পৃথিবীর অদ্ভুত ১০ জাদুঘর
সাদিয়া ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম
ছবির কোলাজ
সাদিয়া ইসলাম : জাদুঘরের সঙ্গে আমরা কম বেশি সবাই পরিচিত। সাধারণত একটি ভবন বা প্রতিষ্ঠানে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহের সংগ্রহ সংরক্ষিত থাকে। পৃথিবীতে নানা ধরণের জাদুঘর রয়েছে। যেমন- বৈজ্ঞানিক, শৈল্পিক ও ঐতিহাসিক প্রভৃতি। তবে আজ এমন কিছু জাদুঘরের সঙ্গে আমরা আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিতে চাই যেগুলো সত্যিই খুব অদ্ভুত।
এই জাদুঘরগুলোর কোনটিতে রয়েছে মানুষের রক্ত অথবা কোনটাতে সংগৃহীত রয়েছে কাপড় পড়ানো নানারকম তেলাপোকা। এমনটা শুনে নিশ্চয় আপনার মনেও জাগছে নানা কৌতূহল। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক পৃথিবীর এমন ১০টি অদ্ভুত জাদুঘরের পরিচিতি।
উইনচস্টার মিস্ট্রি হাউজ
আপনি কি শুনেছেন এই পৃথিবীতেই রয়েছে ভূতের জাদুঘর? লোকালয়ে ভূতেদের যে জাদুঘর রয়েছে তার নাম উইনচস্টার মিস্টরি হাউজ। এক বার ভাবুন তো আপনি ঘুরেতে গেছেন উইনস্টার মিস্টরি হাউজে আর আর আপনার চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে হাজার খানেক ভূত! হয়তো আপনিও তাদের দেখা পেতে পারেন সেখানে। জাদুঘর হিসেবে যেটি স্বীকৃতি পেয়েছে তা আদতে একটি বাড়ি। এটি বানিয়েছিলেন সারা উইনচেস্টার। ১৮০০ সালের দিকে সারার স্বামী উইলিয়াম উয়ার্ট উইনচেস্টার মারা গেলে পরিবারের রাইফেলটি তার অধিকারে আসে। আর সে সময় ঘটতে থাকে অদ্ভূত সব ঘটনা।
কি করবেন বুঝতে না পেরে শেষমেশ এক ডাকিনীর কাছে ছুটে যান সারা। সেই ডাকিনী তাকে পরামর্শ দেয় উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া রাইফেলটির গুলিতে যারা মারা গেছেন তাদের প্রেতাত্মারা হত্যাকারীকে খুঁজছে। সঙ্গত কারণেই যেকোন সময়ই মারা পড়তে পারেন সারা। তবে এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায়ও বাতলে দেন সেই ডাকিনী। তিনি সারাকে এমন একটি বাড়ি বানাতে বলেন যার নির্মানকাজ কখনো শেষ হবে না। সেই পরামর্শ মেনে নিজের মুত্যুর আগের দিন পর্যন্ত বাড়ির কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন সারা। ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান জোসের কাছে ১৩৮ একর জমিতে বাড়ি তৈরি করেন তিনি। ১৯২২ সালে মারা যাবার আগ পর্যন্ত সে বাড়িতে তৈরি হয়েছিল ১৬০ টি ঘর। যার জন্যে সারার খরচ হয় ৬ মিলিয়ন ডলার। তবে আশ্চর্যজনক হলেও ১৬০ ঘরের এই জাদুঘরটিতে রয়েছে মাত্র ১৩ টি বাথরুম। প্রতিরাতে এ বাড়িতেই ঘুমাতেন সারা। তিনি এক ঘরে পরপর দুরাত কখনো ঘুমোতেন না। ভূতেরা তাকে খুঁজে মেরে ফেলবে এই ভয়েই তটস্থ থাকতেন সবসময়। তার মৃত্যুর পর ভূতের জাদুঘর হয়ে এখনো ঠাঁয় দাড়িয়ে রয়েছে বিশাল সেই বাড়িটি।
ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের ফেলে যাওয়া স্মৃতির জাদুঘর
২০০৬ সালের দিকে একটা ভ্রাম্যমাণ শো চালানোর জন্য বুদ্ধিটা প্রথম বের করেন দুই ক্রোয়েশিয়ান ওলিনকা ভিটিকা ও ড্রাফেন গ্রুবিটিক। ইউনিক ভাবনাটির নিয়ে কাজ শুরু করেন তারা। তাদের ভাবনার মূলে ছিল ‘ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের ফেলে যাওয়া স্মৃতির সংরক্ষণ’। এখান সেখান থেকে নিজেদের সংগ্রহ, বন্ধু ও স্বেচ্ছাসেবকদের সাহায্যে খুব দ্রুতই বড় হয়ে ওঠে পুরো ব্যাপারটা। মাত্র চার বছরেই একসঙ্গে কাটানোর পর ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের নিদর্শনে ভর্তি হয়ে যায় তাদের শোকেস।
বহু দিন আগে হঠাৎ আগুন লাগে এই চার্চে। সেই আগুন নেভানোর সময় কিছু জিনিসপত্র পাওয়া যায় যেগুলোতে মানুষের মুখ, হাত ইত্যাদির ছাপ ছিল। সেসময় থেকে মনে করা হয় আসলে সেই ছাপগুলো হচ্ছে আত্মার। তখন থেকেই তৈরি করা হয় এই জাদুঘরটি।
বিড়ালের জাদুঘর
এক বিড়ালকে ও তার ইতিহাসকে কতভাবে যে বর্ণনা করা সম্ভব সেটা আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারেন এই বিড়ালের জাদুঘরে গেলে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর উৎসাহে দেশটির কুচিঙে নির্মিত হয় জাদুঘর। এখানে রয়েছে হাজার রকমের বেড়াল। গৃহপালিত ছোট্ট প্রাণীগুলোর মাধ্যমে নিজের দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরতেই এই পদক্ষেপ নেয় মালয়েশিয়া সরকার। জাদুঘরে প্রবেশের আগেই দর্শনার্থীদেরকে জেনে নিতে হয় বিড়াল সম্পর্কে সাধারন ধারনা, বিড়াল কি করে পোষ মানানো যায় এবং বিড়ালকে কতটা শৈল্পিকভাবে প্রদর্শন করা যায় তার বিবরণ।
এখনো কলের পানির উদ্ভাবনের বিজ্ঞাপন তৈরি জন্যেও সবার কাছে জনপ্রিয় হয়ে আছে এই স্থানটি। একটা সময় অধিকাংশ চায়নিজ মানুষই বিদেশের পানির ফলাফল নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিল। এটা তাদের জন্যে মেনে নেওয়াটা বেশ কষ্টকর হয়ে উঠছিল আস্তে আস্তে। আর ভেতরে ভেতরে জমতে থাকা ক্ষোভ আর অসন্তোষের কারণেই খুব বেশি দিন টিকতে পারেনি পানির প্রতিষ্ঠানটি। মাত্র তিন বছর চীনে থেকেই চলে যেতে হয়েছিল তাদের।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ নভেম্বর ২০১৫/রাশেদ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন