ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

পুলিশের ভুলে সব কুলহারা মারিয়া!

রেজাউল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ৫ আগস্ট ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পুলিশের ভুলে সব কুলহারা মারিয়া!

মডেল মারিয়া জাহান

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী থানার একটি গেস্টহাউস থেকে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে ৩৮ তরুণ-তরুণীকে গ্রেফতার করেছিল নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এদের মধ্যে ছিলেন চট্টগ্রামের সুপরিচিত মডেল মারিয়া জাহান। গ্রেফতারের এক দিন পরেই আদালতে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পান মডেল মারিয়া। মুক্তি পেয়ে মডেল মারিয়া দাবি করেছেন, তিনি পুলিশের ভুলের শিকার হয়েছেন। ডিবি পুলিশের একটি ভুলের কারণে তার জীবনের সব কুলই তিনি হারিয়েছেন।

মারিয়া বলেন, ‘ওই গ্রেফতারের ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় এবং পুলিশের ভুলের কারণে আমার এক ছোট বোনের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেছে। একই সঙ্গে মা-বাবা হারানোর পর আমি যে খালার কাছে থেকে বড় হয়েছি, সেই খালাও সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। এখন আমি সব কুলহারা।’

মডেল মারিয়া জাহান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমি মুনহিল গেস্টহাউসে ছিলাম না। আমি কখনো সেই গেস্টহাউসে যাইনি। পুলিশ রাস্তা থেকে আমাকে সন্দেহজনকভাবে ভুল করে আটক করে। পুলিশের সন্দেহ ও ভুলের কারণে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। সামাজিকভাবে আমি হেয়প্রতিপন্ন হলাম।’

প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই শুক্রবার রাত ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত নগরীর দক্ষিণ খুলশী এলাকার মুনহিল গেস্টহাউস নামের একটি অভিজাত গেস্টহাউসে অভিযান চালিয়ে ৩৮ তরুণ-তরুণীকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতদের মধ্যে ছিলেন মডেল মারিয়া জাহানও। পুলিশের মাধ্যমে অভিযান ও খবরের সত্যতা নিশ্চিত হয়ে রাইজিংবিডি খবরটি তাৎক্ষণিক গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করে। রাইজিংবিডির সংবাদটি ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে।

মুক্তি পেয়েই মারিয়া রাইজিংবিডির সঙ্গে যোগাযোগ করে তার গ্রেফতারের নেপথ্য কাহিনি তুলে ধরেন। মারিয়া বলেন, ‘পুলিশ আমাকে গেস্টহাউস থেকে গ্রেফতার করেনি। গেস্টহাউসের সামনের রাস্তা থেকে ডিবি পুলিশ আমাকে সন্দেহজনকভাবে আটক করে। আটকের পর আামি পুলিশকে প্রশ্ন করেছিলাম, আমাকে কেন গ্রেফতার করা হলো। পুলিশ বলেছিল, আপনাকে আমরা ভুল করে ধরে ফেলেছি, থানায় গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেব।’

মারিয়া বলেন, ‘কিন্তু ডিবি পুলিশ আমাকে থানায় যাওয়ার পর ছাড়েনি। উল্টো আমাকে কোনো কিছু না জিজ্ঞেস করে খুলশী থানায় হস্তান্তর করে ডিবি পুলিশ থানা থেকে চলে যায়।’

এই প্রসঙ্গে নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার কামরুজ্জামান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘মডেল মারিয়ার এই অভিযোগ সত্য নয়। আমরা তাকে মুনহিল গেস্টহাউস থেকেই আটক করেছিলাম; রাস্তা থেকে নয়।’ পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, রাস্তা থেকে অহেতুক বা অপ্রয়োজনে কাউকে আটক করাও সম্ভব নয়।

তবে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে মডেল মারিয়া তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করে বলেন, ‘গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হওয়ার মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিট আগে আমি একই এলাকার ফ্লেভারস স্টোর থেকে ৫৭০ টাকা মূল্যের বেশ কিছু পণ্যসামগ্রী ক্রয় করি। সেই সময়ে বৃষ্টি হচ্ছিল। তাই বৃষ্টির মধ্যে আমি ওই দোকান থেকে দৌড় দিয়ে অপেক্ষমাণ আমার নিজের ভাড়া করা সিএনজিচালিত ট্যাক্সিতে উঠতে গেলে পুলিশ আমাকে আটক করে। পুলিশের সন্দেহ, আমি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করছিলাম।’

মডেল মারিয়া জাহান জোর দাবি করে বলেন, ‘আমি যড়যন্ত্রের শিকার। ওই দিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত আমি চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নেভালে (সি বিচ) ছিলাম। মানবিক কারণে আমার এক পরিচিতজনকে কিছু টাকা দিতে আমি রাত সাড়ে আটটার দিকে খুলশীতে যাই।’

 

 

 


রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/৫ আগস্ট ২০১৫/রেজাউল/টিপু/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়