ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

প্রতীকী জি-৮ সম্মেলনে জলবায়ু অন্যায্যতার প্রতিবাদ

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৪, ২৫ অক্টোবর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রতীকী জি-৮ সম্মেলনে জলবায়ু অন্যায্যতার প্রতিবাদ

খুলনায় প্রতীকী জি-৮ সম্মেলনে জলবায়ু অন্যায্যতার প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা : এক টেবিলে বসে আছেন পৃথিবীর সর্বোচ্চ শক্তিশালী আটটি দেশের প্রতিনিধি। তাদের পা পর্যন্ত ডুবে গেছে সমুদ্রস্ফীতির পানিতে। তারপরও তারা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার দায় নিতে রাজি নন।

 

পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন ব্রিকসভুক্ত চারটি দেশের প্রতিনিধি। তাদের দুজন হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছেন ধনী দেশের নেতাদের। অন্য দুজন দেশের রাষ্ট্রনেতা একটি প্ল্যাকার্ড ধরে দাঁড়িয়ে আছেন।

 

তারা বলছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ঘটছে এটা সত্য। তাতে আমাদের কী?’

 

সামনের তোরণে জি-৮ সম্মেলনের পাশাপাশি বিশ্বব্যাংকের সৌজন্যে দেওয়া হচ্ছে জলবায়ু ঋণের বিজ্ঞাপন। দুইপাশে শতাধিক তরুণ ব্যানার প্ল্যাকার্ডে উন্নত বিশ্বের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

 

আসন্ন জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার দাবিতে মঙ্গলবার বেলা ১২টায় খুলনার রূপসা নদীর চরে প্রতীকী জি-৮ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে এ বিষয়ে শিল্পোন্নত ও অগ্রসর উন্নয়নশীল দেশগুলোর নীরবতার প্রতিবাদ করল তিনটি পরিবেশবাদী সংগঠন।

 

উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন), ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)-এর উদ্যোগে এ প্রতীকী প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

 

প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, প্যারিস চুক্তি অনুসারে শিল্পোন্নত ও অগ্রসর উন্নয়নশীল দেশগুলো যে ঐচ্ছিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তাতে পৃথিবীর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। এই দেশগুলো ঐচ্ছিকভাবে কার্বন নির্গমন কমাবে অথচ সম্মিলিতভাবে তারা পৃথিবীর ৭৭% নির্গমনের জন্য দায়ী।

 

অন্যদিকে শিল্পোন্নত দেশগুলো সবুজ জলবায়ু তহবিল (জিসিএফ)-এ প্রতিবছর ১০ হাজার কোটি ডলার দেওয়ার কথা থাকলেও ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৬ বছরে মাত্র ১ হাজার কোটি ডলার দিয়েছে। কিন্তু এই টাকার সঙ্গে বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্ত হয়ে গেছে।

 

ইতিমধ্যে জিসিএফ থেকে বরাদ্দ দেওয়া ১০০ কোটি ডলারের শতকরা ৯০ ভাগ টাকাই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক পেয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ ও দেশগুলোর সরাসরি তহবিল পাবার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।

 

বিশ্বব্যাংক ও এডিবিসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন জলবায়ু খাতে ঋণ দেওয়ার জন্য জাতিসংঘকে ব্যবহার করছে। এভাবে তারা জলবায়ু-দুর্গতদের দুর্ভোগ ব্যবহার করে ঋণবাণিজ্য গড়ে তুলছে।

 

অন্যদিকে বাংলাদেশের মতো দরিদ্র দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে যাবার আশঙ্কার মধ্যে থাকলেও উন্নত বিশ্ব এ বিষয়ে ক্ষমাহীন নীরবতা প্রদর্শন করে যাচ্ছে।

 

বক্তারা মরোক্কোর মারাকেশ শহরে অনুষ্ঠেয় আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনে শিল্পোন্নত ও অগ্রসর উন্নয়নশীল দেশগুলোর নির্গমন কমানোর লক্ষ্যমাত্রা যথেষ্ট মাত্রায় বৃদ্ধি করাসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন।

 

ক্লিন-টিআইবি-সনাক ওয়ার্কিং গ্রুপের আহ্বায়ক কুদরত-ই-খুদার সভাপতিত্বে আয়োজিত প্রতীকী প্রতিবাদ সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ক্লিন-এর প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী।

 

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন টিআইবির এরিয়া ম্যানেজার ফিরোজ উদ্দীন, ইয়েস সদস্য সুস্মিত সরকার, এসএম মামুনুর রশীদ, ক্লিন-এর নাসিম রহমান কিরন, সূবর্ণা ইসলাম দিশা প্রমুখ।

 

 

রাইজিংবিডি/খুলনা/২৫ অক্টোবর ২০১৬/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/রিশিত

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়