ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নৃশংস : ৪ ব্যাগে মা-মেয়ের টুকরো দেহ

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:২৫, ৩০ আগস্ট ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নৃশংস : ৪ ব্যাগে মা-মেয়ের টুকরো দেহ

উদ্ধারকৃত টুকরো লাশের ব্যাগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এবার নৃশংসতার ভয়াবহ উদাহরণ তৈরি করলেন এক ব্যাংক ম্যানেজার। চার ব্যাগ ভর্তি রক্তাক্ত লাশের টুকরো গঙ্গার পানিতে ফেলতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লেন এই ম্যানেজার। এই ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে শনিবার পশ্চিমবঙ্গের শেওড়াফুলিতে।

 

পুলিশের ধারণা, অবৈধ সম্পর্কের জেরেই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড। খুন করা হয়েছে ৩২ বছরের সুচেতা চক্রবর্তী এবং তার সাড়ে পাঁচ বছরের শিশুকন্যা দীপাঞ্জনাকে। ব্যাংক ম্যানেজার সমরেশ সরকার মা ও মেয়েকে খুন করে শুক্রবার গোটা রাত ধরে তাদের দেহ বঁটি, ছুরি দিয়ে টুকরো টুকরো করে কেটেছেন। তারপর পুরেছিলেন ব্যাগে। তবে শেষ পর্যন্ত ধরা পড়েছেন নাটকীয়ভাবে। গঙ্গার পানিতে লাশের টুকরোভর্তি ব্যাগ ফেলার সময় ধরা পড়েন তিনি।

 

শেওড়াফুলির ঘাটে এসে তিনি যখন ব্যাগগুলো গঙ্গায় ফেলতে শুরু করেন, তখন হইচই করে ওঠেন উপস্থিত মানুষজন। তাদের সন্দেহ হয়। দুটি ব্যাগ ফেলার পর তারা সমরেশকে বলেন, ব্যাগ কেন ফেলছেন? সমরেশ তেড়ে গিয়ে বলেন, আমি আমার ব্যাগ ফেলছি, আপনাদের কী? ব্যাগে অপ্রয়োজনীয় কাগজপত্র রয়েছে, তাই ফেলে দিচ্ছি। সমরেশের এই বক্তব্যে তাদের সন্দেহ বাড়ে। শুরু হয় বচসা। তার মধ্যেই বাকি দুটি ব্যাগ গঙ্গায় ফেলে দেন। যাত্রীরা ঘাটে নেমে চেপে ধরেন সমরেশকে। তাকে আটকে দেন। খবর দেওয়া হয় শেওড়াফুলি ফাঁড়িতে। পুলিশ পৌঁছে গঙ্গায় ফেলে দেওয়া দুটি ব্যাগ উদ্ধার করে। সেই ব্যাগ খুললে সকলে আঁতকে ওঠেন। একটি ব্যাগে ছিল এক মহিলার মাথা থেকে কোমরের অংশ পর্যন্ত। অন্য ব্যাগে রয়েছে কোমরের নিচ থেকে পায়ের পাতাটুকু।

 

সমরেশ সরকার দুর্গাপুরের সেন্ট্রাল ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মামরাবাজার শাখার ম্যানেজার। দুই বছর আগে সেখানে চাকরি করতে যান। নিজের বাড়ি উত্তর চব্বিশ পরগনায়। বিবাহিত সমরেশের দুই কন্যা। একজন বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী, আরেকজন পড়ে নবম শ্রেণিতে। সেখানেই গ্রাহক সুচেতার সঙ্গে তার আলাপ হয়। সেই আলাপই ধীরে ধীরে গভীর প্রণয়ের চেহারা নেয়। সমরেশ ব্যাংকের কাছেই বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। ছুটিছাটায় যেতেন স্ত্রী, কন্যাদের কাছে। অন্যদিকে সুচেতার বিয়ে বসিরহাটে হলেও থাকতেন দুর্গাপুরে বাপের বাড়িতে। যদিও বাবা, মা দুজনেই মারা গেছেন। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে চলে এসেছিলেন।

 

ছয়-সাত মাস ধরে সমরেশের সঙ্গে সুচেতা দেবীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গভীর হতে থাকে। প্রায়ই সুচেতার ফ্ল্যাটে গিয়ে থাকতেন সমরেশ। সমরেশের বাড়িতেও সুচেতার যাওয়া-আসা ছিল। বেশ কয়েকদিন যাবৎ সুচেতা বিয়ের জন্য সমরেশকে চাপ দিচ্ছিলেন। সমরেশ রাজি হচ্ছিলেন না। ঘটনার আগের দিন সুচেতার চাপ বাড়ে। সেই চাপ সামাল দিতে গিয়েই খুন করে বসেন সমরেশ। এমনটাই অনুমান পুলিশের।

 

পুলিশের মনে প্রশ্ন : ঠান্ডা মাথায় দুটি খুন কী করে করলেন সমরেশ?  দুজনকে খুন করে তাদের মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলা একজনের পক্ষে কী করে সম্ভব?  সমরেশ কেন রক্তাক্ত লাশের টুকরোগুলো এতদূর নিয়ে এসেছিলেন? মোট চারটি ব্যাগ নিয়ে তিনি একা কী করে এতটা পথ এলেন? পুলিশ এখন নানা প্রশ্নের হিসেব মেলাতে ব্যস্ত।

 

তথ্য সূত্র : আজকাল

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ আগস্ট ২০১৫/শাহ মতিন টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়