ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

জাতীয় নির্বাচন পর্যায়ক্রমে করার চিন্তা করছে সরকার : অর্থমন্ত্রী

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৫, ১৭ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জাতীয় নির্বাচন পর্যায়ক্রমে করার চিন্তা করছে সরকার : অর্থমন্ত্রী

ছবি: কিসমত খন্দকার

কে এম এ হাসনাত, মির্জাপুর, টাঙ্গাইল থেকে : সরকার জাতীয় নির্বাচন পুরো দেশে একযোগে না করে বিভিন্ন বিভাগে পর্যায়ক্রমে করার চিন্তা করছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন দেশের সব স্থানে একযোগে না করে বিভিন্ন বিভাগে পর্যায়ক্রমে করার চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার।’

এদিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের অত্যন্ত ভালোবাসতেন উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করে শিশুরা যাতে আগামী দিনে দেশের নেতৃত্ব দিতে পারে সেভাবে তাদের শিক্ষা দিতে হবে।’

শনিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ভারতেশ্বরী হোমসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিন, জাতীয় শিশু দিবস ও ভারতেশ্বরী হোমসের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

এর আগে সকাল সোয়া ১০টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারযোগে তিনি তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে মির্জাপুরে কুমুদিনী মহিলা মেডিক্যাল কলেজের মাঠে নামেন। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. একাব্বর হোসেন, কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজীব প্রসাদ সাহা, পরিচালক শ্রীমতি সাহা, পরিচালক (শিক্ষা) প্রতিভা মুৎসুদ্দি, মির্জাপুর উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা ইসরাত সাদমীন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজগর হোসেন ও মির্জাপুর প্রেসক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি কিসমত খোন্দকার তাকে স্বাগত জানান।

অর্থমন্ত্রী ভারতেশ্বরী হোমসের মেয়েদের কুজকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন। এর পরপরই তিনি ভারতেশ্বরী হোমসের মেয়েদের মনোজ্ঞ ড্রিল উপভোগ করেন। পরে মন্ত্রী কুমুদিনী মিউজিয়াম ঘুরে ভারতেশ্বরী হোমসের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ ছাড়া হোমসের মিলনায়তনে কুমুদিনী মহিলা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুল হালিম পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে কুমুদিনী কল্যাণ ট্রাস্টের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।

এরপর অর্থমন্ত্রী হোমসের প্রিন্সিপাল প্রতিভা মুৎসুদ্দি মিলনায়তনে মূল অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। সেখানে বঙ্গবন্ধুর জীবনীর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন আলোচকরা।

শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হয়। ভারতেশ্বরী হোমসের সিনিয়র শিক্ষিকা হেনা সুলতানার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অর্থমন্ত্রী ছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজীব প্রসাদ সাহা, পরিচালক শ্রীমতি সাহা, ভাষা সৈনিক এবং কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থার পরিচালক (শিক্ষা) প্রতিভা মুৎসুদ্দি, জাতীয় অধ্যাপক সাহালা খাতুন, ভারতেশ্বরী হোমসের অধ্যক্ষ প্রতিভা হালদার প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।

 



অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে প্রিয়পাত্র ছিল শিশুরা। শিশুদের ভালোবেসে বঙ্গবন্ধু শুধু বঙ্গবন্ধু হননি, হয়েছেন মহামানব। যার কারণে বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু তিনটি গুণে গুণান্বিত ছিলেন। তিনি মানুষের মনের কথা বুঝতেন। এজন্য তিনি নিজের ও দেশের জন্য গণতান্ত্রিক ও ইহজাগতিক আদর্শ ঠিক করতে পেরেছিলেন। সেই সাথে তিনি অসাধারণ সাহসী ছিলেন। কোনো কিছুতেই ভয় পেতেন না। কারো কাছে মাথা নত করেননি। আর বঙ্গবন্ধুর এসব গুণাবলী যে শিশুর মধ্যে থাকবে সেও হয়তোবা একদিন বঙ্গবন্ধুর মতো হয়ে উঠবে।’

কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার রেখে যাওয়া কীর্তিগুলো আজও আপন মহিমায় এগিয়ে চলছে। আমিও তার এ যাত্রায় শামিল থাকতে চাই। একজন মানুষ কীভাবে একার আয় দিয়ে জনকল্যাণে এত বড় বড় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারেন এখানে না আসলে তা বোঝা সম্ভব নয়। মানবসেবায় তিনি আমাদের পথপ্রদর্শক।’

উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের স্বীকৃতি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক অনেক আগেই আমাদের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। জাতিসংঘের স্বীকৃতি পেতে একটু দেরি হয়। কারণ তারা অনেক সূচক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারপর ঘোষণা দেয়।’

মুহিত বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বাংলাদেশ উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে নিজের আসন করে নেবে।’

অর্থমন্ত্রী দেশের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরেন সাংবাদিকদের কাছে। এ সময় তিনি পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে দাবি করেন।

এক প্রশ্নের জবাবে মুহিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগামী বাজেটের আকার হতে ৪ লাখ ৬০ হাজার থেকে ৪ লাখ ৭৫ হাজারের মধ্যে। এতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিধি আগের তুলনায় আরো বাড়ানো হবে।’ এ ছাড়াও তিনি স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ মার্চ ২০১৮/হাসনাত/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়