ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

পরীক্ষা পলাতক ছাত্র ।। রণজিৎ সরকার

রণজিৎ সরকার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৯, ২৮ জুলাই ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পরীক্ষা পলাতক ছাত্র ।। রণজিৎ সরকার

অনিক ভালো ছাত্র। সবাই তাকে ভালোবাসে। তার অভ্যাস আছে। খারাপ অভ্যাস। ওর বন্ধু সরাফ। সরাফেরও অভ্যাস আছে। তার অভ্যাস সেলফি তোলে। অনিকের সে অভ্যাস নেই। তার অভ্যাস পালানো। পরীক্ষার হল থেকে পালানো। পরীক্ষার হলে ঢুববে। পরীক্ষা শুরু হবে। একটু পর স্যারদের টয়লেটের কথা বলে বের হয়।

 

সেদিন টয়লেটের কথা বলে পরীক্ষার হল থেকে বের হয়েছে অনিক। ওর বন্ধুরা পরীক্ষার হলে। পরীক্ষা দিচ্ছে। বার্ষিক পরীক্ষা। হেলাল স্যার মীরা ম্যাডামকে বললেন, ‘ম্যাডাম, অনিক তো এখনো রুমে ফিরল না।’

 

মীরা ম্যাডাম বললেন, ‘আপনি বাইরে গিয়ে দেখে আসেন। ও কোথায়। কী করে। রুমের আমি আছি।’

‘ঠিক আছে ম্যাডাম। আপনি রুমে থাকেন। আমি বাইরে যাই।’

‘ঠিক আছে, যান।’

হেলাল স্যার রুম থেকে বের হলেন। টয়লেটে গেলেন। সেখানে নেই। স্কুলের সীমানায় কোথাও নেই অনিক।

হেলাল স্যার রাস্তায় বের হলেন। যাকে সামনে পায় তাকেই বলেন, অনিকে দেখেছেন? কেউ অনিকের কথা বলতে পারে না।

 

স্কুলের পাশেই বটগাছ। অনিক সেই বটগাছে উঠে বসে আছে। রাস্তা দিয়ে একটা লোক বানর নিয়ে যাচ্ছেন। অনিক দেখতে পেল। তারপর গাছ থেকে নামল। বানরওয়ালা কিছু দূর গিয়ে খেলা দেখাতে শুরু করলেন। ধীরে ধীরে অনেক লোক জড়ো হলো। অনিক খেলা দেখছে। স্যার ফেরা পথে দেখেন, বানর খেলা।

স্যার ভাবলেন, এখানে থাকতে পারে অনিক। স্যার সেখানে গেলেন।  বানর খেলা দেখা বাদ দিয়ে চার পাশে খুঁজতে লাগলেন অনিককে। অনিকের দেখা পেলেন। সঙ্গে সঙ্গে অনিকের কান ধরলেন।

অনিক ভাবল, বাঁচা গেল। কোনো বন্ধু পাওয়া গেল। খুশি হয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখে হেলাল স্যার।

 

হেলাল স্যার এবার তার হাতের ডানাটা শক্ত করে ধরে বললেন, ‘এই যে, তুই এখানে, আমি তোকে খুঁজে বেড়াচ্ছি সারা এলাকা। চল এক্ষুনি পরীক্ষার হলে।’

স্যার টানতে টানতে নিয়ে যেতে লাগলেন অনিকে। সবাই অবাক হলেন শিক্ষক-ছাত্রের কাণ্ড দেখে।

 

স্কুলের বারান্দায় উঠতেই কাতর গলায় অনিক বলল, ‘এখন তো অনেক সময় চলে গেছে।’

স্যার বললেন, ‘সেটাই তো দেখতে চাই, পরীক্ষা দিবি আর দিয়ে ফেল করবি, সেটাই দেখব।’

হেডস্যার হল পরিদর্শনে এসে বললেন, ‘ওকে কাগজ আর প্রশ্নপত্র দাও তো মীরা।’

মীরা ম্যাডাম বললেন, ‘একঘণ্টা তো হয়ে গেছে, এখন প্রশ্নপত্র?’

হেডস্যার বললেন, ‘তাতে কিছু হবে না, আমি বলছি, দিয়ে দাও! আর লক্ষ রেখো, যেন পালিয়ে না যায়। ওর একটু পালাবার অভ্যাস আছে।’

 

 

পরীক্ষার হলে ওর বন্ধুরা হাসতে লাগল। হেলাল স্যার জোরে ধমক দিলেন সবাইকে। সবাই মনোযোগ দিয়ে পরীক্ষার খাতায় লিখতে লাগল। লিখতে লাগল অনিকও।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ জুলাই ২০১৫/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়