ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

নাটকের ফ্রেমে চা-শ্রমিক

মামুন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১ জুলাই ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নাটকের ফ্রেমে চা-শ্রমিক

দেউন্দি চা-বাগানে অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচীর সঙ্গে নাট্যকার ও নির্দেশক সুনীল বিশ্বাস

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ : চা-শ্রমিকরা মানুষ। তারাও বাঁচতে চায়। তাদের অধিকার রয়েছে। এখনও তারা পাচ্ছে না পূর্ণ নাগরিক অধিকার। কেন পাবে না। তাদের শ্রমে দেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। আর তারাই এ পর্যন্ত রয়ে গেল অবহেলিত। এটা মেনে নিতে পারছেন না এক প্রতিবাদী কন্ঠস্বর। তিনি হলেন নাট্যকার ও নির্দেশক সুনীল বিশ্বাস।

 

সুনীল বিশ্বাসের জন্ম চুনারুঘাটের পাইকপাড়ার দেউন্দি চা-বাগানে, ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৫ সালে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে গিলানী চা-বাগান ও পরে দেউন্দি চা-বাগান স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে যোগ দেন দেউন্দি চা-বাগানে হাজিরা করণীক হিসেবে।

 

এর বাইরে তিনি চা-শ্রমিকদের নিয়ে গড়া প্রতীক থিয়েটারের কর্ণধার। এ ছাড়া চা-শ্রমিকদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। প্রতিবাদের হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন নাটক, গান ও বই লেখা। এসবে চা-শ্রমিকদের কষ্টের চিত্র তুলে ধরে এর সমাধান দাবী করছেন।

 

 

সর্বশেষ তিনি প্রতীকের ২৯ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে ‘নাটকের ফ্রেমে চা-শ্রমিক’ নামে একটি বই লিখেছেন। এতে অধিকার বঞ্চিত চা-শ্রমিকের জীবন-জীবিকার চালচিত্র উঠে এসেছে। তিনি এ পর্যন্ত ১৭টি নাটক লিখেছেন। সবগুলোই চা-শ্রমিকদের জন্য। ‘নাটকের ফ্রেমে চা-শ্রমিক’ বইটি উৎসর্গ করেছেন পিতা ও মাতাকে। যারা আর এ ভুবনে নেই। তারা সারা জীবন চা-শিল্পের উন্নয়নে শ্রম দিয়ে গেছেন।

 

আলাপকালে নাট্যকার ও নির্দেশক সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘চা-শ্রমিকদের কষ্ট আর সহ্য হচ্ছে না।’ কারণ- সেই ছোট বেলা থেকেই এদের দুরবস্থা দেখে আসছেন। তার জিজ্ঞাসা, আধুনিক যুগেও এরা কেন দৈনিক মজুরী ৬৯ টাকা পাবে? এ টাকায় পরিবার চালানো সম্ভব নয়। অথচ তারা সারা দিন শ্রম দিচ্ছেন। এ ছাড়াও নানাভাবে শ্রমিকদের অধিকার বঞ্চিত থাকতে হচ্ছে। এ অধিকার বঞ্চিত হওয়ার কথাই লেখায়, গানে আর নাটকে তুলে ধরছেন। সুনীল বিশ্বাস বলেন- ‘অধিকার পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত আমার প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।’

 

প্রসঙ্গত, ৭টি ভ্যালির মাধ্যমে হবিগঞ্জসহ দেশে প্রায় ৩৫৮টি বাগান রয়েছে। এরমধ্যে ১৫৮ টি বাগানে ফ্যাক্টরি রয়েছে। আর শ্রমিক রয়েছে প্রায় ২০ লাখ। হবিগঞ্জের বাগানগুলোতে শ্রমিক লক্ষাধিক। এর মধ্যে বেশির ভাগ নারী শ্রমিক চা-পাতা উত্তোলনে জড়িত।

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/১ জুলাই ২০১৫/ মামুন/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়