ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

পানির তলায় এসব কী?

সার্জিন শরীফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৩৫, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পানির তলায় এসব কী?

সার্জিন শরীফ : বিচিত্র পৃথিবীর রহস্যময় পরিবেশে বিচরণ করছে হাজার-হাজার বিচিত্র প্রাণী। প্রাণীজগতের বৈচিত্র্য সবসময়ই মানুষের বিস্ময়ের উদ্রেক করেছে।

 

আফ্রিকা কিংবা আমাজনের গহীন অরণ্য থেকে গভীর সমুদ্রের অতল গহ্বর, সবখানেই ছড়িয়ে আছে বৈচিত্র্যময় চেনা-অচেনা প্রাণী।

 

অজ্ঞাতনামা কিম্ভূতদর্শন সব প্রাণীদের বিশেষজ্ঞরা আলাদা করতে না পেরে সাধারণভাবে ‘অ্যালিয়েন নামেই অভিহিত করে থাকেন। ভুলে গেলে চলবে না যে এই ‘অ্যালিয়েন’-রা শুধু ভিন গ্রহেই না, আমাদের এই ধরণীর বুকেও দিব্যি বিচরণ করে বেড়াচ্ছে।

 

আর জলের অতলে? না, পরিমাপ করা যায় এর গভীরতা, না আছে জলের রহস্যের শেষ। সমুদ্র তাই মাঝে মাঝেই দেখা মেলে জলের তলের অ্যালিয়েনদের।

 

রাশিয়ান মৎস্য শিকারী রোমান ফেডোরটসভ্-এর সংগ্রহে আছে এমনই কিছু সামুদ্রিক অ্যালিয়েন, যেগুলোর ছবি নিজের টুইটারে আপলোড করার পরে তিনি হয়ে গেছেন ‘বিখ্যাত অ্যালিয়েন সংগ্রাহক’!

 

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি এই যে, রোমান ফেডোরটসভ্‌-এর সংগ্রহে থাকা জলের তলের এসব প্রাণীগুলোর ছবি দেখার পরে আপনি অবকাশ যাপনের জন্য সমুদ্রে যেতে অন্ততঃ দুইবার ভাববেন।

 

তার বিচিত্র সংগ্রহশালায় রয়েছে আটপেয়ে আর্থ্রোপোডা থেকে শুরু করে ছুরির মত ধারলো দাঁতের মাছ। ফেডোরটসভ্‌ মূলতঃ উত্তর-পশ্চিম রাশিয়ার একটি মৎস্যবন্দরের মাছ ধরা ট্রলারে কাজ করেন।

 

মস্কো টাইমস-এর রিপোর্ট অনুসারে তিনি চলতি বছরের শুরুর দিকে তার এই বিচিত্র সংগ্রহগুলোর ছবি জনসম্মুখে প্রকাশ করেন। নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি তিনি এসব ছবি ফ্লিকারেও আপলোড করেন।

 

 

সবগুলো বিচিত্র প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত প্রাণী হল চুনট হাঙর বা ফ্রিলড শার্ক। এটি একটি অত্যন্ত দুর্লভ এবং ধূর্ত প্রকৃতির ভয়ংকর দর্শন হাঙর। এর গায়ের গড়ন কিছুটা সামুদ্রিক ঈল মাছের মতো। যার রয়েছে তীক্ষ্ম-ধারালো দাঁতের সারি। বৈশিষ্ট্যগত দিক দিয়ে আদিম প্রকৃতির কিছু হাঙরের সঙ্গে মিল থাকার কারণে একে ‘জীবন্ত ধ্বংসাবশেষ’ বলে অভিহিত করেন অনেকেই।

 

 

উদ্ভট দর্শন এই প্রাণীটির ছবি টুইটারে প্রকাশিত হওয়ার পরে শুরু হয় বিতর্ক। অনেকেই এটিকে গভীর সমুদ্রের ড্রাগন ম্যালাকোস্‌টাস প্রজাতির বলে অভিহিত করেন। কিন্তু ফেডোরটসভ্ বলেন, ‘আসলে আমরাও এখন পর্যন্ত সন্দিহান যে এটি আসলে কি?

 

 

ফেডোরটসভ্‌-এর সংগ্রহে রয়েছে উদ্ভট প্রজাতির ‘ঘোস্ট শার্ক’। ঘোস্ট শার্ক এর চোয়ালের আকৃতি বেশ বড় এবং এতে রয়েছে বেশ ধারালো দাঁতের সারি। বিমানের ডানার মত সুপ্রশস্ত পাখনার জন্য প্রাণীটি বিখ্যাত। এর সবুজ রঙয়ের চোখ দুটো কেবল আলোর সংস্পর্শে এলেই জ্বলজ্বল করতে থাকে। পানির নিচে এর চোখ দেখা যায় না।

 

 

অন্য একটি উল্লেখযোগ্য সংগ্রহ হচ্ছে, কালো রঙের স্ক্যাবার্ডফিশ। এর দাঁতগুলো কাঁচের মতো স্বচ্ছ এবং অত্যন্ত ধারালো। শক্তিশালী চোয়ালের নিচের অংশ ওপরের অংশের তুলনায় সামনের দিকে এগোন।

 

 

আরেকটি উদ্ভট প্রকৃতির মাছ হল র‌্যাটেলস। যা সমুদ্রপৃষ্ঠের একেবারে নিচের দিকে বাস করে। এর চোখের রঙ লাল এবং ঠোঁটগুলো ক্ষয়ে যাওয়া ধরনের। এরা সাধারণত আর্কটিক এবং অ্যান্টার্কটিক সাগরে বাস করে।

 

 

ফেডোরটসভ্ এর সংগ্রহের সব অ্যালিয়েনরাই যে ‘মাছ’, ব্যাপারটা কিন্তু সেরকম নয়। তার সংগ্রহে রয়েছে কমলা রঙের ‘সামুদ্রিক মাকড়সা’। যার রয়েছে ভাঁজ করা যায় এমন আটটি পা এবং যার আয়তন পূর্ণবয়স্ক একজন মানুষের হাতের মতো। এটি ম্যালাকোসটাস প্রজাতির গভীর সমুদ্রে বাস করা একটি প্রাণী। কোনো এক অজানা কারণেই এরা সাধারণ মাকড়সার থেকে আকৃতিতে বেশ বড়সড় হয়ে থাকে।

 

 

গভীর সমুদ্রে এসব সামুদ্রিক মাছের আকৃতি এবং চেহারায় কখনো কখনো এমন উদ্ভট দর্শনের লক্ষ্যণীয় পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। এর কারণ সমুদ্রের নিচের বায়ুচাপ এবং পানির ওপরের বায়ুচাপের তারতম্য। পারিপার্শ্বিকের এমন প্রভাবের প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল ‘ব্লবফিশ’, যাকে অভিহিত করা হয়েছিল ‘পৃথিবীর সবচেয়ে কুৎসিৎ প্রাণী’ হিসেবে।

 

 

 

এছাড়া ফেডোরটসভ্‌ এর সংগ্রহে রয়েছে বেশ কিছু নাম না জানা সামুদ্রিক প্রাণী। প্রাণী বিশেষজ্ঞরাও যেগুলোর কোনো গণ-প্রজাতি নির্ণয় করতে পারেননি।

 

তথ্যসূত্র : ডেইলি মেইল

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ ডিসেম্বর ২০১৬/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়