনথিয়া মরিস সিডনি সারম্যানকে জীবনের আদর্শ হিসেবে নিতে পারেন। এই বিখ্যাত ফটোগ্রাফার যা করেন একলা করেন। তিনি সিরিজ ছবি তোলেন। এবং সবচেয়ে বেশি নিজের ছবি তোলেন। নানা ভঙ্গিতে আত্মপ্রতিকৃতি তোলায় তিনি ওস্তাদ। নিজের স্টুডিওতে নিজেই তিনি স্ক্রিপ্ট করেন, পরিচালনা করেন, মেকআপ দিয়ে, নিজেই মডেল হয়ে নিজের ছবি তোলেন নানা কৌশলে। তারই একটি ছবির নাম ‘শিরোনামহীন-৯৬’। ৯৮ সালে তোলা এই ছবিটি বিক্রি হয়েছিল ৩৯ লাখ মিলিয়ন ডলারে। রাইন-২ এর আগে এটাই ছিলো বিশ্বের সবচেয়ে দামি ছবি। রাইন এসে একে টেক্কা দিলো আর ছবিটিকে পেছনে ফেলে দিলো ফ্যান্টম। সিডনি সারম্যানের এই ছবি এখনও সংগ্রাহকদের কাছে দারূণ জনপ্রিয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ জানুয়ারি ২০১৭/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়