ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নাসির হত্যার বাদীকে মাদক মামলায় চালান

জিসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:০৭, ২ জুলাই ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নাসির হত্যার বাদীকে মাদক মামলায় চালান

নাসির

নিজস্ব প্রতিবেদক : দিনটি ছিল ২০১৪ সালের ১১ অক্টোবর। বোনকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় ভাষানটেক বস্তি এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন নাসির। এ ঘটনায় বড়ভাই মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার বাদী মোশারফকে গতকাল বুধবার বিকেলে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবার।

 

পরিবারের অভিযোগ, কোনো ধরনের কারণ না বলেই ভাষানটেক থানা পুলিশ ক্যান্টনমেন্ট এলাকার মাছের খামার থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। এসময় দুজন পুলিশের পোশাকধারীর সঙ্গে একজন সাদা পোশাকেও ছিলেন। এ ছাড়া তাকে পুলিশের কোনো গাড়িতে না তুলে একটি প্রাইভেটকারে করে নিয়ে যাওয়া হয়।

 

এবিষয়ে মোশারফের স্ত্রী রিনা আক্তার বলেন, বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে ভাষানটেক থানার এসআই কামরুল ইসলাম দুইজন পুলিশ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে, ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে একটি মাছের খামার থেকে তার স্বামীকে জোর করে তুলে নিয়ে যান।

 

খবর পেয়ে তিনি থানায় যোগাযোগ করেন। কিন্তু থানার ডিউটি অফিসার তার কোনো সন্ধান দিতে পারেননি। পরে ওই এসআইয়ের নম্বরে ফোন করেও তার কোনো খোঁজ মেলেনি। এ ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলেও পুলিশ তা নিতে রাজি হয়নি।

 

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী রাইজিংবিডিকে বলেন, বুধবার দুপুরের পর মোশারফসহ তিনজন খামারে কাজ করছিলেন। এসময় ভাষানটেক থানার এসআই কামরুল  দুইজন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে খামারে আসেন। তারা জোর করে মোশারফকে গাড়িতে তুলতে চাইলে তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়। এতে এসআই কামরুল ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে মারধর করে মোশারফকে তুলে নিয়ে যান।

 

তারা আরো বলেন, মোশারফকে পুলিশ থানার গাড়িতে না নিয়ে একটি প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যান। এসময় দুইজন পুলিশ সদস্যের পোশাক পরা থাকলেও অপর একজন সাদা পোশাকে ছিলেন।

 

এ বিষয়ে ভাষানটেক থানায় যোগাযোগ করা হলে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ রাইজিংবিডিকে জানান, গতকাল ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে ধামালকোট এলাকা থেকে মোশারফকে ইয়াবাসহ আটক করা হয়েছে। আজ তাকে মাদকের মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।

 

গত বছরের ১১ অক্টোবর বোনকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় ভাই নাসির খুন হওয়ার পর মোশারফ মামলা করেন। আসামি করেন, ছালাম, আলতাফ, বাবলু, মামুন, কানা আলম, দাঁত ভাঙ্গা খোকন, চুক্ষা শরীফ, হাবীব, ট্যাবলেট কামাল, জান শরীফ, সুজন, সোহেল, নবী ও মালেক নামে ব্যক্তিদের। মামলাটি আলোর মুখ না দেখায় সেটি এখন ডিবি পুলিশ তদন্ত করছে। সেখানেও তদন্ত ভাটা পড়ে রয়েছে।

 

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, নাসির হত্যার পর তাদের পুরো পরিবারই এখন ফেরারি। খুনিদের হুমকিতে ওই এলাকা ছেড়ে চলে গেছে নিহতের পরিবার। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীরা পুলিশের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে ভাষানটেকে অবৈধ ব্যবসাও চালিয়ে যাচ্ছে। আসামিরা ভাষানটেক এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ খুনিদের ধরছে না। বরং খুনিদের দায়ের করা কাউন্টার মামলায় জেলও খেটেছেন মামলার বাদী মোশারফ।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ জুলাই ২০১৫/জিসান/দিলারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়