ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

নিউজপ্রিন্ট মিলের জমি : বিক্রি নয়, শেয়ার চায় কর্তৃপক্ষ

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৭, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নিউজপ্রিন্ট মিলের জমি : বিক্রি নয়, শেয়ার চায় কর্তৃপক্ষ

খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিল

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, খুলনা : ১৪ বছরেও চালু হয়নি খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিল। ২০০২ সালের ৩০ নভেম্বর সর্বশেষ সাইরেন বাজিয়ে বন্ধ হয় মিলটি। এখন আর বাজে না সাইরেন, চালু হয়নি মিল।

 

এদিকে মিল চালু হওয়ার প্রত্যাশার মধ্যে দিন কাটছে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীদের। তবে দীর্ঘদিন পর মিলের জমিতে নতুন করে একটি কাগজ কল  স্থাপন এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সরকার।

 

এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কারখানার ভেতরে অব্যবহৃত ৫০ একর জমি কিনবে সরকার। যার মূল্য ধরা হয়েছে ৮৬৪ কোটি ২৪ লাখ ১৩ হাজার ৬২০ টাকা। তবে জমি বিক্রি না করে সমমূল্যের শেয়ার চায় মিল কর্তৃপক্ষ।

 

২০১৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে মিলের অব্যবহৃত জমিতে ৭৫০-৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার কথা। নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (নওপাজেকো) এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা।

 

ইতিমধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ৫০ একর জমির মূল্য নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থা (বিসিআইসি)। এ বিষয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর মিল অভ্যন্তরের জমি, স্থাপনা ও গাছের মূল্য ৮৬৪ কোটি ২৪ লাখ ১৩ হাজার ৬২০ টাকা নির্ধারণ করে তারা। পরে জমি বিক্রির পরিবর্তে সমমূল্যের শেয়ার মিলকে প্রদানের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেয় বিসিআইসি।

 

এদিকে মিলের ওই জমির মূল্য নির্ধারণের জন্য আট সদস্যের কমিটি গঠন করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। বর্তমান বাজার দরের আলোকে জমির মূল্য নির্ধারণ করে ২১ কার্য দিবসের মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য কমিটিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

 

মিল সূত্রে জানা যায়,  সোনালী ব্যাংকের ১২৭ কোটি টাকা, বিসিআইসির ২৫০ কোটি টাকা, ফার্নেস অয়েল বাবদ বিদ্যুৎ বিভাগ এবং গেওয়া কাঠের জন্য সুন্দরবন বিভাগের ৪৪৩ কোটি টাকা মিলের কাছে পাওনা রয়েছে। সব মিলিয়ে এ মিল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে দেনা রয়েছে ৮২০ কোটি টাকা।

 

সোনালী ব্যাংক খুলনা কর্পোরেট শাখার ডিজিএম আবু হোসেন জানান, যেহেতু মিলের সম্পত্তি বন্ধক রয়েছে সে কারণে ব্যাংকের ঋণ সুদে আসলে পরিশোধ করতে হবে। মিলের জমির একাংশ বিক্রি সম্পর্কে ব্যাংক অবহিত নয় বলে তিনি জানান।

 

সামাজিক বনবিভাগের ডিএফও মো. রেজাউল করিম জানান, মিলের জমির এক অংশের ওপর বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলা হলে পরিবেশের ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব পড়বে কিনা তার জন্য সিইজিআইএস নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে গবেষণার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

 

মিলের প্রশাসনিক বিভাগীয় প্রধান মো. নুরুল্লাহ বাহার বলেন, খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলের স্থানে ৪৫ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতার একটি কাগজ কল তৈরির প্রস্তাবনা রয়েছে। কাগজ কলটিতে সাদা প্রিন্টসহ ৫ ধরনের কাগজ তৈরি করা যাবে।

 

উল্লেখ্য, মহানগরীর খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের ভৈরব নদীর তীরে ৮৭ দশমিক ৬১ একর জমির ওপর ১৯৫৯ সালে স্থাপিত হয় খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিল।

 

 

রাইজিংবিডি/খুলনা/২৪ ডিসেম্বর ২০১৬/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/রিশিত

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়