ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সতর্কতামূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা

নিয়াজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:২২, ৩০ জুলাই ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সতর্কতামূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) জন্য সতর্কতামূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে গভর্নর ড. আতিউর রহমান এ মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন।

সতর্কতামূলক মুদ্রানীতিতে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ ও বেসরকারি খাতে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে বার্ষিক ঋণ প্রবৃদ্ধি সাড়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ২ শতাংশ ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও উপদেষ্টাগণ এবং শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে গভর্নর বলেন, ‘নতুন এ মুদ্রানীতি আগের চেয়ে অনেক নমনীয়। একইসঙ্গে বিনিয়োগবান্ধব।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিজার্ভ মুদ্রা যোগানে আগের অর্থবছরের ১৪.৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বিপরীতে ২০১৬ অর্থবছরের জন্য প্রাক্কলিত প্রবৃদ্ধি ১৬ শতাংশ। দেশে বিনিয়োগ কার্যক্রম জোরদার হওয়ার ফলে ব্যাংকিং খাতের নীট বৈদেশিক সম্পদের প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের চেয়ে মন্থর হয়ে ৫.২ শতাংশে দাঁড়াবে। বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের বর্তমান বৃদ্ধি হারেও শিথিলতা আসবে।’

নতুন অর্থবছরের মুদ্রানীতি কার্যক্রম ঋণ যোগানের প্রবৃদ্ধি প্রকৃত দেশজ উৎপাদন প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ মাত্রায় পরিমিত রাখলেও পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট এবং খাদ্য ও জ্বালানি বহির্ভূত কোর মূল্যস্ফীতিতে নিম্নগামী প্রবণতা সুস্পষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নীতি সুদহার অর্থাৎ রেপো, রিভার্স রেপো সুদহার সঙ্গতিপূর্ণ মাত্রায় নামিয়ে আনার বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক দ্বিধান্বিত হবে না বলে গভর্নর জানান।

আতিউর রহমান আরো জানান, নতুন অর্থবছরের মুদ্রানীতি কার্যক্রমের আওতায় অন্তর্ভুক্তিমূলক, পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন উৎপাদনমুখী উদ্যোগমালায় দক্ষভাবে সঞ্চালনের লক্ষ্যে আমাদের আর্থিক খাতে ঋণ শৃঙ্খলা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, কর্পোরেট সুশাসন ও জবাবদিহিতার ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবিড় নজরদারির বিষয়গুলো ২০১৬ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণাপত্রে পুনরুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি আরো স্পষ্টভাবে আলোকপাত করা হয়েছে আমাদের চালু করা অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশবান্ধব মুদ্রা ও আর্থিক নীতিভঙ্গিগুলোর ওপর।

গভর্নর বলেন, ‘উন্নয়নমুখী কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনানুগ এখতিয়ার ও দায়িত্বের আওতায় এসব নীতিমালার ওপর এই গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এই এখতিয়ার ও দায়িত্বের ভিত্তিতে দেশের আর্থিক খাতে সামাজিক দায়বোধসম্পন্ন অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন মূলধারাভুক্ত করার বাংলাদেশের উদ্যোগগুলো বহির্বিশ্বে ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করছে। বিশেষ করে এসব উদ্যোগ সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ক্ষুন্ন না করে বরং আরো জোরদার করেছে।’

 

গভর্নর আরো বলেন, ‘বিনিয়োগের জন্য অবকাঠামোগত সুবিধার অপ্রতুলতা, বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি মন্দা এবং দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক অস্থিরতাজনিত বিঘ্নের প্রেক্ষাপটে ব্যাংকিং খাত থেকে অভ্যন্তরীণ ঋণ যোগানের প্রবৃদ্ধি প্রক্ষেপিত ১৭.৪ শতাংশের চেয়ে নিচে নেমে ২০১৫ সালে গত অর্থবছরের শেষ দিকে ছিল ১০.৪ শতাংশ। জুনে এই মাত্রা কিছুটা বাড়লেও শেষমেষ এগারো শতাংশের নিচে থাকবে বলে মনে হয়। বিশেষ করে সরকারি খাতে জুন নাগাদ ঋণ প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক থাকায় এটা হবে বলে ধারণা করা যায়। বেসরকারি খাতে অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রবৃদ্ধিও জুন নাগাদ ১৫.৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার নিচে ১৩.৬ শতাংশের মতো থাকবে বলে মনে হয়।’

এসময় সাংবাদিকদের জানানো হয়, নতুন অর্থবছরে নতুন দু’টি অর্থায়ন সূত্র যোগ হবে। প্রথমটি হলো- অভ্যন্তরীণ ও রপ্তানি উভয় বাজারের জন্য উৎপাদনমুখী প্রকল্পগুলোর মধ্য বা দীর্ঘমেয়াদি বৈদেশিক মুদ্রা অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাংক থেকে আহরণ করা ৩০০ মিলিয়ন ডলারের একটি তহবিল। আর দ্বিতীয়টি হলো রপ্তানিমুখী বস্ত্র, পোশাক ও চামড়া শিল্পে পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রক্রিয়া অবলম্বনের অর্থায়নের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব সূত্রের ২০০ মিলিয়ন ডলার পুন:অর্থায়ন সহায়তা।

 

 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জুলাই ২০১৫/নিয়াজ/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়