ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

দ্বিতীয় পৃথিবী!

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ২৫ আগস্ট ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দ্বিতীয় পৃথিবী!

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : সৌরজগতের বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার সেরা সম্ভাবনা এবার সম্ভবত পাওয়া গেছে। কারণ প্রাণ ধারণের উপযোগী এমন একটি পাথুরে গ্রহ সম্প্রতি আবিস্কৃত হয়েছে, যা কিনা পৃথিবী থেকে মাত্র ৪ আলোকবর্ষ দূরে। ফলে ভবিষ্যতে গ্রহটিতে সহজেই মহাকাশ যান পাঠিয়ে গবেষণা করা যাবে।

 

এই গ্রহটিকে বলা হচ্ছে, দ্বিতীয় পৃথিবী। তরল পানির উপযোগী পরিবেশ হিসেবে গ্রহটি এর নক্ষত্র থেকে সঠিক দূরত্বে রয়েছে। যার মানে দাড়াচ্ছে, গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্বের বাস্তবিক সম্ভাবনা রয়েছে।

 

সৌরজগতের বাইরে এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত এক্সোপ্ল্যানেটগুলোর মধ্যে এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে নিকটতম। গবেষকদের দাবী গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্ব অনুসন্ধানের অভিযান ‘আমাদের জীবদ্দশার মধ্যে’ সম্ভব হতে পারে।

 

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা স্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছেন, আমাদের নিকটতম নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টরিকে প্রদক্ষিণ করছে নতুন এই গ্রহটি। ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরি টেলিস্কোপ ব্যবহার করে আবিষ্কৃত রোমাঞ্চকর এই নতুন বিশ্বকে ‘প্রক্সিমা বি’ নাম দিয়েছেন গবেষকরা।  লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গুইলিম অ্যানগালাডার নেতৃত্বে ৩০ জন আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি দল গ্রহটি আবিষ্কারে কাজ করেছেন।

 

হাজারের বেশি এক্সোপ্ল্যানেট এখন পর্যন্ত আবিস্কৃত হয়েছে, কিন্তু এটি অন্যগুলো থেকে ভিন্ন। এটি আমাদের নাগালের মধ্যে মাত্র চার আলোকবর্ষ দূরে। যদিও চার আলোকবর্ষ অনেক দীর্ঘ একটা পথ, ২৫ ট্রিলিয়ন মাইলেরও বেশি। বর্তমানে যে প্রযুক্তির রকেট রয়েছে, তাতে এই দূরত্ব পারি দিতে ৭৬ হাজার বছর লেগে যাবে। ফলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যেই ভবিষ্যত প্রজন্মের অতিদ্রুত মহাকাশযান, গ্রহটি ভ্রমণে সক্ষম হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

 

ভবিষ্যতের আরো অনেক অগ্রগতির সময়ে পৃথিবী থেকে মহাকাশচারীদের পদচারণা ঘটতে পারে গ্রহটিতে। এসব কিছুই হতে পারে কারণ প্রক্সিমা সেন্টরি নক্ষত্রটি অনুজ্জ্বল এবং এর ৪.৬ মিলিয়ন মাইল দূরত্ব থেকে প্রদক্ষিণ করছে গ্রহটি। যা পৃথিবী ও সূযের মধ্যের দূরত্বের মাত্র পাঁচ শতাংশ। একবার প্রদক্ষিণ করতে গ্রহটি সময় নেয় মাত্র ১১.২ দিন।

 

যেহেতু প্রক্সিমা সেন্টরি নক্ষত্রটি অনুজ্জ্বল বামন নক্ষত্র, সূর্যের চেয়ে অনেক কম তাপের এবং প্রক্সিমা বি গ্রহটি উপযুক্ত দূরত্বে অবস্থিত হওয়ায় এর তাপমাত্রা খুব গরম নয় আবার খুব ঠান্ডাও নয়, সেহেতু মনে করা হচ্ছে গ্রহটির তাপমাত্রা তরল পানির উপযোগী। তাই গ্রহটিকে ‘দ্বিতীয় পৃথিবী’ বা ‘বাসযোগ্য স্থান’ বলা হচ্ছে।

 

গ্রহটির পৃষ্ঠের তাপমাত্রা মাইনাস ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হতে পারে। অন্যদিকে গ্রহটি এর নক্ষত্রে থেকে শক্তিশালী অতিবেগুণী রশ্মি এবং এক্স-রে দ্বারা প্রভাবিত, ফলে প্রাণের জন্য তা কঠোর পরিবেশও হতে পারে।

 

কিন্তু বিজ্ঞানীরা প্রক্সিমা বি গ্রহটিতে প্রাণের উপস্থিতির সম্ভাবনা নিয়েই বেশি উত্তেজিত।

 

লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গুইলিম অ্যানগালাডা বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত অনেক এক্সোপ্ল্যানেট পাওয়া গেছে এবং ভবিষ্যতে আরো পাওয়া যাবে। কিন্তু সৌরজগতে নিকটবর্তী কক্ষপথে নতুন গ্রহ প্রক্সিমা বি আবিষ্কৃত হওয়া এক অনন্য অভিজ্ঞতা।’

 

প্রক্সিমা বি গ্রহ এবং এর আবহাওয়া নিয়ে দুইটি পৃথক গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, গ্রহটির আবহাওয়া তরল পানির উপযুক্ত। তাই প্রাণের উপস্থিতিও থাকতে পারে।

 

তথ্যসূত্র: ডেইলি মেইল

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ আগস্ট ২০১৬/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়